পরিবর্তিত বাংলাদেশ : আশা ও উদ্বেগ
হাসান ফেরদৌস
প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০২৪
রাতারাতি বদলে গেছে বাংলাদেশ। স্বৈরাচার হিসাবে জনতার রোষে যাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হল, এক মাস আগেও তার পরিবর্তন সম্ভব, এমন ভাবনা আমাদের মাথায় ঢোকেনি। শুধু যে ক্ষমতার প্রতিটি ক্ষেত্রে এই স্বৈরাচার তার নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে ছিল তাই নয়, আমাদের চিন্তার রাজ্যেও তার আধিপত্য ছিল প্রায়-নিরঙ্কুশ।
ইতিহাস সাক্ষী, সবচেয়ে ক্ষমতাধর সাম্রাজ্যেও অনন্তকাল ক্ষমতা টিকে থাকে না। ক্ষমতার দম্ভ ও সকল বিরোধিতা দমনে সাফল্য শুধু যে ঔদ্ধত্যের জন্ম দেয় তাই নয়, স্বৈরাচারী শাসককে অন্ধ করে ফেলে। ইতিহাসের পাঠ উদ্ধৃত করে আর্নল্ড টয়েনবি বলেছেন, দেয়ালের লিখন পাঠে অক্ষম স্বৈরশাসকের পতন হত্যা নয়, আত্মহত্যা।
বাংলাদেশেও ঠিক সেই ঘটনাটিই ঘটেছে। আত্মহত্যা করেছে স্বৈরশাসক। এখানে এত দীর্ঘ সময় নির্মম দক্ষতায় তারা যে ক্ষমতায় টিকে ছিল, তার অন্যতম কারণ একটি তাবেদার ক্ষমতাভোগী গোষ্ঠীর নিঃশর্ত সমর্থন। এই ক্ষমতাভোগীদের মধ্যে রয়েছে প্রশাসনের সদস্য, পেশাদার রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক নেতৃত্বের উল্লেখযোগ্য অংশ। এদের কিয়দংশ সরাসরি মধুর চাকে ভাগ বসানোর সুযোগ পায়। অন্যদের, বিশেষত অনুগত বুদ্ধিজীবীদের, বড়জোর বোতলের চুইয়ে পড়া মধুর ছিটেফোটার ভাগ পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। তবে তাঁদের ‘নৈতিক সান্ত¦না’ হিসাবে ছিল মুক্তিযুদ্ধ নামক মুলো। যখনই দুঃশাসনের সমালোচনা উচ্চারিত হয়েছে, এমনকি সামাজিক বৃত্তে সীমাবদ্ধ সে সমালোচনাও তারা প্রত্যাখান করেছেন এই যুক্তিতে যে এই সরকারের (পড়ুন স্বৈরাচারের) কোন বিকল্প নেই। স্বৈরাচার যে কখনো মুক্তিযুদ্ধের ধারক হতে পারে না এই সাধারণ সত্যটুকুও তাদের বিবেচনায় প্রবেশ করেনি। ফলে, এখন এমন দাবী করা মোটেই অযৌক্তিক নয়, সুবিধাভোগী এই তাবেদার গোষ্ঠীও স্বৈরাচারের নিরঙ্কুশ আধিপত্য ও অপশাসনের জন্য দায়ী।
একাত্তর-পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশে যারা ক্ষমতার কেন্দ্রে নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে, তারা বরাবরই নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকারী হিসাবে বৈধতা দাবী করেছে। ক্ষমতার শীর্ষে যারা অবস্থান নেন, তারা প্রায় সবাই ছিলেন বিগত শতকের রাজনীতিক। গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশে ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু নেতৃত্বে প্রজন্মগত কোন পরিবর্তন আসেনি। এর ফলে পরবর্তী প্রজন্মের সঙ্গে তাদের ব্যবধান বেড়েছে, সৃষ্টি হয়েছে অনপনেয় দূরত্ব। এমনকি মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নেও তাদের অবস্থান ও আনুগত্যে রয়েছে বিস্তর প্রভেদ। বিগত প্রজন্ম তাদের ক্ষমতা ও সুবিধাভোগ চিরস্থায়ী করতে মুক্তিযুদ্ধের যে অপব্যবহার করেছে নব প্রজন্মের মনে তা গভীর প্রত্যাখানের জন্ম দিয়েছে।
আরো একটি পরিবর্তন আমাদের অলক্ষ্যে জন্ম নিয়েছে। নতুন যে প্রজন্ম, যারা আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিতে অভিজ্ঞ ও বহির্বিশ্বের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির সঙ্গে পরিচিত, বাংলাদেশের স্থবির রাজনৈতিক বাস্তবতাকে একমাত্র সত্য হিসাবে মানতে তারা প্রস্তুত ছিল না। তারা আরব বসন্তের কথা পড়েছে। লাতিন আমেরিকার অনেক দেশে এক নবীন নেতৃত্বের আবির্ভাব দেখেছে। যুক্তরাজ্যে রক্ষণশীলদের নির্বাচনী বিপর্যয়ের প্রত্যক্ষদর্শী তারা। ‘পরিবর্তন সম্ভব,’ এটি তাদেরই শ্লোগান। বাংলাদেশে এই নতুন প্রজন্মের হাতেই ঘটল অভাবিত এক বিপ্লব।
