বৃহস্পতিবার   ১৫ মে ২০২৫   চৈত্র ৩১ ১৪৩২   ১৭ জ্বিলকদ ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
২২১

এইচআইভি এইডস ঝুঁকিতে নারীরা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০১৯  

দুই মেয়ে, স্বামী নিয়ে কামরাঙ্গীরচরে রেহানার সংসার। সব মেয়ের মতো ও একটি সুখী পরিবারের স্বপ্ন দেখেছিল। দুই মেয়েকে নিজের মনের মতো গড়ে তুলতে চেয়েছিল।

পাশাপাশি সংসারের সচ্ছলতার জন্য নিজেও কিছু একটা করার চেষ্টা করত। কারণ রিকশাচালক স্বামীর একার আয়ে চারজন মানুষের খরচ চালিয়ে মেয়েদের পড়াশোনা করানো কষ্টকর হয়ে উঠছিল।

রেহানা বলেন, মাঝে মাঝেই টাকা দিতে বাহানা করত। এটা-ওটা বলে বুঝ দিত। সরল মনে বিশ্বাস করতাম। তখনও বুঝতে পারিনি আমার স্বামী শিরায় মাদক নেয়। আমি তার দ্বিতীয় স্ত্রী।

আমাকে বিয়ে করার আগে স্বামী একটা বিয়ে করেছিল। প্রথম স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। আমার গরিব বাবা-মা ভাবেন মেয়ে বড় হয়েছে। মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে। অভিভাবকের পছন্দের পাত্রের সঙ্গে বিয়ে হল আমার। বিয়ের বছর খানেকের মধ্যে মেয়ের জন্ম হল। মাঝেমধ্যেই স্বামী বাড়ি ফিরত না। জিজ্ঞেস করলে এটা-ওটা বলত।

স্বামী আমাকে মিথ্যা কথা বলবে এটা মনেও আসত না। বরং ভাবতাম, মানুষটা আমাদের জন্য কত কষ্ট করছে। তার পাশে আমি না দাঁড়ালে কে দাঁড়াবে? আমাদের সামনে তাকে কোনোদিন শিরায় মাদক নিতে দেখিনি। দিনে দিনে তার শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। নিজে নিজে ডাক্তার দেখায়। তার রক্তে এইচআইভি পজেটিভ ধরা পড়ে ২০০৪ সালে।

এই সত্যিটিও আমার কাছে গোপন করে। মরণব্যাধি এই রোগ নিয়ে দিনের পর দিন আমার সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বজায় রাখছে। কনডম ব্যবহার করে নাই।

আমি দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হই। কোলজুড়ে আসে দ্বিতীয় মেয়ে। দ্বিতীয় মেয়ের জন্মের পর আমার শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ২০০৮ সালে আমার রক্ত পরীক্ষা করা হয়। রক্ত পরীক্ষায় আমার এইচআইভি পজেটিভ ধরা পড়ে। তখনই জানতে পারলাম স্বামীর কাছ থেকে উপহার স্বরূপ আমি মরণব্যাধি এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছি।

আমার স্বামী তার প্রতি বিশ্বাসের এই মূল্য আমাকে দিল। দুই মেয়ের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। ওদের রক্তে এইচআইভি ভাইরাস পাওয়া যায়নি। কিন্তু সমাজ যদি জানতে পারে তাদের বাবা-মা এইচআইভি ভাইরাস বহন করছে।

তখন আমার মেয়েরা কোথায় যাবে? তারা কি স্বাভাবিক মানুষের মতো সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে!

সন্ধ্যায় ঢাকার পান্থপথের ফুটপাতে প্রায়ই দশ-এগারো বছরের দুজন মেয়েশিশু বসে থাকে নইলে হাঁটাহাঁটি করে। বেলা পর্যন্ত ওরা ফুটপাতে ঘুমায়। কথায় কথায় তাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ফুটপাতে থাক কেন? কি খাও?

প্রথমটির উত্তর না পাওয়া গেলেও দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিল বেটারা টাকা দেয়। ওদের নিরাপত্তার জন্য কাঁঠালবাগান বাজারে সাজেদা ফাউন্ডেশনে রাতে থাকার প্রস্তাব দেয়া হয়।

কিন্তু তারা দুজনেই যেতে রাজি হয় না। রাতে রাস্তায় থাকা নিরাপদ নয় বললেও তাদের চোখেমুখে নিরুত্তাপ ভাব ফুটে ওঠে। ওদের আচরণে বোঝা যায়, রাস্তায় থাকতেই ওরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

কখনও ফার্মগেট, কখনও পান্থপথ অথবা অন্য কোনো এলাকার ফুটপাতই ওদের ঠিকানা। এতটুকু বয়সেই ওরা অনিরাপদ পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। অনিরাপদ জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে।

ওরা জানে না অরক্ষিত যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে এইচআইভি/এইডস এ আক্রান্ত হতে পারে। নিরাপদ শারীরিক সম্পর্কের জন্য কনডম ব্যবহারের কথা প্রচারণা করা হলেও ওরা এ বিষয়ে অবগত নয়। এ কারণে বিদেশ ফেরত স্বামী, শিরায় মাদক নেয়া ব্যক্তির মাধ্যমে ফুটপাত, হোটেলের যৌনকর্মী অথবা তাদের স্ত্রীরাও এইচআইভি /এইডস এ আক্রান্ত হচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় এইডস বিষয়ক কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি নজরুল ইসলাম বলেন, হোটেলসহ বিভিন্ন স্থানে অরক্ষিত যৌন সম্পর্কের ঘটনা ঘটছে।

সেগুলো আমাদের কার্যক্রমের আওতায় নেই। সেখানে কনডম সরবরাহ কর্মসূচি নিতে হবে। এমনকি বিদেশ থেকে যারা দেশে আসছেন তারা যে এইচআইভি সংক্রমিত তা অনেকেই জানেন না।

বিদেশ থেকে দেশে ফেরা লোকদের এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত করার প্রকল্প হাতে নেয়া যেতে পারে। এর ফলে অনেক নারীর জীবন বেঁচে যাবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সীর মতে, ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এখানে এইচআইভি শনাক্ত করা হয়েছে ৬২ ব্যক্তির। তাদের মধ্যে নারী ১৫, পুরুষ ৪৭ এবং ২ জন ছেলেশিশু রয়েছে।

এখানে সি ডি ফোর ও ভাইরাল লোড দুটি পরীক্ষা করা হয়। এইচআইভি পজিটিভ কোনো নারী গর্ভবতী হলে তাদের গর্ভের সন্তানের এইচআইভি সংক্রমণের হার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ হওয়ার আশংকা থাকে।

সেজন্য আর্লি ইনফেন্ট ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা করান হয়। বাচ্চার বয়স ছয় সপ্তাহ হলে বলে দেয়া যায় সে এইচআইভি পজিটিভ কিনা। বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে যে শ্রমিকরা কাজ করছেন প্রতি বছর তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এইচআইভি পজিটিভ ধরা পড়লেই তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরিবার, সমাজের কাছে তারা তথ্য গোপন করে।

এখানে কোনো মেশিনারিজ বা প্রোগ্রাম নেই তা দিয়ে তাদের দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো। এর ফলে এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্ত শ্রমিকদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তারা সব জেনেও স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করেন। তাদের সন্তান হয়। তার মাধ্যমে স্ত্রী, এমনকি সন্তানও এইচআইভি পজিটিভ হয়।

এইচআইভি পজিটিভ রোগীর মধ্যে অভিবাসী শ্রমিক প্রায় ৫০ শতাংশ। যাদের মাধ্যমে স্ত্রী-সন্তানও এইচআইভি পজিটিভ হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে আগত এই প্রবাসী শ্রমিকদের যদি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হতো তাহলে অনেক জীবন বেঁচে যেত।

কিন্তু এখানে দুটি সমস্যা রয়েছে। একটি সামাজিক আরেকটি মানবাধিকারের। এর ফলে অনুমতিবিহীনভাবে কাউকে এইচআইভি পরীক্ষা করানো যাচ্ছে না।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের উপপরিচালক ও এইডস/ এসটিডি প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. বেলাল হোসেনের মতে, সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইডস সংক্রমণের হার .০১ শতাংশের মতো। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ যৌনকর্মী, হিজড়া এবং যারা শিরার মাধ্যমে মাদক গ্রহণ করে তাদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার ৩.৯ শতাংশের মতো।

ঝুঁকিপূর্ণ জনসংখ্যার মধ্যে শিরার মাধ্যমে মাদক গ্রহণকারীদের এইচআইভি সংক্রমণের হার বেশি। ২০১৭ সালে নতুন করে এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৬৫ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ১২৫ জন। জীবিত রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৬৬২ জন। তার মধ্যে পুরুষ ৩ হাজার ৯৫ এবং নারী ১ হাজার ৫৬৭ জন।

সরকার এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত হতে পারে এমন ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় এইডস কন্ট্রোল প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশের ২৩টি জেলার ২৫টি জেলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালে বিনামূল্যে এইচআইভি পরীক্ষা ও কাউন্সেলিং (এইচটিসি) করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

এরমধ্যে ৭টি হাসপাতালে এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিনামূল্যে সার্বিক চিকিৎসাসেবা ও এন্টিরেট্টোভাইরাল থেরাপি (এআরটি) প্রদান করা হচ্ছে। ইউনিসেফের সহায়তায় ‘প্রিভেনশন অব মাদার টু চাইল্ড ট্রান্সমিশন’ এর কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এর লক্ষ্য এইচআইভি সংক্রমিত মা থেকে সন্তান যেন এইচআইভি সংক্রমিত না হয়।

কারণ একজন এইচআইভি পজিটিভ গর্ভবতী থেকে তার সন্তানের এইচআইভি সংক্রমিত হওয়ার হার ২৫ থেকে ২৮ শতাংশ। আমাদের দেশে এইচআইভি পজিটিভ মা থেকে সন্তানের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার ১.০৯ শতাংশ।

২০১৩ থেকে এ পর্যন্ত ৯১ জন এইচআইভি পজিটিভ মা ৯২ জন শিশুর জন্ম দিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন মা যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। জন্মগত ত্রুটি ও কম ওজনের শিশু ও অন্যান্য কারণে ৩ জন শিশু মারা গেছে। ৮৮ জন সুস্থ শিশু এবং ১ জন শিশু এইচআইভি পজিটিভ।

কেয়ার বাংলাদেশ’র জিএফপিডব্লিউআইডি প্রোজেক্ট হেলথ ইউনিটের টিম লিডার আবু তাহেরের মতে, এ বছর নারায়ণগঞ্জে শিরার মাধ্যমে মাদক গ্রহণ করে এমন ২১৬ ব্যক্তির এইচআইভি এইডসের জীবাণু রয়েছে কিনা জানার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে ৪৩ জন পুরুষ ও একজন নারী এইচআইভি/এইডস শনাক্ত হয়েছে।

২০১৫ সালে গ্লোবাল ফান্ডের অর্থ সহায়তা বন্ধ হওয়ায় এই কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৮ সালে এই কেন্দ্র আবার চালু হয়েছে। তিন বছরে এইচআইভি সংক্রমণের হারও বেড়েছে। ৩০ হাজার শিরার মাধ্যমে মাদক নেয়।

ভাসমান যারা শিরার মাধ্যমে মাদক নেয় সরকার তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার ব্যবস্থা করলে তাদের মাধ্যমে এইচআইভি/এইডস সংক্রমণের ঝুঁকিটা কমে যেত। কারণ একই সিরিঞ্জে কয়েকজন মাদক গ্রহণ করায় এইচআইভি সংক্রমণের হার বাড়ছে। এর ফলে নারী-পুরুষ উভয়েই এইচআইভি ঝুঁকিতে রয়েছে।

অন্যদিকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যারা কাজ করতে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত অভিবাসীরা এইচআইভি/এইডসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের মাধ্যমে স্ত্রীরা এইচআইভিতে সংক্রমিত হচ্ছেন। আক্রান্ত মা থেকে গর্ভের সন্তান সংক্রমিত হচ্ছে। এর ফলে নারীরা এইচআইভি ঝুঁকিতে রয়েছে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর একটি অপারেশনাল পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এমসিএইচ-এর আলোকে নয়টি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

এরমধ্যে রয়েছে মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু কমান, যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে যে রোগ ছড়ায় ইত্যাদি। ১০ থেকে ১৯ বছরের কিশোর-কিশোরীর প্রজনন স্বাস্থ্যের আলোকে তথ্য, সেবা এবং নির্দেশ এই তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় স্ট্যাডিজি ২০১৭-২০৩০ এর আলোকে চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

এরমধ্যে কৈশোরবান্ধব যৌনস্বাস্থ্য, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। এ জন্য বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে যৌথভাবে ঢাকা শহরের ভাসমান ঝুঁকির্পূণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে এইচআইভি/এইডস সম্পর্কিত সচেতনতামূলক বার্তা স্বাস্থ্যসেবীদের মাধ্যমে পৌঁছানো হচ্ছে।

এছাড়া পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর থেকে এইচআইভি শনাক্ত করার কোনো প্রোগ্রাম নেই। তবে এইচআইভি পজিটিভ মাকে তার সন্তানকে বুকের দুধ না খাওয়ানো অথবা এক মাসের বেশি না খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়। কারণ তিনি এইচআইভি পজিটিভ হওয়ায় তার সন্তান এইচআইভি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

বুকের দুধের মাধ্যমে তার সন্তানের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে মাল্টিসেক্টরাল ভিত্তিতে কাজ করে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা তৈরি করলে এইচআইভি ঝুঁকির মাত্রা কমে যাবে জানালেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের এমসিএইচ এর সহকারী পরিচালক মো. মনজুর হোসেন।

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর