গ্রেফতারের আগে খালেদাকে নিয়ে শওকত মাহমুদ
প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
দেশনত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ জীবন-মৃত্যুর মাঝামাঝি। তার জন্য আমাদের বুকফাটা প্রার্থনা- ‘হে মহান আল্লাহ। আপনার রহমতপ্রাপ্ত এ মানুষটাকে বাংলাদেশের জন্য মজলুমদের জন্য আরও আয়ু দিন। সুস্থতা দিন।’ যিনি ৫৪ বছরের বাংলাদেশে ৪৩ বছর ধরে রাষ্ট্ররাজনীতির শীর্ষ ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রবাহমান। জীবনজুড়ে যন্ত্রণা আর বে-ইনসাফির শিকার।
হাসপাতালের বেডে কখনো তিনি জ্ঞানে ফিরছেন, কখনো না। এ মুহূর্তে যতখানি তার মনশ্চক্ষে ভাসে-কী ভাবছেন তিনি? স্বামী, সংসার, সন্তান, শহীদ মঈনুল রোড বা ফিরোজার স্মৃতিময় মুহূর্ত বা বিএনপি? যারা খালেদা জিয়াকে জানেন ও বুঝেন, যারা তার সংগ্রামী জীবনাদর্শকে ‘নিবিড় পাঠ’ করতে চান, তারা একবাক্যে বলবেন-এখনো তিনি আল্লাহকে বলছেন বাংলাদেশের মুক্তির কথা, জনগণের অধিকারের কথা।
মারাঠি কবি শরণ কুমার লিম্বালির কয়েকটি উচ্চারণ এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য। চাই না আমি তোমাদের আকাশ থেকে সূর্য আর চাঁদ/ তোমাদের জমিজমা, ক্ষেতখামার/ তোমাদের প্রাসাদগুলি/ বা এমনকি যে ভালোবাসা তোমরা পাও/ মা বোন মেয়ের কাছ থেকে/ চাই না তা-ও/ আমি শুধু চাই মানুষের অধিকার।
ইতিহাসের চাল-চলন নিয়ত সত্যমুখী। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘কোনও ইতিহাস স্বত্বের ইতিহাস নহে, তাহা সত্যের ইতিহাস।’ যে মহান সত্য নানা আঘাত-সংঘাতের মধ্য দিয়া পরিপূর্ণ হইয়া উঠিতেছে, এক নেতার এক কন্যার মালিকানায় যে গড়াপেটার ইতিহাস, যে মিথ্যাটি তৈরি করতে চেয়েছিল দেহে-মনে ফ্যাসিবাদমাখা স্বৈরাচার, তাকে উড়িয়ে দিয়েছেন বেগম জিয়া। এটাই সত্য। পেয়েছেন মানুষের ভালোবাসা। আওয়ামী বজ্রপাতে মানুষের ভরসাস্থল ছিলেন তিনি। বজ্রপাতে জনমত বোঝা যায় না। আসল জনমত হচ্ছে ভোরের শিশিরের মতো, নীরবে-নিঃশব্দে প্রতিটি বর্গইঞ্চি তৃণমূলকে ছেয়ে ফেলে। সত্যের উপলব্ধি সেখানেই। এজন্য বেগম জিয়াকে বারবার জেলে যেতে হয়েছে। একদিকে স্লো-পয়জনিং অন্যদিকে চিকিৎসা না দিয়ে খুনি হাসিনা তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে। পারেনি।
এ অবিচল সত্যকে কে অস্বীকার করবেন, ৪৩ বছর ধরে দেশনেত্রী বাংলাদেশের রাজনীতিতে সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তা নিয়ে বিরাজমান। সবচেয়ে বেশি আসনে নির্বাচিত হওয়ার কৃতিত্ব তারই। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। রাস্তায় নামলেই লাখো মানুষের ঢল। হাসপাতালে গেলে চারদিকে মোনাজাতে মগ্ন হাজারো জনতা। বাংলাদেশের জনম যুদ্ধ থেকে শুরু করে তীক্ষèতর নৈতিকতায় গণতন্ত্রের সাধনা, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই, বারবার বন্দিত্ব, রাজনীতি ও সংসারের দ্বন্দ্বের মধ্যেও মানুষের অধিকারের জন্য এমন অবিচল থাকার দৃষ্টান্ত আর কোনো নেতানেত্রীর নেই।
আমার সীমিত জ্ঞানে সমসাময়িক বিশ্ব ইতিহাসে এমন সংগ্রামী, কারা নির্যাতিত, রাষ্ট্র পরিচালনায় সফল রাজনীতিক কমই আছেন। আর ইন্দিরা গান্ধী, বন্দরনায়েক, চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গে, বেনজির ভুট্টো, কোরাজন আকিনো, অং সান সু চির মতো নারীনেত্রীদের প্রসঙ্গে আসুন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মতো বারবার লড়াইয়ে ফিরে আসা, আল্লাহর রহমত ও জনগণের ভালোবাসায় টিকে থাকা, নৈতিকতায় অভিনিবেশী এবং গণতন্ত্রমনা এ নেত্রী অন্যদের তুল্যদণ্ডে অনেক ওপরে।
কজন নেতার মুকুটে ওই মরকত মণি আছে, যিনি নব্বইয়ে একটি সফল গণঅভ্যুত্থান পরিচালনা করেছেন, চব্বিশের বিপ্লবে মূল প্রেরণাদায়ী ছিলেন। দেশকে সংসদীয় গণতন্ত্রে ফিরিয়ে আনার কৃতিত্ব তারই। দুটি সামরিক শাসনকে হটানোর রেকর্ড আর কোনো নেতার আছে কি? স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের লড়াইয়ের প্রতিটি পর্বকেই তিনি সম্ভ্রম ও সমীহযোগ্য করে তুলেছেন। সে এক অনন্য অর্জন।
তার স্বামী স্বাধীনতার মহান ঘোষক এবং হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ করা মেজর জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী হিসেবে তাকে পাকিস্তানি ক্যান্টনমেন্টে জেল খাটতে হয়েছে। স্বামী যুদ্ধে গেছেন, পরিবারের সঙ্গে দেখা করে যাননি। কিন্তু তাতে কি, তিনি সন্তানদের নিয়ে নীরবে চলে গেছেন। তারপর ধরা পড়লেন। তিনি জানতেন- জিয়ার ওপর দেশ রক্ষা, স্বাধীন করার ঐতিহাসিক দায়িত্ব পড়েছে। কবি নজরুলের ভাষায়, ‘অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া জানে না সন্তরণ কাণ্ডারী আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তি পণ।’ তার সেই বন্দিত্ব আমরা আবার দেখি ৭৫-এর ৩ থেকে ৭ নভেম্বর খালেদ মোশাররফের ক্যুর পর। আন্তর্জাতিক চক্রান্তে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া নিহত হলে সংসার ও রাজনীতির দায়িত্ব নিয়েছেন চ্যালেঞ্জ হিসেবে।
খালেদা জিয়ার সবচেয়ে বড় গুণ তিনি মধ্যপন্থি রাজনীতিক। তিনি কোনো গিবত করেন না। প্রচণ্ড প্রতিপক্ষ শেখ হাসিনার নামই মুখে নেন না, বকাবাদ্য তো দূরের কথা। ২০০৮-এর নির্বাচনের সময় জাতির উদ্দেশে ভাষণের এক অংশে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘মানুষ হিসেবে আমি ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে ছিলাম না। ব্যর্থতার গ্লানিও আমাকে অনেক সময় স্পর্শ করেছে, কিন্তু যে সীমাহীন কুৎসা এবং অপপ্রচারের শিকার আমাকে হতে হচ্ছে, সেটা কি আমার প্রাপ্য? আপনারা