তবে শিক্ষার্থী ও নব প্রজন্মের প্রতিনিধিদের নেতৃত্বে ও অংশগ্রহণে যে রাজনৈতিক পরিবর্তন সূচিত হল, তাকে ‘বিপ্লব’ বলা যায় কীনা, তা নিয়ে আমার মনে প্রশ্ন জেগেছে। বিপ্লব মানে বিগতের সঙ্গে পূর্ণচ্ছেদ। আওয়ামী সরকারের পতনের পর যে সামান্য কয়েকদিন গেছে, তা থেকে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলার সময় হয়ত আসেনি, কিন্তু একটি লক্ষণ বা প্রবণতা নজরে পড়ছে। স্বৈরাচার পতনের পর মুহুর্ত থেকেই ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের জন্য আঁক কষা শুরু করেছে পুরানো, প্রত্যাখ্যাত রাজনৈতিক স্বার্থবাদী মহল। সবচেয়ে অধিক দৃশ্যমান সেইসব গোষ্ঠী যাদের একসময় আমরা ধর্মীয় রাজনীতিক হিসাবে নিন্দা করেছি। আওয়ামী নেতৃত্বের অনুপস্থিতির ফলে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তাতে কোন বাধা ছাড়াই ঢুকে পড়েছে তারা।
নতুন যে প্রজন্মের হাতে পরিবর্তন সূচিত হল, তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে এমন সম্ভাবনায় অথবা আশংকায় তারা মোটেই উদ্বিগ্ন নয়। যে দুর্নীতিমুক্ত, অন্তর্ভূক্তিমূলক সুশাসিত বাংলাদেশের কথা তারা ভাবছে, সে রূপরেখার সঙ্গে সম্মতি পোষণ করে এমন সবাই তাদের কাছে আমন্ত্রিত। যারাই পুরানো বাংলাদেশকে পুনরাবিষ্কারে আগ্রহী হবে, যারা গতকালের অন্ধকূপে আবারো আমাদের ঠেলে দিতে চাইবে, তারাও সদ্য পলাতক স্বৈরাচারের ভাগ্য বরণ করবে, এমন সাহসী ঘোষণা তারা দিয়েছে।
আমি নতুন প্রজন্মের এই ঘোষণায় ও তাদের নেতৃত্বে আস্থাবান। আমরা যা পারিনি, তারা সেটা করে দেখিয়েছে। এই মুহুর্তে আমাদের সকলের দায়িত্ব তাদের সে স্বপ্নযাত্রায় সমর্থন দেওয়া, তাদের সফরসঙ্গী হওয়া। এছাড়া বিকল্প কোন পথও আমাদের নেই। এরা ব্যর্থ হলে ঘুরে দাঁড়ানোর শেষ জায়গাটুকুও আমাদের হাতছাড়া হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিষ্ট, নিউইয়র্ক।
- অস্ট্রেলিয়ায় নুরুলদের দ্বিতীয় জয়
- একাদশে ভর্তির প্রথম ধাপে ১০ লাখ ৭৩ হাজার আবেদন, ফল আজ
- পুতিনের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবছেন ইউরোপীয় নেতারা:যুক্তরাজ্য
- যুক্তরাষ্ট্রে ৬ হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল
- রুশ ট্রেনে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ভয়াবহ হামলা
- পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে ১৭ ফেব্রুয়ারি
- কর্মচারীদের দুর্নীতি, টেন্ডার বাণিজ্য-লোকসানে বিমান বাংলাদেশ
- কলিং ভিসায় সাড়ে ২৪ লাখের বেশি কর্মী নেবে মালয়েশিয়া
- মালয়েশিয়ায় শ্রমিক যাবে শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে
- গ্যাসচোরেরা কাজ করছে মিলেমিশে
- মূলধন সংকটে ২৩ ব্যাংক, ঘাটতি ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা
- রাশিয়া শক্তিশালী, এটা মেনে নিতেই হবে : ট্রাম্প
- হোয়াইট হাউসে বৈঠক শেষে পুতিনকে ফোন করবেন ট্রাম্প
- এক টাকাও খরচ করতে পারেনি ১২ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ
- হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প জেলেনস্কির বৈঠক শুরু
- আমি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তাইওয়ানে আক্রমণ করবে না চীন : ট্রাম্প
- হজ কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার অনুমতি পেলো ৩৩ ব্যাংক
- পুতিনকে ট্রাম্পপত্নীর গোপন চিঠি, কী আছে এতে?
