সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৫ ১৪৩১   ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

ভোর হতেই ফুলের সুবাসে ভরে ওঠে নগরী

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১২:১৭ পিএম, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বুধবার

 ফুল মানেই সৌন্দর্য বিশুদ্ধতা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতিক। এই সৌন্দর্যময় ফুল পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে । ফেব্রুয়ারি মাস এলেই যেন ফুলের কদর অনেক বেড়ে যায়। একদিকে যেমন ভালোবাসা দিবস অন্যদিকে তেমন শ্রদ্ধার । এই মাসটিতে রয়েছে ভালোবাসা দিবস, পহেলা ফাল্গুন ও ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর বিশেষ দিন। ফুল ব্যবসায়ীদের জন্য এই মাসটি সিজন হিসেবে আখ্যা। সারা বছরের চেয়ে এ মাসে বিয়ে-শাদিও বেশি হয় থাকে। নারায়ণগঞ্জের বেশ কয়েক জায়গায় ফুলের চাষ হয় তা পুরো দেশেই তাঁর খ্যাতি রয়েছে।

 

ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে ফুল ব্যবসায়ীরা  বিশেষ প্রস্ততি নিচ্ছে । তবে বারোমাসি ফুলের ব্যবসা হয় নগরীতে এমন একটি জমজমাট স্থান রয়েছে। ভোর হতেই ফুলের সুবাসে ভরে ওঠে নগরী। নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের গ্রিনিচ ব্যাংক মোড় থেকে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব পর্যন্ত পুরো এলাকায় বাহারী ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানীরা।

 

ফুলের এ ব্যবসা জমজমাট থাকে ভোর হতে সকাল ১০টা পর্যন্ত। এখানে অনেক দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ফুল বেচাকেনা করতে আসে । এই ফুলের বাজারে গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, চেরি, গ্লাডিয়াস, গ্যালারী, ঝাড়বেরা, আকন্ত, ডালিয়া, গেলট, চন্দ্রমনিকা, বেলি, চায়না বেলি, জিপসি ও লোহরসহ বিভিন্ন ধরণের ফুল পাওয়া যায় ।

 

বিভিন্ন ফুল পাইকারি ধরে বিক্রি হয়। একশ গোলাপ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, এক হাজার গাঁদা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, একশ রজনীগন্ধার দাম ৮০০ থেকে একহাজার টাকা, একটা আকন্দ ফুলের মালা ১০টাকা, একশ চেরির দাম ২৫০টাকা, গ্যালারী একশ’র দাম ৭০০ টাকা।

ফুল ব্যবসায়ী মো. আফাজউদ্দিন এর সাথে কথা হলে তিনি যুগের চিন্তা ২৪কে জানান, আমি প্রায় ৩০ বছর যাবৎ এই ফুলের ব্যবসা করি । আমরা এই ফুল ঢাকা শাহাবাগ থেকে আনি। শাহাবাগে আসে যশোর, চুয়াডাঙ্গা, রংপুর ও ময়মনসিংহ সহ বিভিন্ন জেলা থেকে। পরে আমরা শাহাবাগ থেকে এনে এখানে পাইকারি ধরে বিক্রি করি।

 

আজ আমি ১৪ হাজার টাকার ফুল এনেছি লাগলে আরো আনব ফোন করলে তারা পাঠিয়ে দেয়। এখানে অনেক বড় লোকেরাও গাড়ি নিয়ে এসে আমাদের কাছ থেকে ফুল নিয়ে যায় । অন্যান্য মাসের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে ফুলের চাহিদা অনেক বেশি তাই আমরা এই মাসটিকে আমাদের সিজন বলে আখ্যা দিয়ে থাকি ।

 

বন্দরের একফুল ব্যবসায়ী মো.সালাউদ্দিন জানান, ‘বন্দর সাবদী এলাকায় আমার নিজের ফুলে বাগান আছে । আমি বারো মাসী ফুলের ব্যবসা করি । যখন যে ফুলের সিজন তখন সে ফুলের চাষ করি। ফুলের বাজার কখন খারাপ আর কখন ভালো তা বলা যায়না তবে এ মাসে একটু ভালো থাকে ।’

ঢাকা কেরানীগঞ্জ থেকে আসা ফুল ব্যবসায়ী বিশ্বগড়ানী জানান, ‘আমি কেরানীগঞ্জ কাওতাইল এলাকা থেকে এখানে আসি। অনেক দিন যাবৎ এখানে ফুলের ব্যবসা করছি । আমি শুধু আকন্দ ফুল আমাদের এলাকা থেকে তুলে এখানে এনে বেচি । আমার বেচাকেনা সোমবারে বেশি হয় কারণ ওইদিন শিবের মাথায় জল ঢালা হয় তাই ফুল লাগে ।’

ফুল কিনতে যতিন্দ্র চন্দ্র দাস জানান, ‘আমার বাড়ী বাবুরাইল প্রতিদিন সকাল ৭টায় হাঁটতে হাঁটতে এই ফুলের বাজারে চলে আসি এখান থেকে ফুল নিয়ে পূজা করি। আমার সব সময়ই ফুল লাগে, আমার এখানে আরো অনেকে এখানে ফুল কিনতে আসে। সকাল ভোরে আসলে এখানে টাটকা ও ভালো ভালো ফুল পাওয়া যায় ।’