মঙ্গলবার   ০৭ অক্টোবর ২০২৫   আশ্বিন ২১ ১৪৩২   ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৭

সর্বশেষ:
যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় শিক্ষার্থীর হাত-পা বাঁধার ভিডিও অস্ট্রিয়ায় স্কুলে সন্ত্রাসী হামলায় ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ৯ যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় শিক্ষার্থীর হাত-পা বাঁধার ভিডিও রুশ-যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় দফা আলোচনা শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল গার্ড কী, কখন মোতায়েন করা হয়? যুক্তরাষ্ট্রের টিকা কমিটির সবাইকে বরখাস্ত করলেন কেনেডি ফ্রান্সগামী উড়োজাহাজে চড়ে ইসরাইল ছাড়লেন গ্রেটা থুনবার্গ না ফেরার দেশে চিত্রনায়িকা তানিন সুবাহ সিঙ্গাপুরের ঘাম ঝরিয়েও হার বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম

বিধ্বস্ত গাজায় একজন মায়ের বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিনের সংগ্রাম

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২৫  

গাজা আজ একটি কবরস্থান। এক অস্থির দৃশ্য - যেখানে হাজার হাজার মানুষের লাখ লাখ স্বপ্ন একসময়ের প্রাণবন্ত শহরের নিচে চাপা পড়ে আছে। ইসরায়েলের গণহত্যার যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে গেছে। দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

 

তুর্কিভিত্তিক টিআরটি ওয়ার্ল্ড গাজা যুদ্ধের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার (৬ অক্টোবর) চার পর্বের সিরিজের প্রথম পর্বে চার সন্তানের জননী এক ফিলিস্তিনি নারীর গণহত্যার মধ্য দিয়ে জীবনযাত্রার চিত্র তুলে ধরেছে। এটি কেবল জীবনযাত্রার চিত্রই নয় - একটি সংগ্রাম ও বেঁচে থাকার গল্প। মৃত্যু ও ধ্বংস এবং সর্বোপরি স্থিতিস্থাপক প্রতিরোধের গল্প।

 

গল্পটি গাদির আল হাব্বাশের, বয়স ৩৭ বছর। একজন স্বামীহারা এবং চার সন্তানের মা। এটি গাজার আরও হাজার হাজার মায়ের গল্পও হতে পারে - যারা বুলেট এবং বোমার মধ্য দিয়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

গাদির নিজেকে 'একজন শহীদের স্ত্রী' হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। তার স্বামী পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। রায়েদ আল হাব্বাশ, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে একজন ইসরায়েলি স্নাইপারের হাতে নিহত হন। এর ফলে পরিবারের খরচ এখন তাকে একাই বহন করতে হয়।

 

খান ইউনিসে আগেই একটি বিমান হামলায় তাদের বাড়িটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে তারা কিছুটা নিরাপত্তা এবং আশ্রয়ের সন্ধানে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যেতে বাধ্য হন।

 

খান ইউনিসের তাঁবুতে বসে তিনি স্বামীকে হারানর বর্ণনা দেন, 'একদিন, সে আমাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িতে ফিরে গিয়েছিল, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কিছু কাপড় এবং খাবার খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে...। তাঁবুতে ফেরার পথে সে এক ব্যাগ ময়দা এবং কিছু কাপড় বহন করছিল। কিন্তু... (একজন ইসরায়েলি) স্নাইপার তার মাথায় গুলি করে।'

 

'আমাদের একসময় যে বাড়ি ছিল, তার দরজায়ই সে মারা গেল।'

 

তারপর থেকে জীবন এক অবিরাম সংগ্রামে পরিণত হয়েছে - চার সন্তানের জন্য খাবার খুঁজে বের করার চেষ্টা। ছোটটির বয়স মাত্র চার।

 

ইসরায়েল যখন সাহায্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং গাজায় পূর্ণাঙ্গ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, তখন খাবারের পরিমাণ কমে রুটি এবং ডালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হয়। ফলমূল এবং শাকসবজি বিলাসিতা হয়ে ওঠে। বিশুদ্ধ পানির অভাব এবং স্যানিটেশন সুবিধা সীমিত হয়ে যায়।

 

কোন নির্দিষ্ট আয়ের উৎস না থাকায় পরিবারটি ছোট আর্থিক অনুদানের ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছে, যা মোট ৩০০ মার্কিন ডলারের বেশি নয়।

 

 

প্রতিদিন সকালে গাদির তার অবশিষ্ট দুটি আবায়ার (বোরকাজাতীয় পোশাক) মধ্যে একটি পরেন - মাথায় তারার প্যাটার্নের স্কার্ফ। অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়া তাঁবুর ধুলো ঝাড়ু দেন।

 

আশ্রয়স্থলটি জনাকীর্ণ, দিনের বেলায় তাপ আটকে রাখার জন্য টার্প ব্যবহার করা হয় এবং রাতে খুব কম আরামই পাওয়া যায়। বিছানা এবং আসন উভয়ের জন্যই পাতলা আবরণ ব্যবহার করা হয়।

 

তিনি বলছিলেন, 'কোনো গোপনীয়তা নেই। আমরা আমাদের শরীর, আমাদের মর্যাদা, কিছুই রক্ষা করতে পারি না। এই তাঁবুটি জীবনের জন্য উপযুক্ত নয়। শীতকাল এলে বৃষ্টিতে ভেসে যাবে এবং ঠান্ডায় আমারা জমে যাব।'

 

তিনি তার মেয়ের চুল আঁচড়াচ্ছেন এবং তারপর তাঁবুর ঠিক পেছনে সীমিত জিনিসপত্র ও চড়া দামের একটি অস্থায়ী বাজারে যাচ্ছেন।

 

তিনি বলেন, 'আজই বাচ্চাদের জন্য কিছু জিনিস কিনতে গিয়েছিলাম। যেগুলোর দাম আগে ১০ বা ১৫ শেকেল ছিল, এখন এগুলোর দাম ৫০। আমি জানি না আমরা কীভাবে ৫০ শেকেল পাব। টাকা নেই।' (১ মার্কিন ডলার মোটামুটি ৩.৩০ শেকেলের সমান)

 

গ্রীষ্মের শ্বাসরুদ্ধকর তাপ - রাতগুলোও কোন স্বস্তি দিচ্ছে না। গাদির বলেন, 'দিনের তাপে আমরা মারা যাচ্ছি। রাতেও আমরা ঘুমাতে পারি না। ঘেউ ঘেউ করা কুকুর, মাছি, শ্বাসরোধকারী তাপ।'

 

 

দুপুর নাগাদ ক্যাম্পটি প্রচণ্ড গরমে ভরে ওঠে। ছেঁড়া তাঁবুর ভেতরে গাদির তার পরিবারের জন্য সেদিনের একমাত্র খাবার তৈরি করছিলেন। কাঠের টুকরো এবং যা কিছু তিনি পান, তা দিয়েই আগুনে ফুটন্ত এক হাঁড়ি মসুর ডাল বসালেন।

 

তাদের দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার আসে কাছের একটি কমিউনিটি রান্নাঘর থেকে। কিন্তু ইসরায়েল সাহায্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে, অনেক দিনই এমন আসে, যেদিন কমিউনিটি রান্নাঘর কাজ করতে পারে না। তখন রান্না করার মতো কিছুই থাকে না।

 

আজ সেই দিনগুলোর মধ্যে একটি। গাদির যখন ধীরে ধীরে ডাল নাড়ছেন, তখন তিনি নিজেকে এবং বাচ্চাদের মনে করিয়ে দিচ্ছেন, 'এটাই দিনের একমাত্র খাবার।' কিন্তু খাওয়ার সময় এখনো কয়েক ঘণ্টা বাকি...।

 

বাচ্চারা ভাগ্যবান যে সারাদিন এক প্যাকেট বিস্কুট বা এক টুকরো রুটি খুঁজে পায়। তিনি বলছিলেন, 'নাস্তা নেই, দুপুরের খাবার নেই। শুধু এইটা (সন্ধ্যায়)...হয়তো রাতে ঘুমানোর আগে এক টুকরো রুটি।'

 

পরিবারটি আলু, মাংস এবং চিনিযুক্ত চা খেতে চায়। কিন্তু এগুলো নাগালের বাইরে। তিনি বলেন, 'এক কেজি মাংসের দাম ৭০ শেকেল। এমনকি আলুর দামও অনেক বেশি।'

 

তার ছোট মেয়ে, মাত্র চার বছর বয়সী সুয়াদ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। পাতলা বিছানায় কুঁকড়ে যাওয়া মেয়েটির দিকে ইশারা করে গাদির বলেন, 'আমি তার জন্য ওষুধও কিনতে পারব না।'

 

তিনি বলেন, 'যদি তাদের বাবা বেঁচে থাকতেন, তাহলে তিনি তাদের যত্ন নিতেন। কিন্তু এখন... আমি জানি না কী করব।'

 

দুই দিন আগে তাঁবুর কাছে গোলাগুলি হয়েছে। একটি টুকরো ছিঁড়ে বাচ্চারা যেখানে ঘুমাচ্ছে, তার ঠিক উপরে পড়েছিল। তিনি বলেন, 'একমাত্র আল্লাহই তাদের রক্ষা করেছেন।'

 

১৪ বছর বয়সী বড় ছেলে বয়সের তুলনায় অনেক বেশি বোঝা বহন করছে। গাদির বলছিলেন, 'সে প্রায়ই প্রার্থনা করে, 'হে আল্লাহ, আমাকে আমার বাবার কাছে নিয়ে যাও, আমাকে শান্তি দাও। একটি শিশুর স্বপ্ন এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকা উচিত - কিন্তু সে কেবল এই জীবন থেকে পালাতে চায়।'

 

শীতকাল আসছে। সামনে কী অপেক্ষা করছে, পরিবারটি তা নিয়ে চিন্তিত। তিনি বলেন, 'আমরা আল্লাহর করুণার জন্য অপেক্ষা করছি... হয়তো কেউ আমাদের সাহায্য করবে, হয়তো কেউ এই শিশুদের যত্ন নেবে।'

 

শিবিরে সন্ধ্যা নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে, গাদির পাতলা মাদুরের মাঝখানে মসুর ডালের পাত্রটি রাখে। বাচ্চারা মাঝারি আকারের পাত্রটির চারপাশে নীরবে জড়ো হয় - তাদের মুখ ধুলো আর তাপে ছেয়ে গেছে। তার মেয়ে তার বাহুতে ফুসকুড়ি আঁচড়ে দেয় আর ফিসফিসিয়ে বলে, 'মা, এটা জ্বলে যাচ্ছে।'

 

 

গাদির মেয়ের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকান। বলেন, 'আমরা ক্লিনিকে যাই এবং তারা আমাদের নিজেদেরই (ওষুধ) কিনতে বলে। কিন্তু কোথা থেকে? আমি টাকা কোথা থেকে পাব?'

 

কথা বলতে বলতে তিনি রুটি টুকরো টুকরো করে পাতলা ডালের মধ্যে ভিজিয়ে রাখেন। সন্তানদের আস্তে আস্তে বললেন, 'খাও, আমার ভালোবাসাগুলো। আমাদের কাছে এটাই সব।'

 

খাবারের চামচগুলো পাত্রের তলা ঘষে ঘষে যা অবশিষ্ট আছে, তা উঠানোর চেষ্টা করে। কেউ কথা বলে না।

 

গাদির বিড়বিড় করে বলেন, 'আলহামদুলিল্লাহ। আমরা প্রতিদিন এটা (আলহামদুলিল্লাহ) বলতে থাকি। আমরা বলি আমরা ধৈর্যশীল। কিন্তু মাঝে মাঝে...।' তিনি ইতস্তত বোধ করেন, তবে বলেন, 'মাঝে মাঝে আমরা বলি, হে আল্লাহ, আমাদের নিয়ে যাও। এই জীবনের চেয়ে এটাই ভালো হতো।'

 

এসব বলতে বলতে তিনি পাত্রটির দিকে তাকান... এখন প্রায় খালি। বলেন, 'বাচ্চারা দাতব্য রান্নাঘর থেকে খাবার পেতে রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে। আর যদি খাবার না থাকে, তারা ক্ষুধার্ত থাকবে...।'

 

বাচ্চাদের জন্য পানি জোগাড় করাও একটা যুদ্ধের মতো মনে হয়। তিনি বলেন, 'আজ কি লাইনটা দেখেছো? মানুষ সবকিছুর জন্য লড়াই করে। রুটির জন্য, পানির জন্য, জ্বালানি কাঠের জন্য। পুরুষরা ধাক্কাধাক্কি করে, নারীরা ধাক্কাধাক্কি করে। একজন নারীর কি শুধু পানির জন্য ভিড়ের মধ্যে নিজেকে পিষে ফেলতে হবে? যুদ্ধ আমাদের এই অবস্থাই করেছে।'

 

তিনি হাঁড়ির ওপর দিয়ে রুটির শেষ টুকরোটা মুছে নেন। শান্তভাবে বলেন, 'হে আল্লাহ, আমাদের মুক্তি দাও। আমরা যা পার করছি, তা পৃথিবীর কেউ অনুভব করে না। আমরা ক্লান্ত, সত্যিই ক্লান্ত।'

 

বাচ্চারা কথা শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আবার ফিসফিস করে বলেন, 'আলহামদুলিল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ আরেকদিনের জন্য...।'

 

 

রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পটি অন্ধকারে ডুবে যায়। বিদ্যুৎ নেই। বাতি নেই। দিনের বেলায় সংগৃহীত ভাঙা কাঠের টুকরো দিয়ে তাঁবুর ধারে কেবল মৃদু আগুন জ্বলছে। বিছানার পাশে বসে একটি পাত্র নাড়াচাড়া করছে, আর বাচ্চারা ফুটন্ত পানিতে চা পাতা গুঁড়ো করছে।

 

 

গাদির আস্তে আস্তে বলেন, 'কাঠের দাম অনেক বেশি। মানুষ যা ফেলে দেয়, যা আগুন জ্বালাতে পারে, আমরা তাই খুঁজি। যাতে বাচ্চারা ঘুমানোর আগে চা খেতে পারে।'

 

সাবধানে কাপগুলো পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় আগুনের আলো তাদের মুখের ওপর দিয়ে নাচছে - রাতের বাতাসে পাতলা বাষ্প উঠে আসছে।

 

তিনি বলেন, 'এটা পুরনো দিনের মতো মনে হচ্ছে। তাঁবুর আগে, বোমা হামলার আগে... রাতে চা মানে ছিল শান্তি, পরিবার।'

 

গাদিরকে বাচ্চারা ধীরে ধীরে চুমুক দেয়। একজন তার কাছে ঝুঁকে পড়ে। সে বলেন, 'মা, আগামীকাল দিনটা কি আরও ভালো হবে?' গাদির আগুনের দিকে তাকিয়ে আছেন। ফিসফিস করে বলেন 'হয়তো'।

 

দিন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঠের টুকরোর আগুন ছাই হয়ে যায়। কাপ ও হাঁড়ি খালি হয়ে যায় এবং অন্ধকার ঘনিয়ে আসে।

 

গাদির বলেন, 'এখন এটাই আমাদের জীবন।' 'কেউ আমাদের দেখতে পায় না। কেউ আমাদের কথা শোনে না। কেবল আল্লাহ।'

 

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর