সোমবার   ১১ আগস্ট ২০২৫   শ্রাবণ ২৬ ১৪৩২   ১৬ সফর ১৪৪৭

ট্রাম্পের আগমন, বাইডেনের বিদায় আজ

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ১০:০১ এএম, ২০ জানুয়ারি ২০২৫ সোমবার

  • আজ আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ট্রাম্প
  • প্রথম দিনেই নির্বাহী আদেশে একাধিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবেন তিনি

 

যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী, শপথ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার মসনদে বসেন নতুন প্রেসিডেন্ট। আর হোয়াইট হাউস ছাড়েন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আবারও বিশ্ব ক্ষমতার শীর্ষ আসনে বসছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর বিদায় নেবেন ডেমোক্র্যাটিক নেতা ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।   

গত নভেম্বরের ভোটে জয়ী হয়ে ট্রাম্প আজ সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে ৭৮ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতা যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবারও হোয়াইট হাউজে পা রাখছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার দ্বিতীয় মেয়াদে ফিরে এসে, প্রথম দিনেই নির্বাহী আদেশে একাধিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারেন ট্রাম্প।

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বারের মতো বরণ করতে ইতিমধ্যে প্রস্তুত ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস ক্যাপিটল (পার্লামেন্ট ভবন)। আজ সোমবার সেখানেই হবে ট্রাম্পের জমকালো শপথ অনুষ্ঠান। এদিন শপথ নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সও।

শপথ অনুষ্ঠানে থাকবেন কংগ্রেস সদস্যরা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, বিপুলসংখ্যক রাজনীতিক, প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা, বিদেশি অতিথিসহ প্রচুর মানুষ। তাই নিরাপত্তার কোনো কমতি থাকবে না সেখানে। এজন্য শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে নেওয়া হয়েছে নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোতায়েন হচ্ছে ২৫ হাজার বাড়তি আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তা। অভিষেক অনুষ্ঠানে দর্শক শ্রোতাদের নিরাপত্তা তল্লাশির জন্য বসানো হচ্ছে চেকপয়েন্ট। থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরাও।

ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, নিরাপত্তার জন্য ৪৮ কিলোমিটার এলাকায় তৈরি হচ্ছে সাত ফুট উঁচু বেড়া। নিরাপত্তা কর্তারা বলছেন, এই বেড়া টপকে যাওয়া যাবে না।

অন্যদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাপিটল হিলে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হবে অভিষেক অনুষ্ঠান। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে ৪০ বছরে এবারই প্রথম ক্যাপিটল হিলের ভেতরে করা হচ্ছে আয়োজন।

মহা-আয়োজনের শুরুতেই থাকছে সঙ্গীতানুষ্ঠান ও উদ্বোধনী বক্তব্য। এরপরই ট্রাম্প পাঠ করবেন বহুল প্রতীক্ষিত শপথ বাক্য। এসময় আগামী ৪ বছরের লক্ষ্য নির্ধারণ করবেন ট্রাম্প।  

পরে ট্রাম্প যাবেন সিনেট চেম্বারের প্রেসিডেন্ট কক্ষে, স্বাক্ষর করবেন গুরুত্বপূর্ণ নথি। এরপরই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট যোগ দেবেন কংগ্রেস আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে। ক্যাপিটল হিল থেকে হোয়াইট হাউস পর্যন্ত হবে কুচকাওয়াজ। দুবারের প্রেসিডেন্ট অংশ নেবেন ৩টি সমাবেশেও।  

পথ অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি জগতের শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যক্তিদের উপস্থিতি হবে একটি বড় চমক। ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস, মার্ক জাকারবার্গ এবং টিকটকের সিইও শৌ চিউসহ আরও অনেকে এই অনুষ্ঠানে ভিআইপি আসনে থাকবেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ বুশ তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন। থাকবেন এবং বারাক ওবামাও, তবে মিশেল ওবামা আসবেন না। বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও উপস্থিত থাকবেন।

প্রথাগতভাবে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো না হলেও ট্রাম্প ইতালি ও হাঙ্গেরির ডানপন্থি নেত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও ভিক্টর অরবান, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ার মিলেই এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং-কে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। যদিও অরবান অনুষ্ঠানে থাকবেন না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। আর অনুষ্ঠানে চীনের পক্ষ থেকে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং উপস্থিত থাকবেন। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো চীনের কোনো জ্যেষ্ঠ নেতা সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে শপথ নিতে দেখবেন।

ট্রাম্প তার দায়িত্বের প্রথম দিনেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী আদেশ জারি করার পরিকল্পনা করছেন। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপক অভিবাসী বহিষ্কার কর্মসূচি চালু করা, তেল উত্তোলন বৃদ্ধি করা এবং ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হামলায় অভিযুক্ত কিছু সমর্থককে ক্ষমা করা।