- কী ঘটেছে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে
- রবিবার যেখানে আঘাত হানতে পারে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘এরিন’
- কক্সবাজারে অসুস্থ ফারুকী, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ফিরলেন ঢাকায়
- পুতিনের বার্তা পৌঁছে দিলেন ট্রাম্প, জেলেনস্কির প্রত্যাখান
- বেঙ্গল ফেডারেল ক্রেডিট ইউনিয়ন অনুমোদন পেল
- লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হলেন সৈয়দ সুমন
- ট্রাম্প-ক্যুমো ফোনালাপ
ষড়যন্ত্রের অভিযোগ মামদানির - ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে ভারতের লাভক্ষতি
- গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলন
- বনভোজনে বাবা-মা’র সামনেই মর্মান্তিক মৃত্যু
- ড. ইউনূস অশান্তির দূত : ড. নবী
- টাইমস স্কয়ারে একই দিনে ২টি দুর্গাপূজা
- ব্রংকসের খলিল চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট বিক্রি হয়ে গেল
- এনবিআরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলবে রোববারও
- এ বি সিদ্দিক এবং জাস্টিসকে নিয়ে জামালপুর জেলা সমিতির নতুন কমিটি
- আজকাল ৮৫৫ তম সংখ্যা
- ৩০ দিন পর থাকবে না ফেসবুক লাইভ ভিডিও, বিকল্প কী?
- আজকালের আজকের সংখ্যা ৮৫৮
- ‘আজকাল’- ৮৫৯
- আজ ভালোবাসা দিবস
- ‘আজকাল’- এখন বাজারে।
- আজকালের আজকের সংখ্যা ৮৬০
- নাট্যজনদের মিলনমেলা কৃষ্টির নাট্যেৎসব প্রশংসিত
- ঈদের কেনাকাটায় কোন ধরনের পোশাক ক্রেতাদের মন কাড়ছে ?
- টক দই খেলে কী উপকার
- এবার ইন্সটাগ্রামে আসছে ডিসলাইক বাটন
- আজকের আজকাল ৮৬১ সংখ্যা
- ‘আজকাল’- ৮৭১ সংখ্যা
- আজকের সংখ্যা ৮৫৭
- আজকাল ৮৬২তম সংখ্যা
- সাপ্তাহিক আজকাল আজকের সংখ্যা ৮৬৬
- ইনস্টাগ্রামে ছড়ায় ছবির বিভ্রান্তি
- মানুষের ধ্বংসই শয়তানি শক্তির আরাধ্য
- হারিয়ে যাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ বই বিক্রেতারা
- ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও নিষেধাজ্ঞা’র রাজনৈতিক অর্থনীতি
- অসম্মান তো সবার জোটে না, আমার না হয় জুটলো
- অগুণিত সাধারণ মানুষ আমাকে ভালোবাসে
- ‘নিজের পাশে অন্যকে দাঁড়াবার জায়গাটা দিতে হবে’
- নাইপলের মৃত্যুতে শোকাহত বিশ্বসাহিত্য অঙ্গন
- ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার!
- নিষেধাজ্ঞা নয় হুশিয়ারি
- ‘এই ছাত্র রাজনীতির কাছে আমরা অসহায়’
- বাংলাদেশকে বাঁচাবেন কারা
- বাংলাদেশ ও আমার সেই ভালো লাগার অনুভূতি
- যুক্তরাষ্ট্র কি আবার স্বেচ্ছায় একঘরে হতে চলেছে
- নতুন ভিসা নীতির প্রেক্ষাপট-উদ্দেশ্য
- ‘অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার সম্পর্ক নেই’
