মামদানিকে হারাতে ট্রাম্প কি মাঠে নামছেন
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:৫৭ এএম, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার

মাত্র ৩৩ বছর বয়সী স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান জোহরান মামদানিকে ৭৯ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেখছেন ‘প্রেস্টিজ ইস্যু’ বা ‘ইজ্জত কা মামলা’ হিসেবে। ট্রাম্প চান না স্বঘোষিত ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট জোহরান বিশ্ববাণিজ্যের রাজধানী হিসেবে খ্যাত নিউইয়র্ক শহরের মেয়র হোন।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে নিউইয়র্কের মেয়র পদে লড়ছেন জোহরান মামদানি। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চক্ষুশূল। জোহরানের বিজয় ঠেকাতে তাই মাঠে মানতে হচ্ছে খোদ প্রেসিডেন্টকে– এমনটিই জানা গেল মার্কিন গণমাধ্যম সূত্রে।
ট্রাম্পের ইচ্ছা, জোহরানের বিরুদ্ধে একাধিক প্রার্থীর পরিবর্তে একজন প্রার্থী লড়াই করুক। তাহলে জোহরানবিরোধী সব ভোট পড়বে একজনের বাক্সে। আর এভাবেই জোহরানের পরাজয় নিশ্চিত করা যাবে। শুধু ইচ্ছা করেই থেমে নেই ট্রাম্প। প্রিয় নিউইয়র্ক শহরকে একজন সমাজতান্ত্রিকের হাত থেকে বাঁচাতে বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসকে আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে উৎসাহ দিচ্ছেন হোয়াইট হাউসের এই সম্মানিত বাসিন্দা।
৬৫ বছর বয়সী এরিক ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়র হলেও এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। কেননা, দলে তাঁর খ্যাতি তলানিতে। অপর ডেমোক্র্যাট নেতা ও নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ৬৭ বছর বয়সী অ্যান্ড্রু কুয়োমো দলীয় প্রার্থিতা বাছাইয়ে জোহরান মামদানির কাছে পরাজিত হয়ে নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। এ ছাড়া, মেয়র পদে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ৭১ বছর বয়সী কার্টিস স্লিওয়াকে ‘বুঝিয়ে’ বা ‘ধমক’ দিয়ে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প।
ফ্লোরিডার ভোটার হলেও ট্রাম্প নিউইয়র্কের পুরোনো বাসিন্দা। তিনি চান নিউইয়র্কের মেয়র পদটিকে ডেমোক্র্যাটদের হাত থেকে ‘ছিনিয়ে’ নেওয়া হোক। এই কাজে তিনি ভরসা রাখতে চান অ্যান্ড্রু কুয়োমোর ওপর। ট্রাম্প মনে করছেন, কুয়োমো বর্ষীয়ান নেতা। তিনিই পারবেন জোহরানবিরোধী ভোটগুলো একত্রিত করতে।
কিছু দিন আগে হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের আসন্ন মেয়র নির্বাচন প্রসঙ্গে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আমি মনে করি, যতক্ষণ না আপনি একক প্রার্থী দিচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার জেতার সম্ভাবনা নেই। আমি চাই নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে দুই প্রার্থী সরে দাঁড়াক। তখন নির্বাচন হবে একজনের বিরুদ্ধে আরেকজনের। আমার মনে হয়, সেটাই হবে আসল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ট্রাম্পের এই মন্তব্যে এটা পরিষ্কার হয় যে, তিনি চান জোহরানের বিরুদ্ধে একজন লড়াই করুক। সে হিসেবে ট্রাম্প সমর্থন দিচ্ছেন কুয়োমোকে। কেননা, এরিকের ভোটার কমেছে; আর নিউইয়র্কের মতো একটি ডেমোক্র্যাট শহরে রিপাবলিকান স্লিওয়ার জেতার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
এনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউসে শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের সঙ্গে নৈশভোজে ট্রাম্প বলেন, আমি একজন কমিউনিস্টকে মেয়র হিসেবে দেখতে চাই না। সংবাদমাধ্যম সিবিএস জানায়, নিউইয়র্ক শহরের মেয়র নির্বাচন শুধু শহরের আলোচ্য বিষয় নয়, সব দেখে মনে হচ্ছে, এটি এখন হোয়াইট হাউসেরও আলোচনার বিষয়।