রোববার   ১৯ অক্টোবর ২০২৫   কার্তিক ৪ ১৪৩২   ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৭

যুক্তরাষ্ট্রে সংকটে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৩৫ এএম, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ রোববার

যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা শেষ করার পর অনেক শিক্ষার্থী অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেইনিং (ওপিটি) এর মাধ্যমে এফ-১ স্টুডেন্ট ভিসাকে এইচ-১বি ওয়ার্ক ভিসা-তে রূপান্তরিত করে ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন। তবে এখন সেই সুযোগ ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

 

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেনেটর টম কটনের প্রস্তাবিত ওপিটি ফেয়ার ট্যাক্স অ্যাক্ট বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিপদের ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিল। এবার সেনেটর চাক গ্র্যাসলিসহ আরো কয়েকজন আইনপ্রণেতা ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)-কে অনুরোধ জানিয়েছেন যাতে স্টুডেন্ট ভিসাধারীদের জন্য নতুন করে কাজের অনুমতি না দেওয়া হয়।

 

তাদের দাবি, এমন অনুমতি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা তৈরির পাশাপাশি দেশের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

 

এর পাশাপাশি, এইচ-১বি ভিসাসংক্রান্ত নিয়মে পরিবর্তন, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং কংগ্রেসের একাংশে ওপিটি-এর মতো কর্মসূচি সংকুচিত বা বন্ধ করার প্রবণতা যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

 

ওপিটির মাধ্যমে এফ-১ ভিসাধারী শিক্ষার্থীরা স্নাতক শেষে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ১২ মাস পর্যন্ত (আর এসটিইএম-বিষয়ের ক্ষেত্রে আরো দীর্ঘ সময়) কাজ করার সুযোগ পান।

 

তবে সাম্প্রতিক প্রস্তাব ও নতুন আইন এই সুযোগকে সংকুচিত করে দিতে পারে।

টিউশন ফি ও সাইট ভিজিটের বাইরে এখন কয়েকটি বিল আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার অর্থনৈতিক কাঠামোকেও প্রভাবিত করতে চলেছে।

 

ইন্ডিয়া টুডে আরো জানায়, সেনেটর টম কটন-এর ওপিটি ফেয়ার ট্যাক্স অ্যাক্ট এবং বৃহত্তর ডিগনিটি অ্যাক্ট অফ ২০২৫ এর লক্ষ্য হলো ওপিটি কর্মীদের জন্য থাকা পেরোল ট্যাক্স এক্সেম্পশন বা বেতন-কর ছাড় বাতিল করা।

 

নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, ওপিটি-এর আওতায় কর্মরত শিক্ষার্থী ও তাদের নিয়োগদাতাকে সোশ্যাল সিকিউরিটি এবং মেডিকেয়ার (এফআইসিএ) কর দিতে হবে—যা যৌথভাবে বেতনের প্রায় ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এটি নিয়োগদাতা ও কর্মীর মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে।

 

যদি এসব বিল পাস হয়, তাহলে ওপিটি শিক্ষার্থীদের হাতে পাওয়া বেতন কমে যাবে এবং অনেক নিয়োগদাতা হয়তো বিদেশি স্নাতকদের নিয়োগ দেওয়ার আগে দ্বিতীয়বার ভাবতে বাধ্য হবেন।

 

অন্যদিকে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট (আইস) এবং স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিসিটর প্রোগ্রাম (এসইভিপি) সম্প্রতি হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে। কর্মসংস্থান সংক্রান্ত অনিয়মের এসব ঘটনায় অনেকের এসইভিআইএস রেকর্ড বাতিলের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

 

বর্তমান পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা শেষ করার পর ক্যারিয়ার গড়ে তোলার পথ এখন স্পষ্টতই কঠিন হয়ে উঠেছে। এইচ-১বি ভিসার খরচ বেড়ে যাওয়া, ওপিটি এর ওপর কর আরোপের সম্ভাবনা, হঠাৎ সাইট ভিজিট এবং কঠোর আইন প্রয়োগ—এসব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের পছন্দের সুযোগ সীমিত হচ্ছে।

 

ফলে বিদেশে উচ্চ টিউশন ফি দিয়ে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীরা এখন সম্ভাব্য কম বেতন, নিয়োগদাতার কঠিন স্পনসরশিপ এবং কিছু ক্ষেত্রে হঠাৎ বৈধ স্ট্যাটাস হারানোর ঝুঁকির মুখে পড়ছেন।