বুধবার   ০৭ মে ২০২৫   বৈশাখ ২৪ ১৪৩২   ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
১৩

সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় ২৭% পদে লোক নেই

প্রকাশিত: ৭ মে ২০২৫  

  •     অনুমোদিত পদ ২,৩৬,৮২৮, কর্মরত ১,৭৩,২৬১, শূন্য ৬৩,৫৭১
  •     গ্রামে শূন্যপদ ৪০%
  •     শহরে দেড় হাজার মানুষের একজন আর গ্রামে ১৫ হাজার মানুষের চিকিৎসক
  •     এসডিজি অর্জনে লাগবে ১০ হাজার মানুষের জন্য ৪৪.৫০ স্বাস্থ্য সেবাদানকারী, এখন আছে ১১.৭০ জন
  •     দ্রুত নিয়োগ শুরুর পরামর্শ

 

দেশের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোয় চিকিৎসক, নার্স ও প্যারামেডিকসহ সরাসরি স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যুক্ত ২৭ শতাংশ পদ ফাঁকা। বর্তমানে প্রথম-২০তম গ্রেড পর্যন্ত এ ধরনের অনুমোদিত পদ ২ লাখ ৩৬ হাজার ৮২৮টি। এর মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছেন ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৬১ জন। ৬৩ হাজার ৫৭১টি পদ শূন্য। তবে গ্রামাঞ্চলে এই ফাঁকা পদের হার ৪০ শতাংশ।

বিশেষ করে চিকিৎসক ঘাটতি এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। অনুমোদিত পদের বিপরীতে সাধারণ চিকিৎসকের ঘাটতি ২৫ শতাংশ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ঘাটতি ৫৮ শতাংশ। এ অবস্থায় বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি-৩) অর্জন থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, সব বয়সী মানুষের সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণে এসডিজি-৩ অর্জনের জন্য ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য ৩১ দশমিক ৫ জন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৪ দশমিক ৫ জন সেবা প্রদানকারী থাকার কথা। অথচ বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা দানকারী রয়েছেন ১১ দশমিক ৭০ জন।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে দেশের স্বাস্থ্যসেবা দানকারী জনবলের এই চিত্র উঠে এসেছে।

কমিশন বলেছে, চাহিদা মোতাবেক উৎপাদনে অক্ষমতা, প্রয়োজনীয় নীতিমালার অভাব এবং উপকরণের সীমাবদ্ধতার কারণে এসডিজি-৩ নির্দিষ্ট অনুপাতে অর্জন করা কঠিন। কমিশন ৩২টি প্রস্তাব সংবলিত তাদের প্রতিবেদন গত সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি ও কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দেশের স্বাস্থ্য খাতে দুই ধরনের সমস্যা রয়েছে— তা হলো জনবল ঘাটতি ও অবকাঠামোগত সমস্যা। এ সমস্যা বেশ পুরনো। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সময় আছে আর পাঁচ বছর। আমরা যদি এখন থেকেও কাজ শুরু করি, তাহলেও ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রার সবগুলো সূচক পূরণ করতে পারব না, কাছাকাছি যেতে পারব।’

এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, এসব ঘাটতি কাটাতে প্রথমেই অর্থের সংস্থান করতে হবে, যাতে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে তাদের হাতে যন্ত্রপাতি দিয়ে সেবার জন্য ছেড়ে দিতে পারি।

১৫ হাজার মানুষের একজন চিকিৎসক

স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য খাতের স্বল্প লোক বিতরণেও গ্রাম ও শহরাঞ্চলে অসামঞ্জস্য রয়েছে। বর্তমানে শহরে প্রতি ১৫০০ ও গ্রামাঞ্চলে প্রতি ১৫ হাজার মানুষের জন্য একজন চিকিৎসক রয়েছেন।

কমিশন স্বাস্থ্য খাতে এই অব্যবস্থাপনার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জটিলতা, স্বচ্ছতার অভাব, পদায়ন ও পদোন্নতিতে স্থবিরতাকে চিহ্নিত করেছে। কমিশন দেখেছে, এ অব্যবস্থাপনার কারণে কর্মরত কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, সেবার মান কমে যাচ্ছে ও গ্রামাঞ্চলের মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক ডা. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, দেশের হাসপাতালগুলোর অবকাঠামো উপযুক্ত না। যেমন: ৪ হাজার ৭০০ ইউনিয়নের মধ্যে ১২০০-১৩০০ ইউনিয়নে চিকিৎসক ও ৩৩০০-এর মতো ইউনিয়নে স্বাস্থ্য সহকারী আছেন। ৫০০-এর মতো ইউনিয়নে সরকারিভাবে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লোক নেই। মোট ইউনিয়নের মধ্যে ২০০-৩০০ ইউনিয়নে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক আছেন। বাকি প্রতিটি ইউনিয়নে গড়ে দুজন করে চিকিৎসক আছেন। একেকটা ইউনিয়নে ৩০ হাজারের মতো মানুষ। সেখানে দুজন চিকিৎসক, অর্থাৎ প্রতি ১৫ হাজার মানুষের জন্য একজন চিকিৎসক। একজন চিকিৎসকের পক্ষে এতগুলো মানুষের চিকিৎসা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, ইউনিয়ন পর্যায়ে ১৫ জন চিকিৎসক থাকার কথা।

এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, আবার এই দুজন কিন্তু একই কাজ করছেন না। একজন সেবা দিচ্ছেন, আরেকজন বাকি কাজ করছেন। বলতে গেলে, ১৩০০ ইউনিয়নে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন একজন চিকিৎসক। তার মানে সবগুলো ইউনিয়নে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। এটা অবকাঠামোগত সমস্যা। এখন যথেষ্ট চিকিৎসক নেই। যারা আছেন, তারাও চিকিৎসার বাইরে অন্য কাজ করেন। ফিজিক্যাল অবকাঠামোর যে অবস্থা, সেখানে থাকার মতো অবস্থা নেই।

মা ও শিশুকেন্দ্রের রোগী যাচ্ছে উপজেলা ও সদরে

কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার বিভাগীয় পরিচালকের দপ্তর, ৬৪ জেলা সদরে একটি করে সিভিল সার্জন ও পরিবার পরিকল্পনার উপপরিচালকের দপ্তর, ৬৩টি জেলায় সদর হাসপাতাল, ৪৩২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ১ হাজার ৩৬২টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, ৩ হাজার ২৯১টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও ১৩ হাজার ৯২৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এগুলো চলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে।

অন্যদিকে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের হাতে আছে ১০ শয্যার ২৮৮টি মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র। এর মধ্যে ১৬২টি ইউনিয়ন পর্যায়ে রয়েছে। এগুলো এখন ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হচ্ছে। এসব কেন্দ্রে দুজন করে চিকিৎসক থাকার কথা; কিন্তু তা নেই।

কমিশন বলছে, এসব মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

দুই ক্যাডারে দ্বন্দ্ব

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৫৫ হাজার। এর মধ্যে ৬০৩টি পদ আছে সাধারণ ক্যাডারভুক্ত। সেসব পদে কর্মরত আছেন ৩৩০ জন। অর্থাৎ ৪৫ শতাংশ পদ ফাঁকা। এ ছাড়া চিকিৎসকদের জন্য টেকনিক্যাল পদ রয়েছে ১ হাজার ১২০টি।

কমিশন দেখেছে, একই অধিদপ্তরের এই দুই ক্যাডারের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধের অভাব রয়েছে। ফলে চিকিৎসায় বিঘ্ন ঘটছে।

কমিশন আরও বলেছে, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীনে ঢাকা শহরে চারটি বিশেষায়িত হাসপাতাল। সেখানে চিকিৎসক আছেন। তবে হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের জন্য সহায়ক ও অনুকূল পরিবেশ নেই।

এ ছাড়া নগর এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে অন্যান্য কিছু মন্ত্রণালয়েরও কিছু হাসপাতাল, নার্সিং ও প্যারামেডিকেল ইনস্টিটিউট, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু এসবের অবস্থান ও সেবার পরিমাণ নগর এলাকার আয়োজনের সমানুপাতিক নয়।

কমিউনিটি ক্লিনিক চলছে একজন দিয়ে

অধ্যাপক ডা. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, প্রতি ছয় হাজার মানুষের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকার কথা। কিন্তু এখন ১৮ হাজার মানুষের জন্য একটি ক্লিনিক। প্রতিটি ক্লিনিকে মাত্র একজন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)। তিনি ঝাড়– দিচ্ছেন, ক্লিনিক রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত করছেন, অনেক সময় বিদ্যুৎ বিল নিজের পকেট থেকে দিচ্ছেন, ওষুধ দিচ্ছেন, ওষুধের তালিকা রাখছেন, রোগীদের বিভিন্ন ধরনের সেবা দিচ্ছেন। এভাবে সেবা দেওয়া সম্ভব না। এখানে স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা দেওয়া হচ্ছে। বাকি যে তিনজন আছেন, তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন, ক্লিনিকে ঠিকমতো বসেন না। তার মানে যে জনবল ও অবকাঠামো আছে, সেটাও দক্ষভাবে ব্যবহার হচ্ছে না।

সংকট কাটাতে দ্রুত কাজ শুরুর পরামর্শ

বর্তমানে স্বাস্থ্য খাতে দুই ধরনের বড় সংকট দেখছেন অধ্যাপক ডা. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, এগুলো হলো জনবল সংকট ও অবকাঠামো সমস্যা। এখন জনবল নিয়োগের উদ্যোগ শুরু হলেও নিয়োগ দিতে কমপক্ষে ছয় মাস থেকে এক বছর লাগবে। এরপর তাদের প্রশিক্ষণ লাগবে। যেমন— সাধারণত এমবিবিএস বা কনসালট্যান্ট চিকিৎসকরা একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা করেন। কিন্তু জনগণের আঙ্গিকে স্বাস্থ্য একটি নির্দিষ্ট বিষয় না।

জনগণের শিক্ষা, বিশ্বাস, দৃষ্টিভঙ্গি, অভ্যাস, আশা-আকাঙ্ক্ষা, আর্থিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা, পেশা সব আঙ্গিক বিচার করেই একজন মানুষকে চিকিৎসা দিতে হবে। তাকে শুধু ক্লিনিক্যাল চিকিৎসা করলে হবে না। পরে সে ওই রোগ নিয়ে আবার আসবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই দৃষ্টিভঙ্গিতে চিকিৎসা হয় না। নিয়োগ দেওয়ার পর কমপক্ষে তিন মাস প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

এরপর পোস্টিং স্থলে আশপাশের মানুষ, পরিবেশ সব বুঝে কাজ শুরু করবেন। সব মিলে কমপক্ষে দেড়-দুই বছর লাগবে। এমনকি কোথায় শূন্যপদে আছে, সেটা বের করতেও ছয় মাস লাগবে বলে জানান এই বিশেষজ্ঞ।

এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, শুধু চিকিৎসক হলেই হবে না। একজন চিকিৎসকের সঙ্গে তিনজন নার্স ও পাঁচজন প্যারামেডিক থাকার কথা। অন্তত দুজন নার্স ও তিনজন প্যারামেডিক থাকলেও হয়। দুজন নার্সের মধ্যে একজন নার্স ও আরেকজন মিডওয়াইফ বা ধাত্রী সহকারী। প্যারামেডিকদের একজন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন, একজন ওষুধ দেবেন, আরেকজন সুপারভাইজার হিসেবে থাকবেন। গার্ড ও অফিস সহকারী মিলে সাত-আটজন অন্যান্য কর্মী লাগবে। যারা আছেন, তাদের কারোরই থাকার ব্যবস্থা নেই।

এই বিশেষজ্ঞ বলেন, আরেক ধরনের জনবল লাগবে ব্যবস্থাপনার জন্য। তারা মনিটরিং করবেন যে কাজগুলো ঠিকমতো হচ্ছে কি না, মান ও পরিমাণ অনুযায়ী হচ্ছে কি না, স্বচ্ছতা আছে কি না, কেউ ফাঁকি দিচ্ছেন কি না। সেই ব্যবস্থাপক শ্রেণির জনবল নেই। যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। তারা দেখে দেখে শেখেন। 

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর