শনিবার   ১২ জুলাই ২০২৫   আষাঢ় ২৭ ১৪৩২   ১৬ মুহররম ১৪৪৭

ফজলু ও রুমিনদের ভাল লাগে না ক্যান?

শাহেদ আলম

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৫৭ এএম, ১২ জুলাই ২০২৫ শনিবার

মন্তব্য প্রতিবেদন


 

বিএনপির অনেক কট্টর সমর্থক আছেন। যারা মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনলেই ছ্যাৎ ছ্যাৎ করে ওঠেন নিজের অজান্তেই। দোষের কিছু না। চিহ্নিত রাজাকারদেরকেও জিয়াউর রহমান সম্মানের সাথে জায়গা দিয়েছিলেন বিএনপিতে। আবার নিজে সেক্টর কমান্ডার হওয়াতে তার সাথে ছিলেন একঝাঁক মুক্তিযোদ্ধা। ডান ও বামের অপুর্ব সমন্বয় তিনি করেছিলেন। সত্যিকারের জিয়ার আদর্শে ধারণ করলে মুক্তিযুদ্ধ ধারণ করতে হবে। আবার দেশের স্বার্থের রাজাকারের আস্ফাালনও মেনে নিতে হবে। এটাই ইনক্লুসিভিভিটি। 
২৩ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যেই ছেলেটি শেখ মজিব কে নিয়ে আপ্লুত ভাষন দিয়েছে, সে এখন জাতীয় মুজিব বিরোধী দলের কেন্দ্রীয় নেতা। ২৩ সালের ৫ আগস্ট অবধি যে মুজিব বন্দনায় পত্রিকায় কলাম লিখেছে সে এখন মুজিবের দল নিষিদ্ধ করার প্রধানতম ক্যাপ্টেন। ২৩ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যারা মুজিবের আঙুলের সম্মানে ছবি তুলেছে, তারা এখন মুজিববাদ বিরোধী ইসলামী ছাত্রনেতা! এদের যদি মেনে নিতে পারেন, এক ফজলুর রহমান যিনি জীবনে কোনদিন দ্বিচারিতা করেননি জীবনে তারে মেনে নিতে কেন এত কষ্ট আপনাদের?  আজ দেখলাম বৈষম্যবিরোধী আরিফ সোহেলও লিখেছে। এত এলার্জি কেন আপনাদের বিএনপির একজন জীবিত মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে? আপনাদের বন্ধুদের পুরোনো মুজিবপ্রেম নিয়ে তো এলার্জি দেখি নাই!? 
একজন রুমীন ফারহানা যিনি হাসিনার আমলে টিকে থাকা অল্প কিছু ভোকাল যারা জাতীয়তাবাদী রাজনীতির কথা বলে গেছেন। তাদের প্রতি খোদ বিএনপি- ছাত্রদলের নানা কটুকথা দেখতে পাচ্ছি। অথচ ২৩ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যারা মুজিববাদী ছিল তাদের প্রতি নম নম! কেমনে কি? 
ফজলুর রহমান কি আজকের মুজিবপ্রেমী? উনি মুজিবপ্রেমী জেনেই বিএনপি তাকে উপদেষ্টা বানিয়েছে। কারন একটাই, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের দলে মুক্তিযোদ্ধাদের আনাগোনা কমে গিয়েছিল। এক মেজর হাফিজ, উনি অনেকটাই নিশ্চুপ। কর্নেল অলি আলাদা দল করেছেন। ফজলুর রহমান শেখ হাসিনার আমলেই বারুদের মত কথা বলতেন, হাসিনার সমালোচনা করতেন ভুলে গেছেন? বলবেন মুজিব প্রেম করলে আবার বিএনপি হওয়া যায় নাকি? 
জিয়াউর রহমান তার জীবদ্দশায় কি কোনদিন মুজিব কে অপমান করে কথা বলেছেন? শেখ হাসিনা জিয়াকে পাকিস্তানি চর বলতো। অথচ তিনি  নিজে অশিক্ষিত ও চরের মহিলা । ভদ্র মানুষেরা কোনদিন ইতিহাসের নায়কদের সম্মান না দিয়ে রাজনীতি করেন না। তারেক রহমান জিয়াউর রহমানের পুত্র। তিনি নিরবে টুঙ্গিপাড়ায় জিয়ারত করেছেন। লীগের মাফিয়া রাজনীতির বাইরে আমরা সুন্দরের রাজনীতির গোড়াপত্তন করতে চাইছিলাম! সেখানে এক ফজলুর বা রুমীন ফারহানা যদি বলেন ৩২ নম্বর ভাঙা বড় মব, সেখানে দোষ কই দেখেন আপনারা? 
৩২ ভাঙা মব ছিল না? তাহলে পিনাকি গং এর ডেইলি স্টার ভাঙার ডাক, সিপিবি অফিস ভাঙার ডাকও তো মব না। ৫ আগস্ট এর পর সরকার গঠন পর্যন্ত বা এর পরেও যা হয়েছে সেটা অভ্যুত্থান বা সাইজ ইফেক্ট।  ধীরে সুস্থে সময় নিয়ে ঘোষণা দিয়ে যা করা হয়েছে - সেটা অবশ্যই মব। সে তা যে কারনেই হোক। কোনটাকে গ্রহণ করবেন কোনটারে গ্রহন করবেন না সেটা আপনার স্বাধীনতা- পরিমাপকে সেটাকে মব হিসাবে ধরতে হবে। 
শেষ করবো, এ কথা বলে যে , বিএনপিতে রাজাকারের অভাব নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের অভাব আছে। ফজলুর রহমানদের পাশে না দাঁড়ালে, তারা বেরিয়ে যাবে , যেভাবে রাজাকারের ভার-ভারিক্কিতে অনেকই আগেই বেরিয়ে গেছে। তখন দাবী করতে পাবেন তো বিএনপিকে একটা মধ্যপন্থার দল হিসেবে? মুক্তিযোদ্ধাদের দল হিসেবে? নাকি জামাতের মতো লেজ কাটাতে চান বিএনপির? পিনাকি গং দের সাথে সুর মিলিয়ে ফজলুরদের অবাঞ্চিত করতে চান? তার কথাকে বিকৃত করে তারেই বাইর করতে চান বিএনপি থেকে? 
মনে রাইখেন, এখনো, ২০/২৫ শতাংশ ভোট মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের। মুজিব ভক্তদের। রাজাকারের ভোট রাজাকাররা নিয়ে যাবে। এটিম বি টিম এক হয়ে যাবে। ফজলুর রহমান ও রুমীনদের থামিয়েন না, বলতে দিন। তাদের কে বিএনপিতে রাখেন। পারলে ওন করেন। না পারলে ক্ষতি নেই। একটা বড় দলে অনেক রকম ভাবনা ও মুল্যবোধের মানুষ থাকবে। ধারা থাকবে। সমীহ করেন। সেন্ট্রিস্ট আইডিওলজি বিশ্বাস করলে যারা এক্সক্লুসিভ রাজনীতি করে তাদের দেল যোগ দিন। ঘরে বইসা ঘরের মানুষদের কোপাইয়েন না!

বড় মুজিব বন্দনা কারী এখন সংস্কৃতি মন্ত্রী।আইনমন্ত্রী! তাগোরে ভালা পান। ফজলুর রহমানরে গালি দ্যান! সরি।