নাইন ইলেভেনের নগরীতে মেয়র হবেন মুসলিম?
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:২৯ এএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শুক্রবার

নিউইয়র্ককে ‘নাইন ইলেভেনের নগরী’ বলা হয়। কারণ, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এই মহানগরীতে ঘটে ইতিহাসের ভয়াবহতম সন্ত্রাসী হামলা। যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ দিয়ে সেদিন বিধ্বস্ত করা হয় বিখ্যাত টুইন টাওয়ার। প্রাণ হারান প্রায় তিন হাজার মানুষ। ওই হামলার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। একইসঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে মুসলিমবিদ্বেষ। দুই দশকেরও বেশি সময় পরও সেই বিদ্বেষ আজও প্রবল।
এমন এক প্রেক্ষাপটে আগামী ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নিউইয়র্ক নগরীর মেয়র নির্বাচন। এ নির্বাচনে মুসলিম তরুণ রাজনীতিক জোহরান মামদানি (৩৩) রয়েছেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
চার প্রার্থীর লড়াই
এবার মেয়র পদে লড়ছেন চারজন প্রার্থী। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া (৭১)। এছাড়া বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস (৬৫) ও নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো (৬৭) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জরিপে এগিয়ে জোহরান
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনার যৌথ জরিপ অনুযায়ী, ভোটারদের ৪৬ শতাংশ জোহরান মামদানির পক্ষে মত দিয়েছেন। কুয়োমোর পক্ষে ২৪, স্লিওয়ার পক্ষে ১৯ এবং অ্যাডামসের পক্ষে ৯ শতাংশ। তরুণ ও উচ্চশিক্ষিত ভোটারদের বড় অংশ তার সমর্থনে রয়েছেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানও এক প্রতিবেদনে বলেছে, নতুন জরিপে মামদানি উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। বোস্টনের এমারসন কলেজ পোলিং, পিক্স ইলেভেন ও দ্য হিলের জরিপে তার পক্ষে মত দিয়েছেন ৪৩ শতাংশ ভোটার। কুয়োমোর পক্ষে ২৮ শতাংশ।
অভিবাসী থেকে সম্ভাব্য মেয়র
১৯৯১ সালে উগান্ডার কাম্পালায় জন্ম জোহরান মামদানি মাত্র সাত বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। ২০০১ সালে টুইন টাওয়ার ধ্বংসের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১০। এখন তিনি নিউইয়র্কের রাজনীতিতে এক উদীয়মান শক্তি।
আবাসন খরচ ও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনার প্রতিশ্রুতি ভোটারদের মধ্যে জোহরানের গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে। তার সমর্থকরা বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষ হলেও তরুণ প্রজন্ম তার সবচেয়ে বড় ভরসা।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ২৪ বছর পর, যে নগরী থেকে মুসলিমবিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়েছিল—সেই নিউইয়র্ক কি এবার ইতিহাস গড়ে একজন মুসলিম মেয়র পেতে যাচ্ছে?