শনিবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১২ ১৪৩২   ০৭ রজব ১৪৪৭

বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন সোমা সাঈদ

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৪৮ এএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার


 
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের পর পবিত্র কোরআন ছুঁয়ে নিউইয়র্ক স্টেট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে ১৮ ডিসেম্বর অপরাহ্নে শপথ গ্রহণ করলেন বাংলাদেশী আমেরিকান সোমা সাঈদ। এর মধ্যদিয়ে বহুজাতিক সমাজে প্রথম বাংলাদেশীই নন,প্রথম মুসলমান নারী হিসেবে সোমা ইতিহাস রচনা করলেন। নিজের মেধা এবং কর্মনিষ্ঠার মাধ্যমে বিচারপতি সোমা একইসাথে বাংলাদেশকেও অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেলেন বলে শপথ গ্রহণের প্রাক্কালে শুভেচ্ছা বক্তব্যে মন্তব্য করেছেন স্টেট সিনেটর জন ল্যু, সিনেটর টবি স্ট্যাভিস্কি, এ্যাসেম্বলীম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন, কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট ডোনাভন রিচার্ডস এবং কোর্ট অব আপিলের প্রধান বিচারপতি রোওয়ান উইলসন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাবউদ্দিন সাঈদ এবং টাঙ্গাইলের একটি গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আমিনা বেগম সাঈদের কন্যা সোমা ১২ বছর বয়সে মা-বাবার সাথে ইমিগ্র্যান্ট হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর থেকেই নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে বাস করছেন। নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলে লেখাপড়ার পর সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি করেন সোমা সাঈদ। এরপর ইউনিয়ন ইউনিভার্সিটির আলবেনী ল’ স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে জেডি করেছেন। টানা দেড় যুগের অধিক সময় এটর্নী হিসেবে পেশাগত জীবন-যাপনের পাশাপাশি কম্যুনিটির নানা কর্মকান্ডে জড়িত থেকে সোমা নিজেকে বিশেষ এক অবস্থানে উন্নীত করতে সক্ষম হন এবং সেই সিঁড়ি বেয়েই ২০২১ সালের নির্বাচনে ডেমক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়নে কুইন্স কাউন্টিতে নিউইয়র্ক সিটি সিভিল কোর্টের বিচারক হিসেবে বিজয়ী হয়েছিলেন।


এরপরের বছর তাকে ম্যানহাটানে অবস্থিত নিউইয়র্ক কাউন্টি ক্রিমিনাল কোর্টে বিচারপতির দায়িত্ব প্রদান করা হয় এবং তিনি তা বিচক্ষণতার সাথে ২০২৩ সাল নাগাদ পালন করেছেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে পুনরায় কুইন্স কাউন্টি সিভিল কোর্টে বিচারপতি হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। সর্বশেষ গত ৪ নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়নে নিউইয়র্ক স্টেট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন।

সোমার শপথ গ্রহণের ঘটনাকে ঐতিহাসিক হিসেবে অভিহিত করে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম এবং মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিক ফজল আনসারী।

অনুষ্ঠানে ছিলেন ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এ্যাট লার্জ এটর্নী মঈন চৌধুরী। তিনি এ সংবাদদাতার কাছে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশকালে উচ্ছ্বসিত চিত্তে বলেন, ডেমক্র্যাটিক পার্টি থেকে মনোনয়ন লাভে সক্ষম হওয়ায় সোমাকে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের নির্বাচনে অবতীর্ণ হওয়ার প্রয়োজন হয়নি। সরাসরি মূল নির্বাচনে আড়াই লক্ষাধিক ভোটে জয়ী হয়েছেন। সোমার এ বিজয় বাংলাদেশী আমেরিকানদের বিজয়। ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিকক্ট লিডার ড. দীলিপ নাথ এবং অভিবাসন আইনে বিশেষভাবে পারদর্শী এটর্নী অশোক কর্মকার পৃথক পৃথক ভাবে এ সংবাদদাতার কাছে নিজের অনুভ’তি প্রকাশকালে বলেছেন, সামার এমন উত্থানে কম্যুনিটির নতুন প্রজন্ম অনুপ্রাণীত হবে এবং তারাও নিজ মেধাগুণে আরো অনেক বড় কিছু অর্জনে সক্ষম হবেন।

ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এটর্নী রোন্ডা বিন্ডা এবং আয়েশা দেওয়ানের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্যের বাণী উচ্চারণ করেছে ছোট্টমনি জাহিন সাঈদ। অনুষ্ঠানে কম্যুনিটি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিত্বকারি ব্যক্তিগণের মধ্যে ছিলেন মূলধারার রাজনীতিক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য গিয়াস আহমেদ, ব্রঙ্কস কম্যুনিটি বোর্ডে ইমিগ্রেশন বিষয়ক চেয়ারপার্সন শাহজাহান শেখ, শিল্পপতি ও সমাজকর্মী হাসানুজ্জামান হাসান, , জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের ইমাম শামসী আলী, কম্যুনিটি বোর্ড মেম্বার আহসান হাবিব ।