শুক্রবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১১ ১৪৩২   ০৬ রজব ১৪৪৭

সর্বশেষ:
যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় শিক্ষার্থীর হাত-পা বাঁধার ভিডিও অস্ট্রিয়ায় স্কুলে সন্ত্রাসী হামলায় ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ৯ যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় শিক্ষার্থীর হাত-পা বাঁধার ভিডিও রুশ-যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় দফা আলোচনা শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল গার্ড কী, কখন মোতায়েন করা হয়? যুক্তরাষ্ট্রের টিকা কমিটির সবাইকে বরখাস্ত করলেন কেনেডি ফ্রান্সগামী উড়োজাহাজে চড়ে ইসরাইল ছাড়লেন গ্রেটা থুনবার্গ না ফেরার দেশে চিত্রনায়িকা তানিন সুবাহ সিঙ্গাপুরের ঘাম ঝরিয়েও হার বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
১৩০

বিশ্ব সংস্কৃতিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা

প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০১৯  

পয়লা বৈশাখে চারুকলা ইনস্টিটিউটের মঙ্গল শোভাযাত্রায় যোগ হয়েছে এক নতুন মাত্রা। এখন এটি বিশ্ব সংস্কৃতির অংশ। জাতিসংঘের সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মঙ্গল শোভাযাত্রাকে তাদের ‘রিপ্রেজেনটেটিভ লিস্ট অব ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। ইউনেসকোর স্বীকৃতি লাভের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ বছর সারা দেশেই বৈশাখী উৎসবে মঙ্গল শোভাযাত্রা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই চারুকলার শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা চিত্রশিল্পীদের নিজস্ব প্রয়াসে এ শোভাযাত্রা হয়ে উঠেছে বিশ্বের ঐতিহ্য। আমাদের সংস্কৃতিকে করে তুলেছে ঋদ্ধ।

যেভাবে শুরু মঙ্গল শোভাযাত্রা 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী বলেন, এই মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৯৮৯ সাল থেকে নিয়মিত হয়ে আসছে। তবে ১৯৮৫ সালে যশোরে এটি প্রথম বের হয়, সেখানেও চারুকলার শিক্ষার্থীরা এতে জড়িত ছিলেন। 
চারুকলা অনুষদের ডিন ও শোভাযাত্রা শুরুর অন্যতম উদ্যোক্তা নিসার হোসেন ১৯৮৯ সালেই এখানে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি জানান, ১৯৮৫-৮৬ সালের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্যোক্তা। তিনি জানান, এরা ১৯৮৮ সালের বন্যায় কিছু কাজ করেছিল। সেই সময় তাদের চারুশিল্পী সংসদ সহায়তা করেছিল। শিক্ষকেরা পেছনে ছিলেন, কিন্তু সব কাজ হয়েছে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে। 
শুরুর সেই ঘটনার স্মৃতিচারণা করছিলেন নিসার হোসেন, ‘ওই সময় এরশাদবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে। ওই সময় সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার চেষ্টা করেছিল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। সবার প্রচেষ্টায় তখন এটি বৃহত্তর প্রচেষ্টা হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হলো। সেখানে দুটি বিষয় প্রাধান্য পেল। একটি হচ্ছে, আমাদের যে ঐতিহ্য আছে, সেটি তুলে ধরা। যেখানে ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, একই সময় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থাকার কারণে সেটি একটি ভিন্ন মাত্রা পেল।’
চারুকলার এ শোভাযাত্রাকে শোভিত করার জন্য যে উপাদানগুলো লাগে, সেগুলো শুরু থেকেই নেওয়া হয় দেশের লোকশিল্পের নানা ধরনের খেলনা থেকে। এর বাইরে ঘোড়া, নকশিপাখা, ফুল, প্রজাপতি, মানুষ, প্রকৃতি এগুলো শোভাযাত্রায় স্থান পেতে থাকে। নিসার হোসেনের মতে, ইউনেসকোর স্বীকৃতি দেওয়ার মূল কারণ যে এটা শুধু একটা সম্প্রদায় বিশেষের নয়, এটা গোটা দেশের মানুষের, সারা পৃথিবীর মানুষের। এখানে মানবতার বিরাট একটা ব্যাপার আছে।

ইউনেসকোর স্বীকৃতি 
ইউনেসকো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মূল্যায়ন করেছে অন্যায় ও অকল্যাণের বিরুদ্ধে সত্য, ন্যায় ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের মানুষের সাহসী সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে। ধর্মবর্ণজাতিলিঙ্গ-নির্বিশেষে দেশের সব মানুষের একই চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের বিষয়টিও ইউনেসকোর এই স্বীকৃতি লাভের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। ইউনেসকো ২০০৩ সালে সারা বিশ্বের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’, অর্থাৎ মনোগত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলো সংরক্ষণের জন্য একটি সমঝোতা চুক্তি অনুমোদন করে। এর আওতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মনোগত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। পয়লা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো ঐতিহ্যবাহী মনোগত সাংস্কৃতিক উপাদান বিশ্বের নানা প্রান্তের নানা জাতিগোষ্ঠীর ভেতরেই রয়েছে। চুক্তিতে সই করা দেশগুলো ইউনেসকোর স্বীকৃতির জন্য আবেদন করলে সংস্থাটি যাচাই-বাছাই করে সেই বিষয়গুলো বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে থাকে। ইউনেসকোর এ স্বীকৃতির ফলে ওই সাংস্কৃতিক উপাদান ওই দেশের নিজস্ব বলে বিশ্ব দরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ এই স্বীকৃতির ফলে মেনে নেওয়া হয় ওই বিশেষ সাংস্কৃতিক উপাদানের জন্মস্থান হলো নির্দিষ্ট দেশটি।

নিয়ম অনুসারে, চুক্তিতে সই করা দেশগুলো প্রতিবছর একটি সাংস্কৃতিক উপাদানের স্বীকৃতির জন্য ইউনেসকোর কাছে আবেদন করতে পারে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পয়লা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার স্বীকৃতি চেয়ে ইউনেসকোতে আবেদন করে। স্বীকৃতি দেওয়ার মূল কাজটি করে ‘ইন্টার গভর্নমেন্টাল কমিটি ফর দ্য সেফগার্ডিং অব দ্য ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’। কয়েক ধাপ পর্যালোচনার পর গত বছরের ৩০ নভেম্বর ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় অনুষ্ঠিত কমিটির একাদশ সম্মেলনে মঙ্গল শোভাযাত্রাকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্বের মনোগত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপাদান হিসেবে অভিষিক্ত হলো।

ফাইল ছবি

শোভাযাত্রা হয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া
মঙ্গল শোভাযাত্রার আরেকটি বিশেষ দিক হচ্ছে, এটি আয়োজন করার ক্ষেত্রে কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেওয়া হয় না। নিসার হোসেন বলেন, ‘চারুকলার শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা চিত্রশিল্পীদের অনেকে তাঁদের চিত্রকর্ম বিক্রি করে যে অর্থ পান, তা-ই মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজনের মূল উৎস। সবার অর্থে এটা হচ্ছে, কারও একক অর্থে হচ্ছে না। ইউনেসকো আমাদের যেসব বিষয় উৎসাহিত করেছ, তার মধ্যে এটিও একটি যে আমরা কারও একক অনুদান নিয়ে এই অনুষ্ঠান করি না।’

আগে শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত মুখোশ বা নানা উপকরণ নিলামে তোলা হতো। সেখান থেকে যে অর্থ পাওয়া যেত, তা পরবর্তী সময়ে শোভাযাত্রায় খরচ করা হতো। নিসার হোসেন বলেন, ‘পরে ভাবা হলো যে আমরা যদি এই কাজ এক মাস আগে থেকেই শুরু করি, তাহলে কাজটা আরও সহজ হয়ে যায়। সেই থেকে এক মাস আগেই শিল্পকর্ম বিক্রি শুরু। এখনো তা চলছে।’ 
এ বিষয়ে আবুল বারক আলভী বলেন, ‘আমরা চেয়েছি আমাদের শিক্ষার্থীরা এতে যুক্ত থাক। এটা তাদের নিজস্ব। তাই এখানে বাণিজ্যিক কোনো প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দিলে হয়তো আরও জাঁকজমক করা যেত শোভাযাত্রা। কিন্তু তখন সেসব প্রতিষ্ঠানের ব্যানার, নাম বেশি প্রকাশ পেত, তখন আর মূল বিষয়টি মানুষ বুঝত না যে এটা চারুকলার নিজস্ব অনুষ্ঠান। তাই শিক্ষার্থীদের পারিশ্রমিক থেকেই এর অর্থ সংগ্রহ করা হয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক অনেক বছর ধরেই মঙ্গল শোভাযাত্রার স্লোগান ঠিক করে দেন। তিনি বলেন, ‘কবে শুরু করেছি তা এখন মনে করতে পারছি না। এবার এই শোভাযাত্রার স্লোগান ঠিক করা হয়েছে “আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর”।’ 
সত্য ও সুন্দরের প্রত্যাশায় সেই শোভাযাত্রাকে নিয়ে তুমুল প্রস্তুতি চারুকলার জয়নুল গ্যালারিতে। গত বুধবার সেখানে গিয়ে চোখে পড়ল রং মাখানো তুলির নাড়াচাড়ায় ব্যস্ত বেশ কিছু হাত। আঁচড় পড়ছে মুখোশে, সরায়। কারও হাতে তৈরি হচ্ছে বাঘ, হাতি, ঘোড়া, নৌকা, পাখি, মুরগি, দুই মাথাওয়ালা হাঁস কত-কী! শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কাজে হাত লাগাতে এসেছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও। কেউ কেউ সরা, মুখোশ, চিত্রকর্মসহ কিছু কিছু শিল্পকর্ম বিক্রি করছিলেন। এই শোভাযাত্রার খরচ আসে শিল্পকর্ম বিক্রি থেকে পাওয়া অর্থে। চারুকলার অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হামিদ ভুঁইয়া নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি জানালেন, ১৯ মার্চ থেকে তাঁরা মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কিছু কিছু শিল্পকর্ম শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত হবে। আর কিছু কিছু চিত্রকর্ম বিক্রি করা হচ্ছে। সেখান থেকেই আসবে শোভাযাত্রা আয়োজনের খরচ। 
প্রাচ্য কলা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফারিয়া মিমও বিভিন্ন উপকরণে রং করছিলেন। জানালেন, তিনি যখন এখানে পড়তেন না তখনো এগুলো তৈরির কাজ দেখতে আসতেন। এবার নিজেই করছেন সেই কাজ। বললেন, ‘এবার নিজেই করছি নিজের ভালো লাগার কাজটি। বড়দেরও উৎসাহ পাচ্ছি। তাই অনেক আনন্দ লাগছে।’

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর