মঙ্গলবার   ১৭ জুন ২০২৫   আষাঢ় ২ ১৪৩২   ২০ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

সর্বশেষ:
যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় শিক্ষার্থীর হাত-পা বাঁধার ভিডিও অস্ট্রিয়ায় স্কুলে সন্ত্রাসী হামলায় ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ৯ যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় শিক্ষার্থীর হাত-পা বাঁধার ভিডিও রুশ-যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় দফা আলোচনা শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল গার্ড কী, কখন মোতায়েন করা হয়? যুক্তরাষ্ট্রের টিকা কমিটির সবাইকে বরখাস্ত করলেন কেনেডি ফ্রান্সগামী উড়োজাহাজে চড়ে ইসরাইল ছাড়লেন গ্রেটা থুনবার্গ না ফেরার দেশে চিত্রনায়িকা তানিন সুবাহ সিঙ্গাপুরের ঘাম ঝরিয়েও হার বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
৮২৫

২৮৫ বছরের ঐতিহ্যে দেওভোগ আখড়া’র বৈশাখী মেলা

প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০১৯  

নানা মানুষের সমাগমে মুখরিত এখন রাজালক্ষ্মী নারায়ণ জিউড় আখড়া’র প্রাঙ্গন। নতুন বছর উপলক্ষ্যে মেলার প্রাঙ্গন ভরে উঠেছে হরেক রকমের দোকানে। মেলায় ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়ে নাগর দোলা। পাশেই বসানো হয়েছে নিমকি, মুড়ি,মুড়কি ভাজাসহ নানা ধরনের তেলে ভাজা। 


ভেতরে রয়েছে নানান খেলনার ও গৃহস্থালী তৈজসপত্রের দোকান। গত এক সপ্তাহ যাবৎ সাজানো হচ্ছে  রাজালক্ষ্মী নারায়ণ জিউড় আখড়া’র প্রাঙ্গন। বাড়তে থাকে নানা জাত,ধর্ম,বর্ণ আর ধনী-গরীব সর্বস্তরের মানুষের সমাগম।


প্রতিবছরের মত এবারো মাসব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। পহেলা বৈশাখের দশ থেকে বারো দিন আগেই শুরু হয় এ বৈশাখী মেলার প্রস্তুতি।
প্রাচ্যের ড্যান্ডি নারায়ণগঞ্জের ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে এ বৈশাখী মেলার ইতিহাস। জানা যায়, প্রায় আনুমানিক ২শ’ ৮৫ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে শ্রী শ্রী রাজালক্ষ্মী নারায়ণ জিউর বিগ্রহ মন্দির, যা বর্তমানে ‘শ্রী শ্রী রাজালক্ষ্মী নারায়ণ জিউর আখড়া’ নামে পরিচিত।


প্রতি বছর পহেলা বৈশাখের দিন থেকেই দেওভোগ রাজালক্ষ্মী নারায়ণ জিউর আখড়া প্রাঙ্গনে মাসব্যাপী এই মেলা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এই মেলাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জের সমাগম ঘটে সর্বস্তরের মানুষের।

 

বৈশাখের পুরো মাসজুড়েই মিলনমেলায় পরিণত হয় পুরো মেলা প্রাঙ্গণ। জেলার বিভিন্ন উপজেলা এমনকি পার্শ্ববর্তী ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা থেকেও দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে এই মেলায়।  


শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য এখানে বসানো হয় নাগরদোলা,চরকি। এছাড়া বিভিন্ন খেলনার দোকানে হরহামেশাই ভিড় লেগে থাকে শিশুদের। গৃহস্থালী সামগ্রী কিনতে মেলায় আসেন মহিলারা। নিমকি, পিটি, মুড়ি, মুড়কিসহ বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার সামগ্রীর দোকানে বসে মেলাতে।


রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারী) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জিউড় আখড়ার প্রাঙ্গন জুড়ে চলছে বৈশাখী মেলা নানা মানুষের সমাগম। মেলায় ঢুকতেই চোখে পরে নাগর দোলা আর নৌকা রাইড। রয়েছে মুড়ি-মুড়কি,মিঠাই,নিমকি,সন্দেশসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের দোকান। এছাড়া রয়েছে শিশুদের খেলনা,প্রসাধনী সামগ্রী,গৃহস্থালী সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান। প্রায় ৪৫টি দোকান নিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের দেওভোগ আখড়ার মেলা।


কিন্তু এ ঐতিহ্যেবাহী মেলার মূলত কবে থেকে শুরু হয়েছে এর ইতিহাস সম্পর্কে ধারনা নেই কারোই। এমনটাই জানালেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব বাবুল পোদ্দার।


তিনি জানান, এ মেলা আজ থেকে শুরু হয় নাই। আমাগো বাপ-দাদার আমল থাইকাই  নাকি আমাগো বাপ-দাদারা ও তাগো ছোটবেলায় এ মেলা দেখছে। আমরাও এখন দেখতাছি। তাহলেই বুঝেন কতদিন আগে থেকে এ মেলা শুরু হইছে। আসলে এ মেলা কত আগ থেকে শুরু হইছে এটা সঠিকভাবে বলার মত বর্তমানে কেউই আর জীবিত নাই। তবে আমাদের বাপ দাদাগো কাছ থাইকা শুনছি মূলত এ নারায়ণগঞ্জ প্রতিষ্ঠিতই হইছে এ শ্রী শ্রী রাজানারায়ণলক্ষ্মী মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে। বাংলা বছরের শুরুতে হিন্দু ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়ের নতুন হালখাতা খুলতে ঠাকুরের কাছে আর্শীবাদ নিতে আসে।


নারায়ণগঞ্জের ইতিহাস সূত্রে জানা যায়, ১৭৬৬ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা বিকন লাল পান্ডে যিনি  বেণুর ঠাকুর বা লক্ষ্মীনারায়ণ ঠাকুর নামে ও পরিচিত ছিলেন। তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিকট থেকে এ অঞ্চলের মালিকানা গ্রহণের করেন। তিনি প্রভু নারায়ণের সেবার ব্যয়ভার বহনের জন্য একটি দলিলের মাধ্যমে শীতলক্ষা নদীর তীরে অবস্থিত মার্কেটকে দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করেন।


বাংলা ১১৭৩ সালে বিকনলাল পান্ডে রাজালক্ষ্মী নারায়ণ জিউর বিগ্রহ নামে এ মন্দিরের নামকরণ করে (যা বর্তমানে শ্রী শ্রী রাজালক্ষ্মী নারায়ণ আখড়া নামে পরিচিত) । বিকনলাল পান্ডে ছিলেন ব্রিটিশ আমলে জগৎ শেঠের ঢাকা শাখার ম্যানেজার। ম্যানেজার পদে থাকা কালীর ব্রিটিশদের সকল সম্পদের দায়ভার ছিল এ বিকনলালপান্ডের কাছে।

কিন্তু সে সময় ব্রিটিশরা হঠাৎ কোনো এক বিপদের আশঙ্কা পেয়ে ঢাকা ছেড়ে কলকাতায় পাড়ি জমাতে থাকেন। কিন্তু ব্রিটিশদের সম্পদের ভার রয়ে যায় বিকনলাল পান্ডের কাছে। তিনি ব্রিটিশদের এ গচ্ছিত সম্পদগুলোকে লুকিয়ে রাখেন লালবাগ কেল¬ার কোনো একটি অংশে।


পরে যখন বিকনলাল পান্ডে ব্রিটিশরা ফিরে আসার পর তাদের সম্পদ বুঝিয়ে দেন । তাঁর এ সততায় ব্রিটিশ শাসকরা খুশি হয়ে তাঁকে পুরস্কার দিতে চান তাকে। তখন তিনি পুরস্কার হিসেবে বিকনলাল পান্ডে দেওভোগ আখড়া এলাকায় জিউর বিগ্রহ মন্দির স্থাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ব্রিটিশরা তাই তার ইচ্ছানুসারে দেওভোগ আখড়া এলাকার আশপাশের জমিগুলো রাজালক্ষ্মী নারায়ণ নামে দেবোত্তর নামে লিখে দেন।

 

তারপরই প্রতিষ্ঠিত হয় শ্রী শ্রী রাজালক্ষ্মী নারায়ণ জিউর বিগ্রহ মন্দির। তখন এ মন্দিরের নির্মাণের খরচ জোগানের জন্য তৎকালীন খিদিরপুর বর্তমান মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ এবং লক্ষ্মীবাজার পরগনার জমিদারির দায়িত্ব পান বিকনলাল পান্ডে।

 

প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই হিন্দু ব্যবসায়ীরা বাংলা বছরের প্রথম দিন এ মন্দিরের ঠাকুরের পা ছুঁইয়ে হালখাতা খোলা হত। তখন থেকেই নতুন বছরের আগমন জানাতে হালখাতার পাশাপাশি  এই আখড়া মন্দিরের প্রাঙ্গনজুড়ে আয়োজন করা হত মাসব্যাপী বৈশাখী মেলার। মূলত সে সময় থেকেই  দেওভোগ আখড়া রাজালক্ষ্মী নারায়ণ জিউর বিগ্রহ মন্দিরে চলে আসছে মাসব্যাপী মেলার আয়োজন।


স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা যায়, একসময় দেওভোগ আখড়ায় মাসব্যাপী মেলা চলতো কয়েক কি.মি. এলাকাজুড়ে। এখন এ মেলার পরিসর অনেকটা ছোট হয়ে গেছে কিন্তু তবুও প্রতিবছর নববর্ষকে নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে আরো উৎসবমুখর করে তোলে এ বৈশাখী মেলা। স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য, কারুপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত সামগ্রী, হস্তশিল্পজাত ও মৃৎশিল্পজাত সামগ্রীতে মেলা পূর্ণ হয়ে উঠে।


এ মেলা নিয়ে লক্ষ্মী নারায়ণ আখড়ার সিদ্ধাত্মানন্দ বেদান্ত আশ্রমের পুরোহিত সাধন চন্দ্র সরকার জানান, আমরা শুনেছি বিকনলাল ঠাকুর যেদিন তার দেবতার নামে এ মন্দির স্থাপন করেন  সেদিন তিনি তার ভোগস্বত্ত্ব পাওয়া জায়গার নাম নিজ দেবতার নামে ‘নারায়ণগঞ্জ’ রাখেন। সেদিন ছিলো পহেলা বৈশাখ। বাংলা ১১৭৩ সালের প্রথম দিন। এ নামকরন উপলক্ষে সেদিন এ মন্দিরের সামনের বিশাল মাঠে মেলা বসেছিলো।

 

ভীখন লাল ঠাকুর তার দেবতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এখানে বিনা টোলে মেলা বসানোর অনুমতি দেন। তখনকার দিনে মেলার গুরুত্ব ছিলো আলাদা। মানুষ  বৈশাখ মাসে বকেয়া লেনদেন শোধ করতো। গৃহস্থ, ব্যবসায়ীদের হাতে টাকা আসতো। টাকা নিয়ে তারা মেলায় ছুটতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে। 


তিনি বলেন, একসময় খাট-পালং, হাড়ি-পাতিল, দা-বটি, মাছ ধরার জাল থেকে শুরু করে সংসারের ও ব্যবসায়ের প্রয়োজনীয় সবকিছুই পাওয়া যেতো মেলায়। বিনা শুল্কে মেলা বসার সুবিধার কারনে দিনের পর দিন বছরের পর বছর এখানে মেলা বসতে বসতে বাংলা নববর্ষের দিন এখানে মেলা বসার প্রচলন হয়ে যায়। মেলা চলে এক মাস ধরে।

 

তবে অনেকে মনে করেন, এখানে মেলা আরো আগে থেকেই বসতো। সাড়ে তিনশ বা চারশো বছর আগে থেকেই বসতো। কারন নারায়ণগঞ্জের দুইটি কেল্লা আছে যেগুলি চারশ বছরের পুরনো। কেল্লা তৈরীর পিছনে এখানকার ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টিও ছিলো। দেওভোগে মন্দির বেশ পুরনো। ভীখন লাল ঠাকুর সে পুরনো মন্দিরে তার দেবতার প্রতিমা স্থাপন করেন। নারায়ণগঞ্জের নামকরন করেন। আর সে উপলক্ষে মেলার  টোল ফ্রি করে দেন তিনি। 


এই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ৭২ বছর বয়সি বরুণ চক্রবর্তী বলেন, আমি এ মন্দিরের প্রথম বাঙ্গালী পুরোহিত। আমার পূর্বে মহারাজ রাজেন্দ্র প্রসাদ জা ছিলেন এই মন্দিরের দায়িত্বে। তার পূর্বপুরুষরা বিহার থেকে এসেছিলেন। মন্দিরের জন্মলগ্ন  থেকে তার পূর্বপুরুষরা দায়িত্ব পালন করে গেছেন। লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরের খোলা জায়গা এখন আরো নয়টি মন্দির স্থাপিত হয়েছে। ফলে মন্দিরের জায়গা গেছে কমে। তাই মেলার দোকান বসানোর জায়গাও কম।

 

গাদাগাদি হয়ে যায় বলে এখন মেলায় অনেকেই আসতে চায়না। এছাড়া শহরে দোকানপাটও অনেক হয়েছে। মানুষ মেলা থেকে কেনার বদলে দোকান থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনে।  


আরো জানা যায় ,এক সময় এ মেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকগায়ক ও লোকনর্তকদের উপস্থিতি থাকতো। তারা যাত্রা, পালাগান, কবিগান, জারিগান, গম্ভীরা গান, গাজীর গান, আলকাপ গানসহ বিভিন্ন ধরনের লোকসংগীত, বাউল-মারফতি-মুর্শিদী-ভাটিয়ালিসহ আঞ্চলিক গান যাত্রা-নাটকের আয়োজন করা হতো। 


এছাড়া সে সময় মেলার বিশেষ আকর্ষণ ছিল পুতুলনাচ, নাগরদোলা, সার্কাস, বায়োস্কোপ। তবে সেই ঐতিহ্য এখন আর নেই। তবে বৈশাখী মেলার ঐতিহ্যেটা এখনও রয়েছে। প্রতি বছরই এখানে মেলার আয়োজন থাকে।

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর