বৃহস্পতিবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১০ ১৪৩২   ০৫ রজব ১৪৪৭

দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী মার্কিন অর্থনীতি

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:০৯ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার

চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বড় চমক দেখা দিয়েছে। বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে এসে দেশটির বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

 

এমন প্রবণতা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বাণিজ্য বিভাগ তৃতীয় প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধির প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের মধ্যে মার্কিন মোট দেশজ উৎপাদন, যা বিস্তৃত মার্কিন অর্থনীতিতে উৎপাদিত সমস্ত পণ্য ও পরিষেবার সমষ্টি, ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ডাও জোন্সের জরিপে অংশগ্রহণকারী অর্থনীতিবিদরা ৩ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধির আশা করছেন।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রবৃদ্ধির এই হার প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। এর আগে বাজার বিশ্লেষকরা ৩ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। সরকারি শাটডাউনের কারণে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করতে প্রায় দুই মাস দেরি হয়েছে।

 

ব্যুরো অব ইকোনমিক অ্যানালাইসিসের তথ্য অনুযায়ী, মূলত ভোক্তা ব্যয়, রফতানি এবং সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির ফলে এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। তবে এই সময়ে বিনিয়োগ কিছুটা কমেছে। প্রযুক্তি খাতে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামো তৈরিতে বিপুল বিনিয়োগকেও এই অগ্রগতির অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 

তবে প্রবৃদ্ধির খবরের পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি নিয়েও নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অভ্যন্তরীণ ক্রয়ের মূল্য সূচক ৩ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে ছিল মাত্র ২ শতাংশ। মুদ্রাস্ফীতির এই উল্লম্ফন যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ মুদ্রানীতি বা সুদের হার নির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে।

 

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই প্রবৃদ্ধিকে তার ‘জিনিয়াস’ শুল্কনীতির সাফল্য হিসেবে দাবি করেছেন। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি একে ‘অর্থনৈতিক স্বর্ণযুগ’ বলে অভিহিত করেন এবং মুদ্রাস্ফীতি নেই বলে দাবি করেন। যদিও মন্ত্রণালয়ের তথ্যে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির চিত্র স্পষ্ট দেখা গেছে।

 

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার কিছুটা দুর্বল হওয়ার লক্ষণ দেখা দিয়েছিল, যার ফলে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ গত তিনটি সভায় সুদের হার হ্রাস করেছে। এমন পরিস্থিতিতে এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির তথ্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রবৃদ্ধির এই প্রাথমিক হিসাব ২০২৬ সালের শুরুর দিকে হালনাগাদ করা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। যদিও প্রতিবেদনটি অর্থনীতির উপর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছে, তবুও বাজারগুলি খুব কম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে কারণ তথ্যটি অনেক পুরোনো।