দেখেছেন, অপপ্রচারে পথ ধরেই আমাকে আপনাদের কাছ থেকে মাইনাস করার, বিদেশে নির্বাসনে পাঠানোর অপচেষ্টা হয়েছে। এ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে আমাকে বিনা অপরাধে ছয় মাস গৃহবন্দি ও এক বছর নির্জন কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। আমি আমার মায়ের মৃত্যুর সময়ও তার পাশে থাকতে পারিনি। গুরুতর অসুস্থ সন্তানদেরও দেখতে দেওয়া হয়নি। তারপরও যতদিন বাঁচি, আপনাদের মাঝেই থাকব। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশই আমার একমাত্র ও শেষ ঠিকানা।’
পবিত্র কোরআনে সুরা নিসার ১৪৮ আয়াতে মহান আল্লাহ বলছেন, ‘প্রকাশ্যে কারও দোষ চর্চাকে আল্লাহ পছন্দ করেন না, তবে কারও প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে আলাদা কথা। আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু জানেন।’ অর্থাৎ, খালেদা জিয়ার অধিকার ছিল জালেমদের গালাগাল করার। কিন্তু তিনি শুনলেন সুরা মায়িদাতে আল্লাহর সুস্পষ্ট বাণী-প্রতিপক্ষের প্রতি শত্রুতা তোমাদের যেন সীমা লঙ্ঘন করতে প্ররোচিত না করে। সভ্যতার সীমারেখা মেনেই চলেছেন বেগম জিয়া।
প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী যে পদেই থাকুন বা না থাকুক, খালেদা জিয়া রাজনীতি কেন্দ্রবিন্দুতে সর্বদাই। তার গণতান্ত্রিক ঔদার্যকে উপহাস করা হোক, তাকে নিয়ে গিবত, কটুকাটব্য যতই বর্ষিত হোক, তাকে ঘরছাড়া করা হোক বা বাড়ি কিংবা অফিসে অন্তরীণ রাখা হোক, তার ওপর মরিচের গুঁড়া স্প্রে করা হোক, তার গাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করুন, তার পথের দুপাশে উদ্বেলিত জনতাকে পুলিশ পেটাতে থাকুক, তার ফেরিতে গুলি করা হোক, লং মার্চে বাধা দেওয়া হোক, বেগম জিয়া অবিচল আছেন। মামলার তারিখ যত দ্রুত দেওয়া হোক, তিনি হাসিমুখে আদালতে গেছেন, জেলে গেছেন।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনা অনিবার্য প্রধানমন্ত্রী-এমন ধারণায় ইতিহাসকে যখন সাব্যস্ত করা হচ্ছিল, অলক্ষ্যেই সেই শিশিরভেজা সত্যটি দৃশ্যমান হলো। নাহ! আন্দোলনের সাচ্চা নেত্রী খালেদা জিয়াই প্রধানমন্ত্রী, তার হাতে গড়া নতুন বিএনপিই সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। বেগম জিয়ার গণতন্ত্রবোধ পরিমাপে একটি দৃষ্টান্ত অবশ্য উল্লেখ্য। ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচন হওয়ার বিধান ছিল ওয়ার্ড কমিশনারদের ভোটে। এতে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী জেতে। কিন্তু তিনি মেয়র পদকে জনগণের ভোটে সরাসরি নির্বাচিত হওয়ার বিধান করলেন আর সংবিধানের প্রতি আনুগত্য? তিন জোটের রূপরেখা অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টির তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার যুগপৎ আন্দোলন ছিল নব্বইয়ের দশকে একটি অসাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। সংসদ থেকে আগেই পদত্যাগ করে ওইসব দল বেগম জিয়াকে এই বিপদে ফেলতে চেয়েছিল যে, তিনি ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেন সংসদে এ-সংক্রান্ত বিল পাস করাতে না পারেন। তিনি যেন কোনো সংবিধানসম্মত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে না পারেন। পর্দার অন্তরালে ওই অশুভ আঁতাত সামরিক অভ্যুত্থানের প্ররোচনাই দিচ্ছিল। এটা হতো বেগম জিয়ার সারা জীবনের জন্য কলঙ্ক। কিন্তু তিনি শুধু সংবিধান সংশোধনের নিমিত্তে ১৯৯৬-তে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন দিলেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে এই চক্রান্ত নস্যাৎ করলেন। জেনারেল নাসিমের ক্যু হয়েও হতে পারল না। রাজনীতির নীতিনৈতিকতা খালেদা জিয়া জীবনজুড়ে মেনে চলেছেন। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে যাননি। ১৯৮৬, ১৯৮৮, ২০১৪ এবং ২০২৪-এর উদাহরণ। অর্থাৎ, ৪৩ বছরের রাজনীতিতে ১৯টি বছর তিনি ভোটে যাননি। কারণ, দেশের মানুষ স্বেচ্ছায় ভোট দেওয়ার অধিকারবঞ্চিত। কী বিবেকি সংকল্প? ২০১৮ সালে বিএনপি তাকে জিজ্ঞেস না করে ভোটে গিয়েছিল বলে তিনি আক্ষেপ করেছেন।
শুধুই কি গণতন্ত্রের সংগ্রামের জন্য খালেদা জিয়া চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন? তার দেশ পরিচালনাকালে আইনের শাসন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন সর্বত্র প্রশংসিত। ঢাকা থেকে সব মহাসড়ক দিয়ে এখন বাইরে গেলে দুই পাশে আজ যে শুধু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পস্থাপনার সম্ভার, তা তার আমলেই। ক্ষুদ্রঋণের ব্যাপকতার দরুন দশ গ্রাম মিলে সাপ্তাহিক হাটের বদলে প্রত্যেক গ্রামে আজ বাজার বসে, টাকা দিয়ে লেনদেন হয়। নারীরা ক্ষুদ্রঋণে স্বাবলম্বী-এটা তার সাফল্য। খাদ্যে, মাছে স্বয়ম্ভরতা, নারী শিক্ষার বিপ্লব, রপ্তানির সমৃদ্ধি, সবচেয়ে বড় কথা ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ৭০ হাজার কোটি টাকার মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি এবং জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৬.৭-এ পৌঁছার অবিশ্বাস্য কাহিনির নির্মাতা খালেদা জিয়াই। আজকের স্বৈরাচারের মতো গণতন্ত্র হত্যা করে উন্নয়নের যজ্ঞে তিনি মাতেননি। এই উন্নয়ন হচ্ছে দুর্নীতি-তাড়িত। খালেদা জিয়া গণতন্ত্র অর্থাৎ, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের মধ্য দিয়ে উন্নয়ন করেছেন। নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেনের ভাষায় যা (ভৎববফড়স ড়ৎরহঃবফ ফবাবষড়ঢ়সবহঃ) অধিকারভিত্তিক সমৃদ্ধি।
২০০৭ থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্ত তার কেটেছে বাংলাদেশ ও তার গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায়। সাধারণ মানুষ, দলের নেতাকর্মীর জন্য তার সহানুভূতি ফুরায় না। অপার তার নিজস্ব মনোবেদনা। পারিবারিকভাবে নিঃসঙ্গ ছিলেন। এক-এগারোর সময় জেলে ছিলেন, মৃত্যুশয্যায় মাকে দেখতে পারেননি। দুই ছেলেকে জেলে নির্যাতন করা হচ্ছে। তারেক রহমানকে মেরে ফেলতে চাইছিল এক-এগারোর বর্বরকুল। কী বিভীষিকার দিনগুলো ছিল তখন! রাজনীতি থেকে বিয়োগ করার জন্য কী চাপ, বিদেশে জোর করে পাঠিয়ে দেবে। কিন্তু খালেদা জিয়া খালেদা জিয়াই। দেশ ছেড়ে, দেশের জনগণকে ছেড়ে তিনি বিদেশে গেলেনই না। তারেক রহমান মুক্তি পেয়ে যেদিন পিজি হাসপাতালে, কী অঝোর কান্নায় জড়িয়ে ধরেছিলেন সন্তানকে! মানুষ দেশনেত্রীর সেই কান্নায় কেঁদেছিল। তারেক রহমানকে দুর্নীতির খলনায়ক বানানোর হাজারো অপচেষ্টা বিফলে গেছে। তিনি দেশে আসতে পারেন না। আরাফাত রহমান কোকো ফিরে এসেছিলেন, কিন্তু লাশ হয়ে। সরকারের নির্যাতনে কষ্টে কষ্টে ওই প্রাণবন্ত তরুণটি মরে গেল। জানাজায় লাখ লাখ মুসল্লি অশ্রুভেজা চোখে তাতে অংশ নিল।
অবাক করার বিষয় হচ্ছে, ক্রসফায়ারে নিহত ও গুমে নিখোঁজ স্বজনরা এবং নানা নির্যাতনে ক্লিষ্ট মানুষরা যখন বেগম জিয়ার সান্নিধ্যে যান, তখন তিনি এমনভাবে সান্ত্বনা দেন, যেন তার কোনো নিজস্ব বেদনা নেই। তারা আশ্চর্য হয়ে যান এই নারীর অসম্ভব মনের জোর দেখে। জীবনভর সংগ্রামই করে চলেছেন, তবু মাথা নোয়াবার নয়। রাষ্ট্রপ্রধান, সেনাপ্রধানের স্ত্রী হিসেবে সংসারে নিভৃতে ছিলেন। জিয়া যেমনিভাবে দরখাস্ত করে ক্ষমতার মঞ্চে আসেননি, তেমনি খালেদা জিয়াও বিএনপির চেয়ারপারসন স্বেচ্ছায় হননি। দল ও জনগণের অনুরোধে ওই দায়িত্ব নিয়ে কী সংগ্রামী জীবনকেই না বেছে নিয়েছেন। সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমত তার প্রতি আছে। নইলে এমন রাজনৈতিক নেতা কে আছেন, যার প্রতি নির্যাতনের কুঠারাঘাত প্রতিনিয়ত বর্ষিত হয়েছে। তার দৃঢ় নেতৃত্বে বিএনপি আজ দেশের বৃহত্তম দল। দেশের দায়িত্ব নেওয়ার অপেক্ষায়।
খালেদা জিয়ার মতো অসামান্য রাজনৈতিক নেত্রীর পক্ষেই মানুষকে এমন সভ্য স্বপ্ন দেখানো সম্ভব, যখন তিনি বলেন, ‘শরতের আকাশে সাতটি রঙের বিচিত্র প্রভাব নিয়ে রংধনু যেভাবে মনোরম সৌন্দরে্যর বিচ্ছুরণ ঘটায়, আমরা চাই সকল মত ও পথকে নিয়ে এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি লালন ও পরিপুষ্ট করতে, যে সংস্কৃতি বাংলাদেশকে একটি রংধনু জাতিতে (জধরহভড়ি ঘধঃরড়হ) পরিণত করবে। প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে ও ভবিষ্যৎমুখী এক নতুন ধারার রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা করতে চায় বিএনপি। এজন্য নতুন এক সামাজিক চুক্তিতে পৌঁছতে বিএনপি সচেষ্ট হবে (ভিশন-২০৩০)। এই ৩১ দফা সংস্কারের ভিত্তি।
আমি আগেই বলেছি, গণতন্ত্রের স্বার্থেই খালেদা জিয়া সম্পর্কে ‘নিবিড় পাঠ’ প্রয়োজন। নিবিড় পাঠ মানে ভূ-প্রোথিত কোনো বিরল প্রত্মসম্পদের উত্তোলন নয়। তার জীবনপ্রণালি, জীবনদর্শন, প্রজ্ঞা, মর্জি, দূরদর্শিতা, জীবনের প্রতি কৌতূহলের মাত্রা, আপন সমকালকে স্পর্শ করতে পারার ধীশক্তি-সেসবেরই ধ্যানমগ্ন পর্যালোচনা।
খালেদা জিয়া বেঁচে আছেন, থাকবেনও। তার সর্বশেষ অবদান, দেশের জন্য তিনি উত্তরাধিকার যৌক্তিকভাবেই সাব্যস্ত করেছেন। সন্তান তারেক রহমানকে তিনি রাষ্ট্ররাজনীতির পরিমণ্ডলে জুতসই করে উপস্থাপন করেছেন। নানা আঘাত-সংঘাতের মধ্য দিয়ে যে সত্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, আগামী বাংলাদেশের কাণ্ডারি তারেক রহমান। যিনি তার পিতা ও মায়ের সংগ্রামী জীবন এবং জীবনাদশের প্রত্যক্ষ সাক্ষী।
জিয়া পরিবার সম্পর্কে ভাবলে আমার পবিত্র কোরআনের সুরা কাহফের ৭৯ ও ৮২ নম্বর আয়াত নাড়া দেয়। হজরত মুসা (আ.) যখন খাদির (আ.) বিভিন্ন ঘটনা দিয়ে আল্লাহর জ্ঞান স্পষ্ট করছিলেন, তখন এক নগরের একটি হেলে পড়া দেয়ালকে হজরত খাদির (আ.) সোজা করে দিলেন। বললেন, দেয়ালটি ছিল দুই এতিম কিশোরের এবং এর নিচে আছে তাদের গুপ্তধন। তাদের পিতা ছিল সৎকর্মপরায়ণ। কাজেই আল্লাহ তাদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে চাইলেন, তারা বয়োপ্রাপ্ত হোক এবং ধনভান্ডার উদ্ধার করুক। প্রতীক্ষ অর্থে বলছি, শহীদ জিয়ার গুপ্তধন হচ্ছে তার প্রতি মানুষের অসম্ভব ভালোবাসা ও সমর্থন। বিএনপি নামক ভাঙা দেয়ালকে খালেদা জিয়া সোজা এবং সবল করেছেন। এখন আমরা অপেক্ষায় তারেক রহমান কীভাবে সেই সম্পদকে ব্যবহার করেন, জাতিকে কাক্সিক্ষত পথে এগিয়ে নিয়ে যান।
লেখক: জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি
- হিরামন্ডি’র উইন্টার ফিস্ট নিউইয়র্কে দর্শক মাতালো
- ৪ লাখ ৫০ হাজার নিউ ইয়র্কার স্বাস্থ্য বীমা হারাবেন
- ব্রুকলিনে ‘মনি মেডিকেল কেয়ার’র শুভ উদ্বোধন আজ শুক্রবার
- কুইন্স বাংলাদেশ সোসাইটি’র অভিষেক অনুষ্ঠিত
- প্রহসনের বিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার আহ্বান
- শেকল পরিয়ে ফেরত আরও ৩১ বাংলাদেশিকে
- জাতিগত ঐক্য অটুট রাখলে বাংলাদেশিদের স্বপ্ন পূরণ হবে
- ফুটবল বিশ্বকাপে লাখো দর্শকের ভিসা অনিশ্চিত
- ওয়ারেন্ট ছাড়া অভিবাসীদের গ্রেফতার নয়
- জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
- অভিবাসীদের পাশে থাকার বার্তা মামদানির
- ডিপোর্টেড এক বাংলাদেশির করুণ অভিজ্ঞতা
- মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদ নির্মাণে অনুদান ৫ কোটি রুপি ছাড়িয়েছে
- গ্রেফতারের আগে খালেদাকে নিয়ে শওকত মাহমুদ
