বুধবার   ০১ মে ২০২৪   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১   ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
৫৯১

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০১৯  

।। ড. হাছান মাহমুদ ।।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের তিনিই ছিলেন অবিসংবাদিত নেতা। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর যখন পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটল, তখনও পাকিস্তানিদের চক্রান্তে তিনি ছিলেন পাকিস্তানেরই কারাগারে। যুদ্ধ জয়ের আনন্দের মধ্যেও তাই তখনও পিতার অনুপস্থিতির বেদনা। ২৫ দিন পর, ৪৮ বছর আগের এই দিনে (১০ জানুয়ারি, ১৯৭২) যখন তিনি পা রাখলেন দেশের মাটিতে, তখনই যেন পূর্ণতা পেল সেই বিজয়।

রেসকোর্স ময়দানে (এখনকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) তখন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ অপেক্ষায় স্বাধীন দেশে প্রথমবারের মতো পিতাকে দেখার জন্য। পিতাও ফিরেই স্বাধীন বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে চুমু খেলেন, দেশের মাটি মাথায় তুলে নিলেন। লাখ লাখ মানুষের মুখের দীপ্তি বলে দিচ্ছিল, স্বাধীনতার জন্য তাদের যে দীর্ঘ প্রতীক্ষা, ঠিক একই রকম প্রতীক্ষা ছিল পিতার জন্যও। বঙ্গবন্ধু তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে বলেছিলেন, ‘অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রা’। সত্যিই তো, তার আগমনের মধ্য দিয়েই তো আলোর পথে যাত্রা শুরু করলো বাংলাদেশ।

বাঙালি জাতির চূড়ান্ত মুক্তির ঘোষণা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চই দিয়েছিলেন জাতির পিতা। রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক ভাষণে ঘোষণা দেন— ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ পাকিস্তানিরা তখনই বুঝে গিয়েছিল, বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মতোই এ জাতিকে আর ‘দাবায়ে রাখা’ সম্ভব হবে না। তাই ২৫ মার্চের কালরাতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে নিধনযজ্ঞ চালাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।

২৬ মার্চের প্রথম প্রহরেই স্বাধীনতা ঘোষণা করে সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার ডাক দেন বঙ্গবন্ধু। এরপরই পাকিস্তানিরা তাকে তার ৩২ নম্বরের বাসা থেকে গ্রেফতার করে। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময়ই আটকে রাখা হয় বঙ্গবন্ধুকে। তার অনুপস্থিতিতে তার ঘোষণা অনুযায়ীই গোটা বাঙালি জাতি মরনপণ যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করে আসে, স্বাধীনতা পায় বঙ্গবন্ধুর প্রাণের বাংলা।

একদিকে যখন দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে যুদ্ধের ময়দানে জীবন বাজি রেখে লড়াই করছে বাঙালি জাতি, তখন পাকিস্তানের কারাগারে অসহনীয় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু। প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির আসামি হিসেবে মৃত্যুর পরোয়ানা শোনানো হচ্ছিল তাকে। কিন্তু পাকিস্তানিরা জানত না, কোনো ভয়-ভীতি দেখিয়ে বঙ্গবন্ধুর মতো সিংহ হৃদয়ের মানুষকে দমিয়ে রাখা যায় না। তাই মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও তিনি গেয়েছেন বাঙালির জয়গান, বাংলাদেশের জয়গান। তার এই সাহসের কাছে হার মানে পাকিস্তানিরা, বঙ্গবন্ধুর প্রাণ নাশের ষড়যন্ত্র থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়।

দীর্ঘ ৯ মাস ১৪ দিন কারাভোগ শেষে বিজয়ীর বেশে স্বদেশের মাটিতে ফিরে দেখতে পান, তাকে বরণ করে নিতে তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত এলাকা পরিণত হয়েছে জনসমুদ্রে। লাখো কণ্ঠের ডাকে আবেগাপ্লুত বঙ্গবন্ধু তাই রেসকোর্সের ভাষণে বলেন, ‘রক্ত দিয়ে হলেও আমি বাঙালি জাতির এই ভালোবাসার ঋণ শোধ করে যাব।’

কথা রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বিশ্বাস করতেন ভালোবাসায়, তার বিশ্বাস ছিল বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার ওপর। আর সেই বিশ্বাস নিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে ‘সোনার বাংলা’য় রূপান্তরের জন্য কাজ করে যেতে থাকেন। যুদ্ধের মাধ্যমে কেবল রাজনৈতিকভাবে স্বাধীনতা অর্জন আর বিশ্ববাসীর কাছে স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি চাননি বঙ্গবন্ধু, তিনি চেয়েছিলেন সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক মর্যাদা। তার ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বেই তাই অতি অল্প সময়েই বিশ্ব দরবারে তৈরি হয় বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে বাংলাদেশের কণ্ঠ ছড়িয়ে পড়ে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই।

কিন্তু দুর্ভাগ্য বাঙালি জাতির— পাকিস্তানিরা যার সাহস আর দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসায় মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছিল, পাকিস্তানি বর্বররা যার গায়ে এতটুকু আঁচড় দেওয়ার সাহস করেনি, সেই বঙ্গবন্ধুর ‍বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এ দেশেরই এক শ্রেণির বিশ্বাসঘাতক ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্র। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে রুখে দেওয়ার সেই চক্রান্তে প্রাণ হারাতে হয়েছিল জাতির জনককে। বঙ্গবন্ধু যেমন বলেছিলেন, রক্ত দিয়ে হলেও ভালোবাসার ঋণ তিনি শোধ করে যাবেন, ঠিক যেন তেমনই তিনি নিজের প্রাণ দিয়ে মিটিয়ে গিয়েছিলেন দেশের আপামর জনসাধারণের ভালোবাসার দায়।

বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারী, পাকিস্তানপন্থিরা দেশের অগ্রযাত্রাকে সাময়িকভাবে রুখে দিতে সক্ষম হলেও বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মতোই বলতে হয়, বাঙালিকে ‘দাবায়ে রাখা’ যায় না। তাই বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে ধীরে ধীরে দেশ যখন খাদের কিনারায়, তখনই যেন ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে ফিনিক্স পাখির মতো দেশকে পুনর্জন্ম দিতে জেগে ওঠেন তারই সুযোগ্য কন্যা, দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু হত্যার ২১ বছর পর দেশের দায়িত্ব নেন তিনি। মাঝখানে ফের ষড়যন্ত্র করে তাকে সরিয়ে দেওয়া হলেও জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে তিনি দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তারই বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে এখন বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে ঈর্ষণীয় একটি দেশ, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে পরিচিত। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে তিনিই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশের পথে।

বঙ্গবন্ধুকন্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের বুকে এক উন্নত দেশের নাম হবে বাংলাদেশ, যেখানে ধনী-দরিদ্র পার্থক্য থাকবে না, সকলের জন্য খোলা থাকবে সব সম্ভাবনার সব দ্বার। সেই বাংলাদেশ হবে বঙ্গবন্ধু সেই ‘সোনার বাংলা’, যার স্বপ্ন তিনি নিজে দেখেছিলেন, দেখিয়েছিলেন জাতিকে। তারই সুযোগ্য কন্যা জাতিকে বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেই স্বপ্নের পথযাত্রায়।

যতদিন বাংলাদেশ ও বাঙালির সত্ত্বা থাকবে, ততদিন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। তার সেই ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাই।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

ড. হাছান মাহমুদ, তথ্যমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর