বুধবার   ১৯ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৫ ১৪৩২   ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

সর্বশেষ:
যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় শিক্ষার্থীর হাত-পা বাঁধার ভিডিও অস্ট্রিয়ায় স্কুলে সন্ত্রাসী হামলায় ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ৯ যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় শিক্ষার্থীর হাত-পা বাঁধার ভিডিও রুশ-যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় দফা আলোচনা শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল গার্ড কী, কখন মোতায়েন করা হয়? যুক্তরাষ্ট্রের টিকা কমিটির সবাইকে বরখাস্ত করলেন কেনেডি ফ্রান্সগামী উড়োজাহাজে চড়ে ইসরাইল ছাড়লেন গ্রেটা থুনবার্গ না ফেরার দেশে চিত্রনায়িকা তানিন সুবাহ সিঙ্গাপুরের ঘাম ঝরিয়েও হার বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
২১৭

সব ধরনের কাজ স্থবির, দিতে হচ্ছে পুনঃদরপত্রও

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২২  

নির্মাণসামগ্রীর দাম লাগামহীন
খরচ বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ, সাধারণ মানুষের অনেকে বাড়িঘরের কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন * ডলার সংকটে এলসি খুলতে পারছেন না এ খাতের অনেক ব্যবসায়ী

দেশে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে নির্মাণসামগ্রীর দাম। বিশেষ করে রডের দাম আকাশছোঁয়া। প্রধান কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে-রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, জাহাজ ভাড়া বেড়ে যাওয়া এবং রডের কাঁচামাল আমদানিতে ডলার সংকট।

ডলারের তীব্র সংকটের কারণে অনেকে এলসি খুলতে পারছেন না। সিমেন্টের কাঁচামাল এবং বিটুমিন আমদানির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। পাশাপাশি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ইট, বালু, সিমেন্টের দাম। একই সঙ্গে জীবনযাত্রার সার্বিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকের মজুরিও এখন দ্বিগুণের কাছাকাছি। সামগ্রিকভাবে নির্মাণ খরচ বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। এমনটিই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ কারণে সরকারি-বেসরকারি প্রকল্প ছাড়াও ব্যক্তিপর্যায়েও নির্মাণকাজ একরকম থমকে গেছে। লোকসানের ঝুঁকি থাকায় সরকারি অনেক প্রকল্পে কাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদার। কাজ না করার ঘোষণা দেওয়ায় বাধ্য হয়ে সরকারের কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে দ্বিতীয় দফা দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

এছাড়া বন্ধ না করলেও বেশির ভাগ কাজ আটকা পড়েছে ধীরগতির ফাঁদে। ঠিকাদাররা বসে আছেন রেট শিডিউল বাড়ানোর অপেক্ষায়। ইতোমধ্যে গণপূর্ত অধিদপ্তর, রেলওয়ে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ বেশকিছু সরকারি সংস্থা রেট শিডিউল পুনর্নির্ধারণ করেছে। কিন্তু এরপরও মূল্যবৃদ্ধির পাগলা ঘোড়ার সঙ্গে ঠিকাদাররা পেরে উঠছেন না। বাজার স্থির না হওয়ায় সাধারণ মানুষও নির্মাণকাজ শুরু করতে সাহস পাচ্ছেন না। টাকার সংকুলান না হওয়ায় কেউ কেউ কাজ বন্ধ রেখেছেন।

এদিকে ফ্ল্যাট প্রকল্প নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ডেভেলপাররা। বিশেষ করে যারা বাজারের এই অস্থিরতার আগে অন্যের জমি নিয়ে ফ্ল্যাট প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি করেছিলেন, তারা এখন লোকসানের মুখে। অনেকে কাজের গতি কমিয়ে দিয়েছেন। এ অবস্থায় বাজার স্থিতিশীল হওয়ার নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত অনেকে নতুন করে প্রকল্প নেওয়া স্থগিত রেখেছেন।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, ‘নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চলমান কাজের গতি অনেকাংশে কমেছে। ঠিকাদারদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়ার পরও তারা খুবই ধীরগতিতে কাজ করছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। ওই প্রকল্পের কিছু ঠিকাদার কাজ চালু অবস্থায় অবশিষ্ট কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এজন্য ওই প্রকল্পে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।’ তিনি জানান, এই প্রকল্পের প্রায় ৫ ভাগ কাজের জন্য নতুন করে দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নিয়োগ দিতে হচ্ছে।’

