নিউ ইয়র্কের ভোটাররা মামদানিকে পছন্দ করছে, ভয়ও পাচ্ছে
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ১২:৪০ এএম, ৩ নভেম্বর ২০২৫ সোমবার
কিছুদিন আগের অচেনা এক ব্যক্তিই এখন যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে এগিয়ে থাকা এক প্রার্থী। ২০১৮ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া জোহরান মামদানিকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে তাঁর উচ্চাভিলাষী ও প্রগতিশীল কর্মসূচি।
তবে আগামী মঙ্গলবার নির্বাচনের আগে শহরের ভোটারদের মনে এখনও একটি মৌলিক প্রশ্নের উত্তর নিয়ে মতভিন্নতা দেখা গেছে। সেটি হলো; ৩৪ বছর বয়সী এই ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কি সত্যিই দেশের বৃহত্তম শহর পরিচালনার জন্য প্রস্তুত?
শহরের বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৫০ জন ভোটারের সাক্ষাৎকারে একেক রকম মতামত উঠে এসেছে। কিছু ক্ষেত্রে একই পরিবারের সদস্যদের মাঝেও মমদানিকে নিয়ে বিভক্তি আছে।
মামদানির অতি উৎসাহী সমর্থকদের কাছে বাসে বিনামূল্যে চলাচলের মতো প্রতিশ্রুতি যেমন গুরুত্ব পাচ্ছে, তেমনি তাঁর বয়স ও উদ্যমকেও বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে সাক্ষাৎকার ও জনমত জরিপে দেখা গেছে, ভোটারদের একটি বড় অংশ তাঁর অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা নিয়ে সংশয় পোষণ করেছেন।
প্রশাসনিক দায়িত্বের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পর নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়রের পদকে সবচেয়ে কঠিন হিসেবে মনে করা হয়। সাক্ষাৎকারে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২১ বছর বয়সী স্টিভেন ইয়ে বলেন, ‘লুকানোর কিছু নেই। তিনি (মামদানি) খুবই তরুণ। অভিজ্ঞতাও নেই। তাঁকে ভোট দেওয়ার বিষয়ে আমি সত্যিই চিন্তিত। একটু নার্ভাসও।’
সাক্ষাৎকার দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে মামদানি ও ডেমোক্র্যাটের সমর্থক। মারিয়া ফাত্তোরে নামে আরেক ভোটারের মতে, মামদানি এখনও প্রস্তুত নয়। আমি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত। নেতৃত্বে নতুন প্রজন্মেরই কারও আসা উচিত। তবে এখানে দক্ষতাও থাকতে হবে।
ম্যানহাটনের ব্যাটারি পার্ক সিটির বাসিন্দা সু অ্যান টডহান্টার মামদানিকে সমর্থন করলেও কিছু বিষয়ে দ্বিধা থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই শহরের জটিল পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা তার (মামদানি) আছে কি না সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই। তবে এটুকু বুঝি মেয়রের দায়িত্ব পালন করাটা বিশাল এক দায়িত্ব।’
মামদানির প্রতি তাঁর সমর্থকদের এমন মনোভাব কিছুটা আশাবাদী করছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে (৬৭)। গত জুনে ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে (ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া) হেরে যান নিউ ইয়র্কের সাবেক গভর্নর কুয়োমো। অন্য একটি দলের হয়ে তিনি নির্বাচনে লড়ছেন। প্রচারণার শেষ দিনগুলোতে ভোটারদের কাছে গিয়ে ‘অভিজ্ঞতাকেই মূল অস্ত্র’ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। দাবি করেন, মামদানি জয়ী হলে নিউ ইয়র্ক সিটির আর্থিক স্থিতি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। কারণ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মামদানিকে এরইমধ্যে প্রতিপক্ষ হিসেবে ভাবছেন।
গত অক্টোবরে একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়। এতে নিউ ইয়র্কের প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা অংশ নেন। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়- মামদানির মেয়র হওয়ার মতো অভিজ্ঞতা আছে কি না? ফলাফলে ৩৯ শতাংশ ভোটার বলেছেন আছে, ৪৭ শতাংশ বলেছেন নেই। বিপরীতে, ৭৩ শতাংশ ভোটার মনে করেন অ্যান্ড্রু কুয়োমোর যথাযথ অভিজ্ঞতা আছে। ২৪ শতাংশের সমর্থন গেছে রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়ার পক্ষে।
