বৃহস্পতিবার   ২০ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৬ ১৪৩২   ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

সর্বশেষ:
যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় শিক্ষার্থীর হাত-পা বাঁধার ভিডিও অস্ট্রিয়ায় স্কুলে সন্ত্রাসী হামলায় ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ৯ যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় শিক্ষার্থীর হাত-পা বাঁধার ভিডিও রুশ-যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় দফা আলোচনা শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল গার্ড কী, কখন মোতায়েন করা হয়? যুক্তরাষ্ট্রের টিকা কমিটির সবাইকে বরখাস্ত করলেন কেনেডি ফ্রান্সগামী উড়োজাহাজে চড়ে ইসরাইল ছাড়লেন গ্রেটা থুনবার্গ না ফেরার দেশে চিত্রনায়িকা তানিন সুবাহ সিঙ্গাপুরের ঘাম ঝরিয়েও হার বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
৯১২

গোয়েন্দা নির্ভর সিনেমা; কলকাতার শেষ ভরসা

প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

হাজার ভাঙা গড়ার মধ্য দিয়ে গেছে টলিউড। পশ্চিমবঙ্গে আশির দশক পর্যন্ত সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল ৭৫০ এর মত। অধিকাংশ প্রেক্ষাগৃহ গড়ে উঠেছিল উত্তম-সূচিত্রাকে কেন্দ্র করে। নায়কের অকাল মৃত্যু এবং নায়িকার স্বেচ্ছা নির্বাসনে একটা বিশাল শূন্যতা নেমে আসে পশ্চিমবঙ্গের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে। 

 

এরপরেই মূলত হল টিকিয়ে রাখার জন্য একের পর এক সস্তাদরের সিনেমা তৈরী হয়েছে, যেগুলোতে সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেনের মত পরিচালকদের নির্মিত, কিংবা উত্তম কুমার, সৌমিত্র বন্দোপাধ্যায়, জহর রায়, ভানু বন্দোপাধ্যায় অভিনীত সিনেমার নান্দনিকতা, শিল্পমানের লেজমাত্র ছিল না। এই সময়টায় প্রধান নায়ক হিসেবে ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ, চিরঞ্জিত, তাপস পালের মত অভিনেতারা। তাদের সময়ে বাংলা সিনেমা পুরনো গৌরব হারাতে শুরু করে। 

তারপরেও অন্তত ইন্ডাস্ট্রি টিকিয়ে রাখার সুবাদে গৎবাঁধা গল্প মেনে নিচ্ছিল সকলেই। পাশাপাশি ঋতুপর্ণ ঘোষ, গৌতম ঘোষ বা অপর্না সেনের মত পরিচালকরা এসে ইন্টেলেকচুয়াল সিনেমা নির্মাণ শুরু করেন। ফলে মোটা দাগে বাংলা সিনেমায় দুইটি শ্রেণীবিভাগ গড়ে ওঠে, একটি ‘কমার্শিয়াল’ অন্যটি ‘আর্ট’ ফিল্ম। যা পৃথিবীর আর কোন ইন্ডাস্ট্রিতেই এতো প্রকটভাবে দেখা যায়নি।

 

তবে এসব করেও বাংলা সিনেমাকে টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে ওঠে ক্রমশই। প্রযুক্তির উৎকর্ষতা ও মানুষের জীবনযাত্রার আমূল পরিবর্তনের কারণে, এখন আর সিনেমা বাঙালির প্রধান বিনোদনের মাধ্যম নয়। 

এমন পরিস্থিতিতে গোটা পশ্চিমবঙ্গে সিনেমা হলের সংখ্যা ৭৫০ থেকে কমে ২৫০-এ এসে দাঁড়িয়েছে। গত চার বছরের হিসেব মতে, ২০১৪ থেকে ২০১৫তে প্রতি বছরে টলিউড লস করেছে ৭০ কোটি টাকা করে। ২০১৬ সালে লসের পরিমাণ ১০০ কোটি ছাড়িয়েছে। এর প্রধান কারণ হল, পশ্চিমবঙ্গে বাংলা সিনেমা তার বাজার হারিয়েছে। তার ওপর আবার টিকে থাকার জন্য আজকাল তাদের একই সঙ্গে হলিউড, বলিউড ও দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়। 

টলিউডে একেকটা কমার্শিয়াল সিনেমার বাজেট গড়ে ২ থেকে ৬ কোটি, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পশ্চিমবঙ্গে সিনেমার বাজার হলো বেশী হলে দেড় কোটি টাকার মত। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিগ বাজেটের কোন সিনেমাই লাভের মুখ দেখতে পায় না। তবে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে লস কিছুটা কমিয়ে আনা গেলেও দিনশেষে খুব কম বিগ বাজেটের সিনেমাই মাইনাস থেকে প্লাসের ঘরে আসতে পারে। 

এরকম একটা সময় এসে ২০১৭ সালে টলিউড তাক লাগিয়ে দিচ্ছে নতুন ঘরানার এক ধরণের সিনেমা তৈরী করে। ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছে কৌশিক গাঙ্গুলি, সৃজিত মুখার্জী, অঞ্জন দত্ত, অনীক দত্ত, মৈনাক ভৌমিক, শিবপ্রসাদ-নন্দিনী রায়, অরিন্দম শীল এদের মত কিছু পরিচালক, যাদের পরিচালিত সিনেমাগুলো ঠিক কমার্শিয়ালও নয়, আবার অফ ট্র্যাকও নয়। 

 

এদের সিনেমায় গানবাজনা, ক্ষেত্রবিশেষে নাচানাচি, আবার কাহিনীতে কিছু চিন্তা উদ্রেককারী কন্টেন্টও থাকে। এবং সবচেয়ে বড় কথা, এইসব সিনেমার স্ক্রিপ্ট দক্ষিণী সিনেমার কপি নয়। হয় অরিজিনাল স্ক্রিপ্ট, নয়ত সাহিত্য থেকে অনুপ্রাণিত।

বাংলা সিনেমার ঘোর দুর্দিনেও শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত বাঙালি দর্শককে টার্গেট অডিয়েন্স বানিয়ে বেশ ভালোই জাঁকিয়ে বসেছে। ‘ওপেনটি বায়োস্কোপ’, ‘ফড়িং’, ‘বাইশে শ্রাবণ’, ‘চতুষ্কোণ’, ‘বেডরুম’, ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’, ‘কানেকশন’, ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’, ‘আশ্চর্য প্রদীপ’, ‘মুক্তধারা’, ‘বেলাশেষে’, ‘প্রাক্তন’, ‘শব্দ’, ‘বাস্তুসাপ’, ‘আবর্ত’, ‘রাজকাহিনী’ প্রভৃতি গত কয়েক বছরে ভালো বাংলা সিনেমার নাম বলে শেষ করা যাবে না। 

এখানে ভালো বলতে বক্স অফিসে কেমন সাড়া ফেলেছে তা নির্দেশ করা হচ্ছে না। গল্পটি অদ্ভুত কিনা আর সাধারণ মধ্যবিত্ত শিক্ষিত দর্শকের ভালো লেগেছে কিনা, তা বোঝানো হচ্ছে। ইন্টেলেকচুয়াল আর পপুলার ঘরানার মাঝামাঝি অবস্থানরত এইসব সিনেমা নিয়মিত ভারত ও তার বাইরের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসব থেকে সম্মানজনক পুরস্কারও নিয়ে আসছে। 

তবে সাম্প্রতিক সময়ে টলিউডের জীয়নকাঠি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে গোয়েন্দা কাহিনী নির্ভর সিনেমাগুলো। সন্দীপ রায় তো ফেলুদাকে নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছিলেনই, পাশাপাশি ২০০৮ সালে অঞ্জন দত্ত চিন্তা করেন বাঙালির সর্বাধিক প্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশকে নিয়ে একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার। 

 

সে ফ্র্যাঞ্চাইজি এতটাই সফল হয়েছে যে, অঞ্জন দত্ত একাই গত আট বছরে পাঁচটা ব্যোমকেশ করেছেন। তার দেখাদেখি অরিন্দম শীলও এখন তাকে নিয়ে আরেকটা ফ্র্যাঞ্চাইজি খুলে বসেছেন, যেখান থেকে দুইটি সিনেমা রিলিজ পেয়ে গেছে। এর পাশাপাশি টুকটাক আরো কিছু সিঙ্গেল ব্যোমকেশ হয়েছে, যার একটি নির্মাণ করেছিলেন স্বয়ং ঋতুপর্ণ ঘোষও।

এদিকে অনেকগুলো গোয়েন্দা চরিত্র সাম্প্রতিক সময়ে বড় পর্দায় এসেছে, শীর্ষেন্দুর শবর, সুনীলের কাকাবাবু, নীহাররঞ্জন গুপ্তের কিরীটি, সমরেশ মজুমদারের অর্জুন, সমরেশ বসুর গোগোল, মোস্তফা সিরাজীর কর্ণেল। এমনকি খুব শিগগির হয়ত সুচিত্রা ভট্টাচার্যের মিতিন মাসীকেও দেখা যাবে পর্দায়। তবে এখানেই শেষ নয়, গোয়েন্দা বা থ্রিলার ঘরানার অরিজিনাল স্ক্রিপ্ট নিয়েও সিনেমা হচ্ছে, ‘যেমন সাহেব বিবি গোলাম’, ‘উড়োচিঠি’, ‘চোরাবালি’, ‘ষড়রিপু’ প্রভৃতি। 

সবমিলিয়ে টলিউডে এখন গোয়েন্দা কাহিনীর মৌসুম চলছে। সারা বছর আর সব সিনেমা ফ্লপ হলেও, এই ধরণের কাহিনী নির্ভর সিনেমা ঠিকই লাভের মুখ দেখছে। উদাহরণস্বরূপ গত পুজোয় মুক্তি পাওয়া অঞ্জন দত্তের ‘ব্যোমকেশ’ ও ‘চিড়িয়াখানা’ সিনেমাটির কথা বলা যায়। মোট পাঁচটা সিনেমা রিলিজ পেয়েছিল সেই পুজোয়। তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে কম বাজেটের। 

তাছাড়া এই সিনেমা নিয়ে কলকাতায় বিন্দুমাত্র প্রচার প্রচারণা হয়নি। রাস্তায় কোন পোস্টার পর্যন্ত লাগানো হয়নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেছে, বাঙালি স্ব-পরিবারে পুজোর ছুটিতে আর কোন সিনেমা দেখতে যাক আর নাই যাক ‘ব্যোমকেশ’ ও ‘চিড়িয়াখানা’ দেখতে ঠিকই দেখেছে। 
ক্রিস্টমাস ও স্কুল ফাইনালের বন্ধে রিলিজ পাওয়া ‘ব্যোমকেশ’ পর্ব ও ‘ডাবল ফেলুদা’ দুটোই রমরমা ব্যবসা করেছে। এবার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কলকাতায় গোয়েন্দা কাহিনী নির্ভর সিনেমার এই জয়যাত্রার পেছনে কারণ কী? 

এক অংশের মতে, এ হলো বাঙালি শিক্ষিত মধ্যবিত্তের চিন্তাধারার পরিবর্তন। তারা প্রেম ভালোবাসা কিংবা অ্যাকশন নির্ভর সিনেমা দেখতে আগ্রহী নয়। তারা দেখতে চায় এমন সিনেমা যাতে একাধারে মানবিক, মাথা খাটানোর সুযোগ ও কিছুটা সাহিত্যের কদর রয়েছে। 

আর এই সব চাহিদাই বেশ ভালোভাবে পূরণ করতে পারে ব্যোমকেশ, ফেলুদা বা শবরের সিনেমাগুলো। বিশ্লেষকদের মধ্যে আরেক অংশের মনোভাব আবার কিছুটা আক্রমনাত্মক। তাদের ভাষ্য, ভারতবর্ষে বাঙালিদের অবস্থা বর্তমানে খুবই শোচনীয়। ব্যবসা, চাকরি, শিক্ষা সকল ক্ষেত্রেই অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের কাছে মার খেয়ে যাচ্ছে বাঙালিরা। 

 

আর তার ফলে বাঙালিরা একধরণের ফ্রাস্ট্রেশন বা ডিপ্রেশনে ভোগে, যা থেকে তারা সাময়িক মুক্তি পায় গোয়েন্দা কাহিনীনির্ভর সিনেমাগুলো দেখে। কেননা একমাত্র এইসব সিনেমাতেই বাঙালিকে সংস্কৃতি ও আচার আচরণের দিক থেকে তাদের প্রকৃত রূপে চিত্রায়িত করা হয় পাশাপাশি বাঙালিকে বুদ্ধিমান জাতি হিসেবেও উপস্থাপিত করা হয়।

তবে অন্তরালের কারণ যাই-ই হোক না কেন এ কথা অনস্বীকার্য যে, টলিউডের বর্তমান দুরাবস্থার দিনে একমাত্র আশার প্রদীপ, একমাত্র ট্রাম্পকার্ড গোয়েন্দা কাহিনী নির্ভর সিনেমাগুলোই। 

কিন্তু কথায় আছে, অতিভোজনের ফলে অমৃতেও অরুচি চলে আসে। তাই অদূর ভবিষ্যতে বাঙালি যদি গোয়েন্দা কাহিনীর ওপর থেকেও মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তখন টলিউডের সর্বনাশের ষোলকলা পূর্ণ হবে। 

আর সম্ভবত সে কারণেই তারা সময় থাকতেই বাংলাদেশের বাজার দখল করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে! কলকাতায় এখন প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে গোয়েন্দা নির্ভর সিনেমা। যা হলে আর ঘরে বসে দর্শকদের সিনেমায় দেখতে অনুপ্রাণিত করছে। যার দরুন কলকাতার দর্শক এখন দিন দিন সিনেমার প্রতি অনেকটা নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। মূলত এই ধরণের সিনেমার মধ্যে এক ধরণের কাহিনী বিদ্যামান, যা মানুষকে সিনেমাটির শেষ অবধি দেখার জন্য আগ্রহ তৈরি করছে। যার ফলে কলকাতার হল বিমুখীরা এখন হলে ফিরেছে। এদিকে সিনেমার কলাকুশলীরাও এই ধরণের সিনেমা তৈরি করে লাভজনক ব্যবসা করছে। ফলে তারা গোয়েন্দা নির্ভর সিনেমা বানাতে অনেকটা সন্তোষবোধ করছে।

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল