শুক্রবার   ০৭ নভেম্বর ২০২৫   কার্তিক ২৩ ১৪৩২   ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

হকারমুক্ত নগরীর ফুটপাত

নিউজ ডেস্ক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৭:০২ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ বুধবার

পুরো ফুটপাত জুড়ে হকারের রাজত্ব, ফুটপাত ঘেষে দাড়িয়ে আছে রিকশা ও অন্যান্য যানবাহন; সড়কে যানজট, ভোগান্তিতে নগরবাসী। নগরীর প্রত্যেকটি ছোট-বড় সড়কের ফুটপাতের অলিখিত ‘মালিক’ যেন ভ্রাম্যমাণ হকাররা। সংক্ষেপে এই ছিল নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়ক ও ফুটপাতের চিত্র। শহরের ফুটপাতকে হকারমুক্ত করার জন্য পূর্বে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনটাই ফলপ্রসু হয়নি। এই হকার ইস্যুকে কেন্দ্র করেই গত বছর সংঘাত-সংঘর্ষের মতো ঘটনাও ঘটে। কিন্তু নগরবাসী মুক্তি পায়নি হকার নামের দূর্ভোগ থেকে। কিন্তু পূর্বের সেই চিত্র পাল্টে গেছে। সব ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে হকারমুক্ত নগরীর ফুটপাত। জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের ঘোষণার বাস্তবায়ন হয়েছে। হকারমুক্ত ফুটপাতে হাটতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে সাধারণ নগরবাসী। পুলিশ সুপারের এই পদক্ষেপের জন্য তাকে সাধুবাদও জানিয়েছে নগরবাসী।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ও দুপুরে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু সড়কের দুই পাশে হকাররা নেই। হকারদের দখলে থাকা ফুটপাত এখন হকারমুক্ত। যেখানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হকাররা অবৈধ পন্থায় ফুটপাত দখলে রাখে সেখানে বেলা গড়িয়ে যাওয়ার পরও কোন হকারের দেখতে পাওয়া যায় না। অথচ পনেরো দিন পূর্বেও শহরের ভিন্ন চিত্র ছিল। পুরো ফুটপাত জুড়ে ছিল হকারের রাজত্ব। সাধারণ পথচারিরা ফুটপাত দিয়ে হাটতে না পেরে মূল রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে দেখা যেতো। কিন্তু মাত্র পনেরো দিনের ব্যবধানে সে চিত্র পাল্টে গেছে।

এ নিয়ে কয়েকজন পথচারি ও মার্কেটের দোকানদারের সাথে কথা হয়। শরীফ সুপার মার্কেটের চশমার দোকান মালিক আরিফ বলেন, এই কাজটা ভালোই হইছে। আগে ৫ মিনিটের ফুটপাত আধা ঘন্টায় পার করা যেত না। অনেকে সড়কে নেমে হাটতো। দিন নাই রাত নাই মাসের ত্রিশ দিন একই ভোগান্তি লেগেই থাকতো। আর ২নং গেইট থেকে চাষাড়া পর্যন্ত দেখলাম পুরা খালি এখন আর মানুষের রাস্তা দিয়া হাটতে হয় না।

‘আজকের ডিল’ নামে একটি অনলাইন সার্ভিসের ডেলিভারিম্যান জামান বলেন, আমার সারা দিনে এই রাস্তা দিয়ে প্রায় ৭-১০ আসা যাওয়া হয়। কিন্তু এখন হেটে শান্তি পাচ্ছি। পুরো ফুটপাতের নকশাই বদলে গেছে। জনসাধারণের ভোগান্তি কমেছে। এর জন্য পুলিশ সুপারকে সাধুবাদ জানাই।


নারায়নগঞ্জ কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আলিফ বলেন, কোন কাজের একটা দিক ভালো থাকে একটি খারাপ দিকও থাকে। ফুটপাতের হকার উচ্ছেদ হয়েছে এতে ভালো দিকটা হলো এখন ফুটপাতটা একটু মুক্ত হয়েছে। পথচারিদের ভোগান্তি কমেছে। কিন্তু খারাপ দিকটা হলো যে হকারদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পন্থা ছিল এই ফুটপাত। এখন তাদের আয়ের রাস্থা বন্ধ হয়েছে। এমন হাজারো পরিবার আছে যাদের অভিভাবকের আয় রোজগার এই হকারি করে হতো। হকার উচ্ছেদ নয় পুনর্বাসন দাবি করেন এই শিক্ষার্থী।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) নগরীর ফুটপাত হকারমুক্ত করে নগরবাসীর অবাধে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে ঘোষণা দেন জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ, বিপিএম, পিপিএম। চাষাড়া শহীদ মিনারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। এজন্য এলাকার সাংসদ ও সাধারণ মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন এসপি। পুলিশ সুপারের এই ঘোষণার পরদিন থেকেই চাষাড়া চত্বর হকারমুক্ত রাখা হয়। এখন এর প্রভাব পড়েছে পুরো বঙ্গবন্ধু সড়কজুড়ে।