চীন-রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:১১ এএম, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার

চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বেইজিংয়ে তিন পারমাণবিক শক্তিধর দেশের নেতা যখন একটি বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দিচ্ছিলেন, তখন ট্রাম্পের এমন অভিযোগ এলো।
মঙ্গলবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট শি'কে উদ্দেশ করে নিজের ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, 'ভ্লাদিমির পুতিন এবং কিম জং উনকে আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাই, কারণ আপনারা আমেরিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।'
এদিকে, বিশ্বনেতাদের উপস্থিতিতে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কয়ারটি যেন সামরিক শক্তি প্রদর্শনের এক মহামঞ্চে পরিণত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিশাল কুচকাওয়াজে প্রদর্শিত হয় চীনের আধুনিকতম যুদ্ধাস্ত্র, ট্যাংক, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও স্টেলথ ফাইটার জেট।
চীনের প্রেসিডেন্ট এবং দেশটির সেনাবাহিনী ও কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান শি জিনপিং কুচকাওয়াজের নেতৃত্ব দেন। তিনি পুতিন-কিম ছাড়াও অন্যান্য বিদেশি অতিথিদের আতিতেয়তা দেন।
শি জিনপিং প্রথমে চীনা বীর যোদ্ধাদের অভিবাদন জানান। পরে তিয়ানআনমেন স্কয়ারের গেট অব হেভেনলি পিস থেকে সেনাদের উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেন, 'চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথেই অটল থাকবে।'
প্রায় ১০ হাজার সেনার সামনে তিনি আরও বলেন, 'মানবজাতি আজ দাঁড়িয়ে আছে এক সঙ্কটময় মোড়ে। চীন বিশ্বের মানুষের সঙ্গে মিলে অভিন্ন ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে।'
ঐতিহ্যবাহী ধূসর মাও স্যুট পরে খোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে শি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। এরপর শুরু হয় মহড়া, যা বিস্তৃত হয় বেইজিংয়ের প্রধান সড়ক চাং’আন অ্যাভিনিউজুড়ে।
কুচকাওয়াজে নজর কাড়ে চীনের উন্নতমানের ক্ষেপণাস্ত্রসমূহ। বিশেষভাবে প্রদর্শিত হয় পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম ডিএফ-৫ আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র, যা চীনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই আয়োজনের মাধ্যমে শি জিনপিং বিশ্বকে বার্তা দিয়েছেন যে, চীন এখন একটি পরিপূর্ণ বিশ্বশক্তি।
সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়ান চং বলেন, 'এ কুচকাওয়াজের মূল বার্তা হলো— চীন বিশ্বশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ কারও চাপ বা হুমকি তাদের বিচলিত করতে পারবে না।'
পর্যবেক্ষকদের মতে, বেইজিংয়ের এ সামরিক প্রদর্শনী শুধু শক্তির প্রদর্শন নয়; বরং বিশ্বরাজনীতিতে চীনের অবস্থান পুনঃপ্রতিষ্ঠার কৌশলও বটে।