ট্রাম্পের বর্ধিত শুল্ক স্থগিতের মেয়াদ বাড়ার প্রত্যাশা ঢাকার
মাসুদ করিম, ঢাকা
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৩:১৪ এএম, ৫ জুলাই ২০২৫ শনিবার

ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমেই শুরু করেন বাণিজ্য যুদ্ধ। বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে নতুন করে শুল্ক আরোপ করা হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বাংলাদেশের অনুৃকূলে। তার মানে হলো, বাংলাদেশ থেকে বেশি দামের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রফতানির হয়ে থাকে। এই ব্যাপারে বাণিজ্য ক্ষেত্রে সমতা আনয়নের লক্ষ্যে ট্রাম্পের নির্দেশে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ নতুন শুল্ক আরোপের নির্দেশ দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী পণ্য রফতানির ওপর এমনিতেই ১৬ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণায় চারদিকে উদ্বেগ দেখা দেয়। ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ শুধু বাংলাদেশের ওপর নয়। বরং বিভিন্ন দেশের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানির ওপর পড়ে।
গোটা বিশে^র যেসব দেশের ওপর ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করেন; ওই সকল দেশের নেতারা প্রত্যেকে ট্রাম্পকে চিঠি লিখেন যাতে নতুন শুল্ক আরোপ স্থগিত করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ এপ্রিল এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সকল নতুন শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। এই ধারায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে একটি চিঠি লিখেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন যে, বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাস্পের এজেন্ডা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সহায়তা করবে। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্যাকেজ কর্মনসূচি হাতে নিচ্ছে। বেশি করে বাংলাদেশের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিন মাস সময় প্রয়োজন। ইউনূসসহ বিশে^র সকল দেশের নেতাদের চিঠি পাবার পর বিশে^র সকল দেশের জন্য নতুন মার্কিন শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই স্থগিতাদেশের মেয়াদ আগামী ৯ই জুলাই শেষ হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নতুন শুল্ক আরোপ বন্ধে দেশগুলোর কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনে জড়ো হচ্ছেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করছেন। এই ধারায় বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান আগেই যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। তিনি শুধু ইউএসটিআর নয়; মার্কিন উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। এরিমধ্যে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তি সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। তারা এ ব্যাপারে তৎপরতা শুরু করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের এমন আলোচনা চলাকালে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও টেলিফোন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে। টেলিফোনে রুবিও বাণিজ্য ছাড়াও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন। এ সময় রুবিও জানতে চান যে, কবে নাগাদ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জবাবে ইউনূস জানান যে, আগামী বছরের শুরুতেই বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকার কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেন যে, বিশে^র বিভিন্ন দেশের জন্য ট্রাম্প প্রশাসন নতুন শুল্ক আরোপের মেয়াদ বাড়াতে পারে। সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশও এমন সুযোগ পাবে। তবে বিষয়টি গোপন রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তরফে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এমন ইঙ্গিত দিলেও ট্রাম্প প্রশাসন বিষয়টি ঘোষণা না পর্যাপ্ত গোপন রাখার অনুরোধ করেছে।
এ ব্যাপারে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন ওয়াশিংটন থেকে আজকালকে বলেন, ‘কী হবে সেটা আগাম বলা যাবে না। তবে আমরা এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি। দেখা যাক কী হয়’। এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মূহুর্তে কোনও আপডেট নেই’। ##