সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৫ ১৪৩১   ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
৩৭৬

ইসলামে আইনের শাসন ও সুবিচার

প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২  

সামাজিক অস্থিরতা আর অবক্ষয় যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এর মূল কারণ হচ্ছে ন্যায়বিচারের অভাব। কেননা দেখা যায় বড় ধরনের অপরাধ করার পরও অপরাধীকে একটি মহল সার্বিক সহযোগিতা করে থাকে।

অথচ পবিত্র কুরআনের শিক্ষা হচ্ছে-ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে যদি নিজ পিতা-মাতার বিরুদ্ধেও সাক্ষ্য দিতে হয় তা যেন দেওয়া হয়। আর আমরা আজ করছি উলটো, অপরাধী নিজের আত্মীয়স্বজন হলে তাকে কীভাবে রক্ষা করা যায় সেই চেষ্টায় রত হই। আজ যারা সমাজ ও দেশে নানা অপকর্ম করছে তারা তো কোনো না কোনো পরিবারেরই সদস্য।

অপরাধীদের পরিবার যদি প্রথমে সোচ্চার হতো তাহলে অপরাধের মাত্রা এমনিতেই অনেক কমে যেত কিন্তু আমরা তা করছি না। এ জন্যই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ইসলাম অত্যধিক গুরুত্বারোপ করেছে। আল্লাহ পাক হচ্ছেন সবচেয়ে বড় ন্যায়বিচারক। ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা যেহেতু আল্লাহরই কাজ, তাই ইসলামি-রাষ্ট্রের প্রধান ও শাসনকার্যে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সবাইকে আল্লাহপাক এ নির্দেশই প্রদান করেন যে, তারা যেন ন্যায়পরায়ণতা, দক্ষতা এবং নিরপেক্ষতার সঙ্গে নিজেদের কর্তব্য পালন করেন।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে যারা ইমান এনেছ! আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সাক্ষ্যদাতা হিসাবে তোমরা দৃঢ়ভাবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী হও, এমনকি সেই সাক্ষ্য তোমাদের নিজেদের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে গেলেও। যার সম্পর্কে সাক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে, সে ধনী হোক বা গরিব, আল্লাহ উভয়েরই সর্বোত্তম অভিভাবক। অতএব, তোমরা যাতে ন্যায়বিচার করতে সক্ষম হও, সে জন্য তোমরা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ কর না আর তোমরা যদি পেঁচানো কথা বল অথবা সত্য এড়িয়ে যাও, তবে মনে রেখ, তোমরা যা কর সে বিষয়ে নিশ্চয় আল্লাহ পুরোপুরি অবগত আছেন’ (সূরা নিসা : ১৩৫)।

এ আয়াতে শুধু সুবিচারের কথাই স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়নি, বরং সুবিচার প্রতিষ্ঠার অপরিহার্য শর্তাবলিও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, শুধু সুবিচার প্রতিষ্ঠাই নয়, বরং সুবিচারের পতাকাকেও সমুন্নত রাখতে হবে। যেখানেই ন্যায়বিচার ভূলুণ্ঠিত হতে দেখা যাবে, সেখানে তা সমুন্নত করাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। মামলায় কোনো পক্ষের হার-জিতের জন্য সাক্ষ্য নয়, বরং শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যই সাক্ষ্য দিতে হবে। কেননা, সত্য সাক্ষ্য ব্যতিরেকে সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। সত্য সাক্ষ্য দিতে গিয়ে যদি নিজেদের স্বার্থে আঘাত লাগে অথবা নিজ পিতা-মাতার বা নিকটাত্মীয় পরিজনের প্রতিকূলেও যদি যায়, তবুও সত্য সাক্ষ্য দিতে হবে। ন্যায়বিচারের উচ্চ মানদণ্ড ছাড়া সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়। তাই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে একমাত্র সত্যকেই মাধ্যম বানাতে হবে।

ইসলাম একটি শান্তিপ্রিয় ধর্ম এবং এর শিক্ষা অত্যন্ত উচ্চাঙ্গের। ইসলামের শিক্ষাগুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো সমাজ ও দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। আল্লাহপাকের পক্ষ থেকে পৃথিবীতে এ পর্যন্ত যত নবি (আ.)-এর আগমন ঘটেছে, তাদের প্রত্যেককে আল্লাহতায়ালা বিশেষ যেসব দায়িত্ব দিয়েছেন তার মধ্যে প্রধান দায়িত্ব হলো ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। আল্লাহতায়ালার নির্দেশ অনুযায়ী সব নবিই (আ.) দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করেছেন এবং এক্ষেত্রে সফলও হয়েছেন।

ইসলামে ন্যায়বিচারের শিক্ষা এমন এক অনিন্দ্য সুন্দর শিক্ষা, যা ন্যায়পরায়ণ প্রত্যেক অমুসলিমও শুনে প্রশংসা না করে পারে না। পৃথিবীতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করাই মহানবি (সা.)-এর আগমনের উদ্দেশ্য এবং তিনি নিজ আমল দ্বারা সর্বত্র ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষমও হয়েছিলেন। আল্লাহতায়ালার অনুপম শিক্ষা এবং ইসলামের সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির বহিঃপ্রকাশ তখনই সম্ভব হবে, যখন প্রত্যেক মুসলমান আল্লাহপাকের প্রতিটি আদেশের ওপর আমল করবে।

ন্যায়বিচারের আদর্শ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নিজেদের ঘর, সমাজ, আপন-পর, এমনকি শত্রু-মিত্র নির্বিশেষে সবার সঙ্গে ন্যায়সুলভ ব্যবহারের মাধ্যমেই আমরা মহানবি (সা.)-এর প্রকৃত অনুসারী বলে দাবি করতে পারি। সর্বক্ষেত্রে আমরা যখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব, তখনই আমরা আল্লাহর প্রেমিকও হতে পারব আর খায়রে উম্মত হিসাবে নিজদের প্রকাশ করতে পারব এবং আল্লাহর দরবারে মুমিন হিসাবে বিবেচিত হব।

সত্য ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার জন্য আমাদের যদি নিজ আত্মীয়স্বজন ও বয়োজ্যেষ্ঠদের অসন্তুষ্টিরও সম্মুখীন হতে হয়, তারপরও ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। আজকে ন্যায়বিচারের বড়ই অভাব আর এ কারণেই সর্বত্র বিশৃঙ্খলা, সামাজিক অস্থিরতা আর অরাজকতা দেখা দিচ্ছে। সবাইকে আল্লাহতায়ালা ন্যায়বিচার করার তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল