মামদানি-কুমো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বুধবার
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:৪৬ এএম, ২১ জুন ২০২৫ শনিবার
নিউইয়র্কজুড়ে তারুণ্যের জোয়ার
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থিতার দৌড়ে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলছে। এতে প্রাইমারীর দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ব্যবধান কমছে প্রধান দুই প্রর্থীর মধ্যে। সর্বশেষ জরিপে ব্যাবধান বেশ খানিকটা কমিয়ে এনেছেন তরুণ জনপ্রিয় প্রার্থী জোহরান মামদানি।
জরিপে কুমো এগিয়ে থাকলেও, মামদানি বেশ জোরালো ভাবেই নিজের অবস্থান শক্ত করছেন। এবারের ভোটে তারুণ্যের জোয়ার মামদানির পক্ষ্যে। তার অগ্রগতি ভোটারদের মধ্যে নতুন উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে অভিবাসী ও তরুণরাই মামদানির অন্যতম সমর্থক। ৩৩ বছর বয়সী ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট মামদানি অর্থনৈতিক সমতা ও জনগণের পক্ষে অবস্থানের বার্তা দিয়ে প্রগতিশীল ও লাতিনো ভোটারদের সমর্থন আদায়ে নানা প্রতিশ্রুত দিচ্ছেন।
এদিকে এ প্রাইমারী বির্নাচনের আগাম ভোট দান শুরু হয়েছে গত ১৪ জুন। আগামী ২৪ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। শেষ মুহূর্তে ভোটারদের মনোভাবের ওপর নির্ভর করবে কে হবেন ডেমোক্র্যাটদের নতুন প্রার্থী? তরুণ মামদানি নাকি পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ কুমো। কে হাসবেন শেষ হাসি তা দেখার পালা।
আগামী ২৪ জুন অনুষ্ঠেয় ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে যিনি জয়ী হবেন, এবছরের নভেম্বর মাসের ৪ তারিখে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে তিনিই সিটির মেয়র নির্বাচিত হবেন। নিউইয়র্ক মূলত একটি ডেমোক্রেট সিটি এবং রিপাবলিকান পার্টি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তাদের প্রার্থীর জেতার কোনো সম্ভাবনা কম।
ডেমোক্রেটিক প্রাইমারির দিন যত ঘনিয়ে এগিয়ে আসছে, ডেমোক্রেট প্রার্থীদের প্রতিযোগিতা তত কঠিন হচ্ছে বলে মনে করছেন ডেমোক্র্যাটচ ভোটাররা। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ভোটাররা রাজনৈতিক পরিবার থেকে আসা নিউইয়র্ক স্টেটের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ও তরুণ অভিবাসী নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য জোহরান মামদানিকে এগিয়ে রেখেছেন। তরুণ ভোটারদের কাছে তরুণ ডেমোক্রেট জোহরান মামদানির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জরিপ সংস্থা ও মিডিয়ার জরিপে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতার আভাস পাওয়া গেছে।
মূলত এই দুই প্রার্থীকে ঘিরেই জমে উঠেছে ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারি। সব হিসেব-নিকেশ হচ্ছে এই দুই প্রাথীকে ঘিরেই। নতুন মেয়র যিনি হবেন, তাঁকে অনেক সমস্যা ও জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে আছে আবাসন, জীবনযাত্রার ব্যয়, যানজট ও গণপরিবহন।
যুক্তরাষ্ট্রে যত বাংলাদেশির রয়েছেন, এর বেশির ভাগই নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাস করেন। বাংলাদেশি আমেরিকানদের ভোট নির্বাচনে বড় ভূমিকা না রাখলে মুসলিম ভোট হিসাবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশিরা চান এই শহরে একজন ‘ভালো’ মেয়র আসুক, যিনি অভিবাসী সমাজের স্বার্থকে বড় করে দেখবেন। বাংলাদেশিদের বড় একটি অংশ মামদানিকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিচ্ছেন। অন্যদিকে একটি অংশ অভিজ্ঞ হিসাবে ক্যুমোর পক্ষে কাজ করছেন। ডেমোক্রেটদের প্রাথমিক বাছাইপর্বে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর বয়সের ব্যবধান অনেক। অ্যান্ড্রু কুমোর বয়স ৬৭ বছর। জোহরান মামদানি ৩৩।
নিউইয়র্ক স্টেটের সাবেক গভর্নরের সন্তান এবং নিজেও গভর্নর হওয়া কুমোর কর্মজীবন বিস্তৃত। ২০১১ সালে নিউইয়র্কের গভর্নর হওয়ার আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী এবং নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজ করেছেন। অভিজ্ঞতাকে পূঁজি করে তিনি মেয়র হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে তরুণ জোহরান মামদানির শক্তি তারুণ্য। মুসলিম হিসাবেও তিনি অগ্রভাগে রয়েছেন।
২০২১ সালে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুমো পদত্যাগ করেন। কুমো তাঁর নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছেন, তার মধ্যে আছে- শহরের ব্যবস্থাপনা উন্নত করা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করা এবং ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই চালানো। এমনকী নির্বাচিত হলে নিউইয়র্ক সিটির ন্যুনতম মজুরি ২০ ডলার করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদে মুসলিম প্রার্থী জোহরান মামদানিকে সমর্থন করলেন বার্নি স্যান্ডার্স। এর আগে তাকে সমর্থন জানিয়েছেন সিনেটর ওকাসিও-কর্টেজ। স্যান্ডার্সের মতো ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট মামদানি মেয়ার পদে নিউ ইয়র্কের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী।