প্রতারকের ৭ বছরের সাজা মওকুফ করলেন ট্রাম্প, কিন্তু কেন?
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ১২:৫১ পিএম, ২ ডিসেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার
তিনি গত ১৪ নভেম্বর কারাগারে যান এবং বুধবার কমিউটেশনের মাধ্যমে তার সাজা কমানো হয় বলে জানিয়েছে ব্যুরো অফ প্রিজনস এবং হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা। প্রাইভেট ইকুইটি এক্সিকিউটিভ ডেভিড জেন্টিলের সাত বছরের সাজা মওকুফ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। মাত্র দুই সপ্তাহ কারাবাসের পরেই সাত বছরের সাজা থেকে মুক্ত হয়েছেন প্রায় ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের প্রতারণা করা এই ব্যক্তি।
৫৯ বছর বয়সী ডেভিড জেন্টিল একসময় নিউ ইয়র্কের ন্যাসাউ কাউন্টির বাসিন্দা ছিলেন। তিনি গত ১৪ নভেম্বর কারাগারে যান এবং বুধবার কমিউটেশনের মাধ্যমে তার সাজা কমানো হয় বলে জানিয়েছে ব্যুরো অফ প্রিজনস এবং হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জেন্টিল এবং তার প্রতারণার অংশীদার অভিযুক্ত জেফ্রি শ্নাইডারকে ২০২৪ সালের আগস্টে সিকিউরিটিজ এবং ওয়্যার ফ্রড (অর্থ প্রতারণা) সংক্রান্ত অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং মে মাসে সাজা ঘোষণা করা হয়।
তবে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ছয় বছরের সাজা প্রাপ্ত শ্নাইডার এমন কোনো ছাড় পাননি।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে অবাধ ক্ষমতার অপব্যহার করছেন উল্লেখ করে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, ট্রাম্প বিভিন্ন হোয়াইট-কলার ক্রাইমে (অর্থ প্রতারণার অপরাধ) ক্ষমা করে দিচ্ছেন এবং কখনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও এই ক্ষমতার ব্যবহার করেছেন। তিনি তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলোকে কখনও দুর্নীতিবাজদের মতো অবৈধ শিকার হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন, যেমনটি তিনি নিজেকে উদ্দেশ্য করে দাবি করেছেন।
তবে এটি স্পষ্ট নয় যে, জেন্টিলের ট্রাম্প বা তার সমর্থকদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না।
জেন্টিল ও শ্নাইডারের আইনজীবীরা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। জেন্টিলও কোনো মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেননি।
আদালতের কাগজপত্রে প্রসিকিউটররা বলেছেন, জেন্টিল এবং শ্নাইডার কয়েক বছর ধরে জেন্টিলের কোম্পানি জিপিবি ক্যাপিটাল পরিচালিত প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ড ব্যবহার করে ১০,০০০ জন বিনিয়োগকারীর সাথে প্রতারণা করেছেন। প্রসিকিউটরদের তথ্য অনুযায়ী, ১,০০০ এর বেশি মানুষ তাদের আর্থিক ক্ষতির বিবরণ জমা দিয়েছেন।
মে মাসে সাজা দেওয়ার পর, নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের অ্যাটর্নি জোসেফ নোসেলা জুনিয়র বলেন, জেন্টিল এবং শ্নাইডার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছিলেন ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে।
তবে হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা দাবি করেছেন যে, প্রসিকিউটররা এই ব্যবসাটিকে ভুলভাবে পনজি স্কিম হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। কর্মকর্তা বলেছেন, ২০১৫ সালে জিপিবি বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছিল যে, বিনিয়োগকারীর অর্থ কিছু লভ্যাংশ প্রদানের জন্য ব্যবহার হতে পারে।
কমিউটেশন-এর পুরো তথ্য (সাজা মওকুফের নথি) শনিবার পর্যন্ত, জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ হয়নি। এটিও স্পষ্ট নয় যে, কমিউটেশন কোনো আর্থিক জরিমানা বা অর্থপ্রদানের শাস্তি প্রভাবিত করবে কি না।
জুন মাসে, প্রসিকিউটররা জেন্টিলের ১৫ দশমিক ৫ মিলিয়নের বেশি অর্থ ও শ্নাইডারের ১২ মিলিয়নের বেশি অর্থ জব্দ করতে আদালতের প্রতি অনুরধ জানান।
এদিকে বিনিয়োগকারীদের পক্ষে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া বা আরবিট্রেশন করছেন অ্যাডাম গানা। তিনি জানান, জিপিবি ক্যাপিটাল-এর বিরুদ্ধে নাগরিক মামলাগুলো চলবে।