- নিউইয়র্কে এফবিআই, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি, আইআরএস’র যৌথ টাস্কফোর্স
- জেএমসি’র আগুন নেভাতে ফায়ারের ৮ ইউনিট
- নির্বাচন ও গণভোট ১২ ফেব্রুয়ারি
- আজকাল ৯০০
- অভিবাসীদের জন্য ‘গোল্ড কার্ড’ ভিসা চালু করলেন ট্রাম্প
- প্রেস সেক্রেটারির ঠোঁটকে মেশিনগানের সঙ্গে তুলনা ট্রাম্পের
- তিন উপদেষ্টাকে আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের দফতর বণ্টন
- স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ, শুক্রবার থেকে কার্যকর
- উদ্ধারের পর শিশু সাজিদকে মৃত ঘোষণা
- জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ১২ ফেব্রুয়ারি
- ১৫ মার্চ পর্যন্ত অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন নিবন্ধনের সুযোগ
- স্বাধীন ভারতের প্রথম ‘ভোট চোর’ গান্ধী পরিবার
- ফেসবুক অ্যাপে ফের বড় পরিবর্তন
- ‘সিনেমা করলে নাটক ছাড়তে হবে-এমন কোনো কথা নেই’
- প্রেস সেক্রেটারি লেভিটকে প্রশংসায় ভাসালেন ট্রাম্প
- পর্যটকদের সোশ্যাল মিডিয়ার পাঁচ বছরের ইতিহাস দেখা হতে পারে
- আজকাল এর ৮৯৩ তম সংখ্যা
- এনবিআরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলবে রোববারও
- টুটুলের কাছে পাওনাঃ রোকসানা মির্জা ও আজাদের কান্না
- কোন দল জিতবে সংসদ নির্বাচনে
- নাট্যজনদের মিলনমেলা কৃষ্টির নাট্যেৎসব প্রশংসিত
- কে এই জোহরান মামদানি ?
- আজকাল’- ৮৭৪
- আজকালের আজকের সংখ্যা ৮৭২
- আজকাল ৮৮৪ তম সংখ্যা
- ‘আজকাল’-৮৭৫ এখন বাজারে
- টিকটক বিক্রির সময়সীমা বাড়ালেন ট্রাম্প
- সরাসরি কাবার ওপর সূর্য, বিরল মহাজাগতিক ঘটনা
- আজকাল ৮৮২ তম সংখ্যা
- আজকের সংখ্যা ৮৭৬
- এক কোটি আইডি ডিলিট করল ফেসবুক, শুদ্ধি অভিযানের ঘোষণা
- আজকাল সংখ্যা ৮৭৯
- সর্বোত্তম পথ একটি নির্বাচিত সরকার গঠন
- কবির জন্য একটি সন্ধ্যা
- আজকের আজকাল ৮৭৩
- আজকালের আজকের সংখ্যা ৮৭৮
- মানুষের ধ্বংসই শয়তানি শক্তির আরাধ্য
- হারিয়ে যাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ বই বিক্রেতারা
- ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও নিষেধাজ্ঞা’র রাজনৈতিক অর্থনীতি
- ‘নিজের পাশে অন্যকে দাঁড়াবার জায়গাটা দিতে হবে’
- অসম্মান তো সবার জোটে না, আমার না হয় জুটলো
- অগুণিত সাধারণ মানুষ আমাকে ভালোবাসে
- নিষেধাজ্ঞা নয় হুশিয়ারি
- নাইপলের মৃত্যুতে শোকাহত বিশ্বসাহিত্য অঙ্গন
- ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার!
- ‘এই ছাত্র রাজনীতির কাছে আমরা অসহায়’
- বাংলাদেশকে বাঁচাবেন কারা
- নতুন ভিসা নীতির প্রেক্ষাপট-উদ্দেশ্য
- বাংলাদেশ ও আমার সেই ভালো লাগার অনুভূতি
- যুক্তরাষ্ট্র কি আবার স্বেচ্ছায় একঘরে হতে চলেছে
- ‘অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার সম্পর্ক নেই’
