মঙ্গলবার   ০৬ মে ২০২৫   বৈশাখ ২২ ১৪৩২   ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আশা ক্ষীণ হচ্ছে

প্রকাশিত: ৬ মে ২০২৫  

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। গত বছরের মাঝামাঝি থেকে সোমবার (৫ মে) পর্যন্ত নতুন করে ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে বলে সরকারি হিসাবেই বলা হয়েছে।

এর বাইরে বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। যার মধ্যে আট লাখেরও বেশি এসেছে ২০১৭ সালের আগস্টের পর।

নতুন এই ঢলের পেছনে রয়েছে আরাকান আর্মি ও আরসার মধ্যে সংঘর্ষ, খাদ্য ও ওষুধ সংকট, সহিংসতা এবং রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক শ্রমে নিযুক্ত করার মতো মানবাধিকার লঙ্ঘন। সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করলেও অনুপ্রবেশ থামছে না। ঢাকা ও নেপিদোর মধ্যকার প্রত্যাবাসন আলোচনা কার্যকর ফল আনতে পারেনি।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, রাখাইনে আরাকান আর্মির সহিংসতায় সেখানে থাকা বাকি রোহিঙ্গারাও বাংলাদেশের অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। রাখাইনে পরিস্থিতি এ রকম চলতে থাকলে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারাও ফিরে যেতে চাইবে না। ফলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের কাছে কোনো সুযোগ নেই।

কূটনৈতিক বিশ্লেষক ও পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো জরুরি। মিয়ানমারকে বাধ্য না করা গেলে এ সংকট বাংলাদেশের ওপর দীর্ঘস্থায়ী বোঝা হয়ে থাকবে।

গত বছরের ডিসেম্বর থেকে রাখাইনে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। আরাকান আর্মি মংডু টাউনশিপের দখল নিলেও, আরসা গেরিলা কৌশলে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ রোহিঙ্গাদের আরসাকে সহায়তা দেওয়ার সন্দেহে আরাকান আর্মি রোহিঙ্গা গ্রামবাসীর ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। হত্যা, গ্রাম উচ্ছেদ, খাদ্য লুট এবং জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করার কারণে বহু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

কক্সবাজারে নিবন্ধন ও আশ্রয়শিবিরের বাস্তবতা

নতুন করে ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা নিবন্ধিত হয়েছে। তবে তাদের ঘর বরাদ্দ এখনো হয়নি। ফলে অনেকে আত্মীয় বা পরিচিতদের তাঁবুতে ঠাঁই নিচ্ছেন। বিদ্যমান ক্যাম্পগুলোতে থাকা রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় খাদ্য, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থায় অতিরিক্ত চাপ পড়েছে।

সীমান্ত নিরাপত্তা ও অনুপ্রবেশের পথ

বিজিবি ও কোস্ট গার্ড নাফ নদী ও স্থলসীমান্তে টহল বাড়িয়েছে। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ৪৫ কিমি সীমান্তে কঠোর নজরদারি চলছে। তারপরও ২২টি চিহ্নিত স্থলপথ দিয়ে অনুপ্রবেশ হচ্ছে, বিশেষ করে রাতের আঁধারে। উখিয়া, নাইক্ষ্যংছড়ি ও টেকনাফের দুর্গম এলাকাগুলো বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ।

সমুদ্রপথে আগমন

নতুন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে রোহিঙ্গারা বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে ট্রলারে করে কক্সবাজার, মহেশখালী, চট্টগ্রামের আনোয়ারা, বাঁশখালী ও পতেঙ্গা উপক‚লে পৌঁছাচ্ছে। সম্প্রতি পতেঙ্গা থেকে র‌্যাব ৩৫ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে। সমুদ্রপথে আগমন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও জীবন বাঁচাতে অনেকেই এই পথ নিচ্ছে।

প্রত্যাবাসন চেষ্টার ব্যর্থতা

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ কূটনৈতিক পর্যায়ে ধারাবাহিক চেষ্টা চালিয়ে আসছে। দ্বিপক্ষীয়ভাবে ঢাকা ও নেপিদো বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতায় পৌঁছালেও মিয়ানমারের পরিস্থিতি ও সদিচ্ছার অভাবে সেগুলো ফলপ্রসূ হয়নি। ২০১৮ ও ২০১৯ সালের প্রত্যাবাসন চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গার নামের তালিকা দেয়, যার মধ্যে কয়েক ধাপে মাত্র ১ লাখ ৮০ হাজার জনকে যাচাই করে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার।

২০১৮, ২০১৯ ও ২০২৩ সালে প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা, নাগরিকত্ব ও ভিটেমাটির নিশ্চয়তা ছাড়া ফিরতে চায় না। মিয়ানমারে সামরিক সরকার এখনো রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করেনি। রাখাইনে নিয়ন্ত্রণও সেনাবাহিনীর নয়, বরং সশস্ত্র বিদ্রোহীদের হাতে। আট বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো যায়নি।

২০২৩ সালের আগস্টে চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার একটি ‘পাইলট প্রত্যাবাসন প্রকল্প’ চালুর সিদ্ধান্তে পৌঁছায়, যার আওতায় প্রাথমিকভাবে প্রায় ১২,০০০ রোহিঙ্গাকে স্বেচ্ছায় ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়। এরপর সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদল নেপিদো সফর করে এবং সেই বৈঠকে রাখাইনের মংডু এলাকায় ফেরত রোহিঙ্গাদের নিজ নিজ গ্রামে পুনর্বাসনের আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষদিকে রাখাইনে সংঘাত বৃদ্ধি ও ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে এই পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায়। ২০২৪ ও ২০২৫ সালে একাধিকবার কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনার চেষ্টা হলেও মাঠপর্যায়ে প্রত্যাবাসন বাস্তবায়নের কোনো কার্যকর অগ্রগতি দেখা যায়নি।

এদিকে গত কয়েক বছরে বিমসটেক, আসিয়ানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা বিষয় তুলে ধরা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসি মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা নিপীড়নের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আইসিজে মিয়ানমারকে গণহত্যা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে। তবে এসব উদ্যোগ এখনো বাস্তবভিত্তিক পরিবর্তন আনতে পারেনি।

ভারত কৌশলগত কারণে মিয়ানমার বিষয়ে সরাসরি অবস্থান থেকে বিরত থেকেছে, তবে মানবিক সহায়তার নামে কিছু উদ্যোগ চালু রেখেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, ভারত এই সংকটে আরও সক্রিয় ভ‚মিকা নিক, বিশেষত আসিয়ান এবং বিমসটেক ফোরামে।

বর্তমানে রাখাইনে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করায় চীনের মধ্যস্থতায় করা সেই পাইলট প্রত্যাবাসন প্রকল্পও স্থগিত রয়েছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ে আঞ্চলিক ফোরাম বিমসটেক এবং আসিয়ান সংলাপেও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছে। গত মাসে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে দুদেশের প্রতিনিধিদের সাক্ষাতে মিয়ানমার প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার শরণার্থীকে ফেরত নেওয়ার কথা আবার নিশ্চিত করে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আশা অনেকটাই অনিশ্চিত।

অভিবাসন ও শরণার্থীবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের বড় সমাধান হলো রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে, তাতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো জরুরি। অবিলম্বে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়িয়ে এবং আন্তর্জাতিক চাপ নিশ্চিত করে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ফেরত গ্রহণে রাজি করানোই এ সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।

বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এত দিনের চেষ্টার পরেও একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো যায়নি। ক্যাম্পে অবস্থিত আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘রাখাইনে খাদ্যসংকটের মধ্যেও আরাকান আর্মি আমাদের ওপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই নির্যাতন মানুষকে সীমান্ত পেরোতে বাধ্য করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে একদিকে যেমন প্রত্যাবাসন অসম্ভব হয়ে পড়বে, তেমনি অনুপ্রবেশ ঠেকানোও মুশকিল হবে।’

সব মিলিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান চাপ ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক বোঝা এবং সামাজিক প্রভাব সামলানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক‚টনীতিতেও দেশটিকে ভারসাম্য রক্ষা করতে হচ্ছে।

 

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর