সেদিন আমিও ভয় পেয়েছিলাম
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:৩২ পিএম, ৫ আগস্ট ২০২৫ মঙ্গলবার

৫ আগস্ট-২০২৪ এ আমি ১২টা ৪০ বা ৪৫ মিনিটের দিকে আমার এক সোর্সকে ফোন দিলাম। তিনি আমাকে বললেন, শেখ হাসিনা রিজাইন করে পালিয়ে গেছেন। আমি তখন আমার বসকে ফোন দিলাম, আমার বস মানে হলো এএফপির সাউথ এশিয়ার প্রধান। ঘটনা বললাম কিন্তু আমার বস বললেন, আমি এরকম একটা সেনসিটিভ বিষয়ে সিঙ্গেল সোর্স ব্যবহার করে নিউজ তো দিতে পারব না। এতটা রিস্ক নেওয়া যায় না। তখন আমি আবারও আমার সোর্সকে ফোন করলাম। তখন আমার সোর্স আমাকে ডিটেইল বলল যে, এসএসএফের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে বলা হয়েছে যে, তাদের কাছে খবর আসছে উত্তরা থেকে ৫ লাখ মানুষ আসতেছে আর শনির আখড়া থেকে আসতেছে সাড়ে ৩ লাখ মানুষ। এরা সবাই গণভবনে আক্রমণ করবে। ফলে এত মানুষকে খুন করে তো আমরা আপনাকে নিরাপত্তা দিতে পারব না। অতএব আপনি বাকসো পেটরা গোছান। তখন শেখ হাসিনা বললেন, বিটিভিকে ডাকুন। আমার একটা বক্তব্য রেকর্ড করুক। কিন্তু এসএসএফ তখন বলছে যে না সে সময় নাই। কারণ যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে। কেননা আন্দোলনকারীরা কাছাকাছি চলে আসছে। তখন তিনি এসএসএফসহ প্রথমে এয়ারপোর্টের দিকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। কিন্তু দেখা গেল যে, এসএসএফের কাছে খবর এসেছে ততক্ষণে আন্দোলনকারীরা এয়ারপোর্টেও চলে এসেছে। এজন্য সিদ্ধান্ত
সেদিনের কথা আমি তো কখনোই ভুলব না। এটা আমার পেশাগত জীবনের সবচেয়ে বড় ও সেরা অর্জন। জুলাইয়ের ১৮ তারিখের পর তো সারা দেশে ইন্টারনেট তখন বন্ধ। কিন্তু আমার অফিসে হাই স্পিড ইন্টারনেট ছিল। ৫০/৬০ জন সাংবাদিক এখানে এসে কাজ করেছেন। আমি সবাইকে অ্যালাও করেছি। সবাই এখানে সাহায্য নিয়েছে। আবার তারাই আমার বিরোধিতা করেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আরাফাত ও হাসান মাহমুদকে গিয়ে বলেছে, শফিককে ধরেন। তখন তো আমাকে আবার অন্য জায়গা থেকে বলা হয়েছে আপনি সাবধানে থাকেন। আমি কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ভীতু মানুষ। কিন্তু সে সময় আমার কোনো ভয় ছিল না। যখন বলা হলো, শেখ হাসিনা ছেলেদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। কিন্তু হান্নান মাসুদ আমাকে বলল যে, না আমাদের দাবি তো মানেনি। আমরা তো তার পদত্যাগ চাই। আমি তখন ওটার একটা নিউজ করলাম যে, হাসিনার প্রস্তাব ছেলেরা প্রত্যাখ্যান করেছে। সেটা আন্তর্জাতিকভাবে হেভি কাভারেজ পেল। তখন আবার আমাকে বারবার বলা হলো- আওয়ামী লীগের লোকেরা নানান ভয় দেখাল। এখনো তো আমার জীবন হুমকির মুখেই আছে। কিন্তু আমি ওগুলো এখন আর ভয় পাই না। আমি আবার সেই সাংবাদিকতা পেশাতেই ফিরব।
লেখক : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
অনুলিখন-মানিক মুনতাসির