প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছেই
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:০৬ এএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছেই। তার অর্থনৈতিক নেতৃত্ব নিয়ে আমেরিকানদের অসন্তোষ আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। নিউজ/এনপিআর/মেরিস্টের এক নতুন জরিপে দেখা গেছে, অর্থনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে ট্রাম্প তার রাজনৈতিক জীবনের সর্বনিম্ন অনুমোদন রেটিং পেয়েছেন। বৈদেশিক নেতৃত্বেও মানুষ আস্থা হারিয়েছে। ব্যর্থ হয়েছে আরব বিশ্বের অস্থিরতা কমাতে। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের এখনও আশার আলো নেই।
জরিপ অনুযায়ী, ৫৭ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন, ট্রাম্প অর্থনীতি ভালোভাবে পরিচালনা করছেন না। বিপরীতে মাত্র ৩৬ শতাংশ বলেছেন, তিনি ভালো কাজ করছেন, যা তার দুই মেয়াদের মধ্যে সর্বনিম্ন। একসময় যেটিকে ট্রাম্পের অন্যতম বড় শক্তি হিসেবে দেখা হতো, সেই অর্থনীতিই এখন তার জন্য দুর্বলতায় পরিণত হয়েছে।
অর্থনীতিতে এই অসন্তোষের প্রভাব পড়েছে ট্রাম্পের সামগ্রিক জনপ্রিয়তায়ও। জরিপে দেখা যায়, মাত্র ৩৮ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভালো কাজ করছেন, যা তার প্রথম মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে সর্বনিম্ন হার।
ম্যারিস্ট ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক ওপিনিয়নের পরিচালক লি মিরিংফ বলেন, ‘এটি তার জন্য বড় সমস্যা। মানুষের মনে যখন ক্রয়ক্ষমতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তখন এর দায় শেষ পর্যন্ত দেশের প্রধান নির্বাহীর ওপরই পড়ে।’
জরিপে আরও উঠে এসেছে, প্রতি ১০ জনে ৭ জন আমেরিকান জানিয়েছেন তাদের এলাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় অসহনীয়। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক রিপাবলিকান ভোটার এবং তিন-চতুর্থাংশ স্বাধীন ভোটারও রয়েছেন। মাত্র ৩ জন মনে করেন জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয়, যা জুন মাসের তুলনায় ২৫ শতাংশ পয়েন্ট কম।
দ্য কুক পলিটিক্যাল রিপোর্টের সম্পাদক অ্যামি ওয়াল্টার বলেন, ‘এই পরিস্থিতি যত দীর্ঘ হবে, এই পরিসংখ্যান ঘুরিয়ে আনা তত কঠিন হবে। একসময় এটি স্বয়ংসম্পূর্ণ এক চক্রে পরিণত হয়, মানুষ আস্থা হারায় এবং ধরে নেয়, দাম কেবল বাড়তেই থাকবে।’
উল্লেখ্য, অর্থনৈতিক অসন্তোষ ট্রাম্পের পূর্বসূরি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকেও ভুগিয়েছিল। ২০২২ সালের শুরুতে যখন মুদ্রাস্ফীতি চরমে পৌঁছায়, তখন বাইডেনের অর্থনৈতিক অনুমোদন নেমে আসে ৩৬ শতাংশে। মেয়াদের শেষ দিকে কিছুটা উন্নতি হলেও সেই ক্ষতি পুরোপুরি পুষিয়ে ওঠেনি।
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ভোটারদের অর্থনৈতিক অসন্তোষকে পুঁজি করে ফের হোয়াইট হাউসে ফেরেন। তবে এখন সেই একই অসন্তোষ আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে উঠতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
অর্থনৈতিক ইস্যুতে নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ডেমোক্র্যাটরা রিপাবলিকানদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে। জরিপে ৪০ শতাংশ ভোটার মনে করেন, ডেমোক্র্যাটরা অর্থনীতি ভালোভাবে সামলাতে পারবে, যেখানে রিপাবলিকানদের পক্ষে রয়েছে ৩৫ শতাংশ। স্বাধীন ভোটারদের মধ্যে ডেমোক্র্যাটরা ১১ পয়েন্টে এগিয়ে, যদিও ত্রুটির মার্জিন ৬.২ শতাংশ।