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) প্রেসিডেন্ট আলমগীর সামসুল আলামিন যুগান্তরকে বলেন, ‘নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির কারণে নির্মাণ খরচ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় আগের চুক্তিগুলো আমাদের বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে। এগুলো করতে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নতুন করে প্রকল্প নেওয়ার সাহস পাচ্ছি না আমরা। সামনের দিনগুলো কেমন যাবে, সেটা নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় আছি।’

নির্মাণ খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে কথা বলে জানা যায়, প্রায় এক বছর ধরে নির্মাণসামগ্রীর বাজার অস্থির। লাফিয়ে লাফিয়ে শুধু দাম বাড়ছেই। অস্থির বাজার, স্বাভাবিক হওয়ার লক্ষণ নেই। এবারের দামবৃদ্ধির সঙ্গে প্রতিবছরের স্বাভাবিক নিয়মের কোনো মিল নেই। একেবারে অভূতপূর্ব। ছয় মাস ধরে নির্মাণসামগ্রীর বাজার একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে ঠেকবে, সেটাও ধারণা করা যাচ্ছে না। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং অন্যান্য নির্মাণসামগ্রীর আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় ইট, বালু, পাথর, রড, সিমেন্ট, রেডি মিক্স, বিটুমিন এবং লোহাজাতীয় সব জিনিসের দাম উপকরণভেদে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডলারের তীব্র সংকট। শতভাগ মার্জিন দিয়েও (আমদানি ব্যয়ের পুরো টাকা পরিশোধ) অনেকে এলসি খুলতে পারছেন না। বড় অনেক ব্যাংকে প্রয়োজনীয় ডলার নেই। কোনো কোনো ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার সরবরাহ করার গ্যারান্টিও চায়। এই যখন অবস্থা, তখন মড়ার ঊপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুই শতাংশ ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। এ কারণে সরকারি কাজের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদারদের সংকট আরও বেড়েছে।

এলসি খোলা নিয়ে ডলার সংকটের বিষয়ে মেসার্স মাইশা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মো. পারভেজ যুগান্তরকে বলেন, ‘ডলার সংকটের কারণে নির্মাণসামগ্রীর কাঁচামাল আমদানির এলসি খোলাও সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যমান অবস্থা চলতে থাকলে কয়েক মাসের মধ্যে কাজ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। সার্বিক বিষয়গুলো সরকারকে ভাবতে হবে। আর যৌক্তিকভাবে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে।’

এদিকে বিদ্যমান বাস্তবতায় দরপত্রের সময় নির্ধারিত দরেই ঠিকাদারদের কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দপ্তর/সংস্থা রেট শিডিউল সমন্বয় না করায় ঠিকাদারদের ক্ষোভ-অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। অনেকে বলেছেন, লাভ তো দূরের কথা, যদি বিদ্যমান রেট শিডিউলে কাজ শেষ করতে হয়, তাহলে জমি বিক্রি করতে হবে। মনে হচ্ছে, কাজ করতে এসে তারা বড় অপরাধ করে ফেলেছেন। তারা বলেন, এভাবে চলতে থাকলে এবং সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের নির্দেশনা দেওয়া না হলে ঠিকাদারদের কাজ গুটিয়ে নিতে হবে। আর এ খাতে যেসব মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে, তারাও ঝুঁকিতে পড়বে। ২০০৭ সালে নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির হার এখনকার চেয়ে অনেক কম হলেও তৎকালীন সরকার চলমান কাজের নির্মাণ উপকরণের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করেছিল। এখনকার দাম বাড়ার হার তো নজিরবিহীন। কিন্তু সরকারের অনেক দপ্তর নির্বিকার। কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সেখ মোহাম্মদ মহসিন যুগান্তরকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের আওতায় ছোট ছোট প্যাকেজে কাজ করা হয়ে থাকে। এ কারণে নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পেলেও কোনো কাজ বন্ধ হয়নি। তবে কাজের গতি কমেছে। ঠিকাদাররা বুঝতে পেরেছেন কাজ করলে তাদের লাভ হবে না।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের দাম ছিল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, যা এখন কিনতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। একইভাবে প্রতি টন রডের দাম ছিল ৬৪ হাজার টাকা, যা বেড়ে হয়েছে ৯২ হাজার ২০০ টাকা। প্রতি টন বিটুমিন ৪৮ হাজার থেকে বেড়ে ৮৫ হাজার টাকা। লিটারপ্রতি ৮০ টাকার ডিজেল কিনতে হচ্ছে ১০৯ টাকায়। ৮ হাজার টাকার ইটের গাড়ি ১২ হাজার ৫০০ টাকা, ২ হাজার ২০০ টাকার বালুর গাড়ি ২ হাজার ৭০০ টাকা। এছাড়া এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রেডিমিক্স, পাথর এবং শ্রমিকের মজুরিও।

সরকার চলতি বছরের নির্মাণ উপকরণের যে রেট প্রকাশ করেছে, বাজারমূল্য এর চেয়েও বেশি। অথচ অনেকের কাজ নেওয়া রয়েছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের রেট শিডিউল অনুযায়ী। আইনি জটিলতা থাকায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এসব সমস্যার সমাধান করতে পারে না। এ বিষয়টি সমাধানে সরকার নির্বাহী ক্ষমতাবলে পরিপত্র জারি করতে পারে। নইলে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন আরও বড় চ্যালেঞ্জে পড়বে। এসব বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে সরকারি সংস্থাগুলো। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে নির্মাণ উপকরণের বাজার স্থির না হওয়ায় সরকারি সংস্থাগুলো সেসব নিয়েও সংশয়ে রয়েছে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার যুগান্তরকে বলেন, নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির কারণে উন্নয়ন কাজের গতি অনেকাংশ কমেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা বিবেচনায় তারা কিছুটা ধীরগতিতেই কাজ করছে। আমাদের পক্ষ থেকে কঠোর তদারকি করা হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, বাজারে নির্মাণসামগ্রীর মূল্য অতিমাত্রায় বেড়েছে। যে কারণে আগে যারা কাজ নিয়েছিল, সেসব ঠিকাদারের কাজ শেষ করতে খুব বেগ পেতে হচ্ছে। সেসব প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের গতি হ্রাস পেয়েছে। তবে সেখানে আমাদের কিছু করার নেই। কেননা ওই বাজারমূল্যে কাজ করতে তারা আমাদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করেছেন। কোনো কারণে দ্রব্যমূল্যে কমলে তারা তো সরকারের কাছ থেকে কম টাকা নিত না। ঠিকাদাররা আমাদের কাছে আসছেন এবং নানা অনুনয়-বিনয়ও করছেন। কিন্তু আমাদের তো কিছু করার নেই।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী বোরহান উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, ‘নির্মাণসামগ্রীর দামবৃদ্ধির প্রভাব অন্যান্য সংস্থার মতো ডিএসসিসিতেও পড়েছে। আগে যেসব দরপত্রের চুক্তি করা হয়েছিল, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো ওই কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু কিছুই করার নেই। তাদের ওই দামেই কাজ করতে হবে। নতুন করে বাজারমূল্য বিবেচনায় রেট শিডিউল করা হয়েছে। এ কারণে নতুন করে যারা কাজ নিচ্ছেন, তাদের তেমন কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। তবে নির্মাণসামগ্রীর বাজার স্থির না হওয়ায় নানা আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম যুগান্তরকে বলেন, ‘নির্মাণসামগ্রীর বাজার অস্থির হয়ে পড়েছে। কদিন পরপর নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ছে। এর প্রভাব উন্নয়ন কাজেও পড়ছে। ঠিকাদাররা কাজ নিতে এবং বাস্তবায়নে শঙ্কাবোধ করছেন। ডিএনসিসির ঠিকাদাররা নির্মাণসমাগ্রীর দাম পুনর্নির্ধারণ করার একটি আবেদন করেছে। বিষয়টি নিয়ে ডিএনসিসি বৈঠক করেছে।’ তিনি জানান, নির্মাণসামগ্রীর বাজারদর বিবেচনায় নিয়ে রেট শিডিউল পুনর্নির্ধারণ করা হতে পারে।

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর