শুক্রবার   ০২ মে ২০২৫   বৈশাখ ১৯ ১৪৩২   ০৪ জ্বিলকদ ১৪৪৬

নিউ ইয়র্ক সিটিতে অভিবাসন অভিযান, ২০ জনকে গ্রেপ্তার

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ১০:০৬ এএম, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ বৃহস্পতিবার

নিউ ইয়র্ক সিটির মেট্রোপলিটন এলাকায় মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) একটি বড় অভিবাসন অভিযান চলিয়েছে আমেরিকার অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)। এতে অন্তত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর যৌথ প্রচেষ্টায় এই অভিযানটি পরিচালিত হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, এই অভিযানে অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই), হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ, অ্যালকোহল, তামাক, আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিস্ফোরক ব্যুরো (এটিএফ), এবং ব্রঙ্কস ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ডিইএ) এজেন্টরা অংশগ্রহণ করেন।

এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ব্রঙ্কস এলাকার একাধিক স্থান পরিদর্শন করা হয়। যেখানে সশস্ত্র এজেন্টরা সন্দেহভাজন অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছেন। এক বিশেষ অভিযানে, কলোরাডোতে অবস্থিত একটি সন্ত্রাসী গ্যাংয়ের সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিইএ নিউ ইয়র্কের বিশেষ এজেন্ট ফ্র্যাঙ্ক টারেন্টিনো জানিয়েছেন, আমরা হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সহযোগিতায় আইসিই এবং ইআরও-র সঙ্গে তাদের গ্রেপ্তার করেছি যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকারক, সহিংস অপরাধী হিসেবে পরিচিত এবং আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত।

অভিযানে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন , নিউ ইয়র্ক সিটির ৩টি এলাকায়, বিশেষ করে ওগডেন অ্যাভিনিউ, ডেভো টেরেস এবং ক্রেস্টন অ্যাভিনিউতে অভিযান চালানো হয়েছে।

এদিকে, অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ২০ জনের মধ্যে ১২ জনের অপরাধমূলক ইতিহাস রয়েছে, এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। অন্য আটজনের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র অবৈধভাবে দেশে প্রবেশের অভিযোগ রয়েছে।

নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, সহিংস অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফেডারেল কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের সমন্বয় চলতে থাকবে। আমাদের শহরের নিরাপত্তা এবং জনসাধারণের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

এদিকে, নিউ ইয়র্ক ইমিগ্রেশন কোয়ালিশনের প্রধান মুরাদ আওয়াদেহ এই অভিযানকে 'ভীতি সৃষ্টিকারী' হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এসব অভিযান অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করা নয়, বরং অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।

মেয়র অ্যাডামস এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা ফেডারেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের শহরের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত। তবে, আমাদের লক্ষ্য থাকবে শহরের বাসিন্দাদের, নাগরিকদের এবং অভিবাসীদের সুরক্ষা প্রদান করা।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, যারা অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করবেন, তাদেরকে অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং নির্বাসিত করা হবে।

প্রসঙ্গত, এই অভিযান নিউ ইয়র্ক সিটিতে এক সপ্তাহব্যাপী অভিবাসন অভিযানের অংশ হিসেবে চালানো হয়। যেখানে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এই অভিযানের ফলে নিউ ইয়র্কের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। অভয়ারণ্য শহরগুলির নেতারা কংগ্রেসে এই অভিযান নিয়ে বক্তব্য রাখার জন্য তলব করা হয়েছে। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।