বুধবার   ১৩ আগস্ট ২০২৫   শ্রাবণ ২৯ ১৪৩২   ১৮ সফর ১৪৪৭

ট্রাম্পের অভিষেক উপলক্ষে সর্বোচ্চ সতর্কতা ওয়াশিংটনে

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৭:২৭ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ বুধবার

আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নিতে যাচ্ছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে গোটা ওয়াশিংটন।

জানা গেছে, ওয়াশিংটনে স্থাপন করা হয়েছে কালো রঙের ৩০ মাইল (৪৮ কিলোমিটার) দীর্ঘ ও উঁচু অস্থায়ী বেড়া। মোতায়েন করা হয়েছে ২৫ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তা। লাখ লাখ দর্শকের জন্য বসানো হয়েছে নিরাপত্তাচৌকি। সর্বোপরি ব্যাপক সতর্কতার মধ্য দিয়ে অভিষেক হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের।

মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলের সিঁড়িতে শপথ নেবেন ট্রাম্প। এরপর হোয়াইট হাউসের উদ্দেশে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে।

এমন একসময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক হতে যাচ্ছে, যখন কয়েক মাসে বেশ কিছু হামলার সাক্ষী হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানে দু’বার ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর প্রাণঘাতী হামলা হয়। এর মধ্যে এক হামলায় সম্ভাব্য গুপ্তঘাতকের ছোড়া গুলি ট্রাম্পের কান স্পর্শ করে চলে যায়।

অন্যদিকে নববর্ষের দিন যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিকদের ওপর দুটি হামলার ঘটনা ঘটে। সাবেক এক মার্কিন সেনাসদস্য নববর্ষের উৎসবে জড়ো হওয়া মানুষদের ওপর একটি ট্রাক উঠিয়ে দেন। এ হামলায় ১৪ জন নিহত হয়, আহত হয় কয়েক ডজন।

একই দিন লাস ভেগাসে ট্রাম্পের মালিকানাধীন একটি হোটেলের বাইরে টেসলা সাইবার ট্রাক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মহত্যা করেন দায়িত্ব পালনরত এক সেনাসদস্য।

গত সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ এজেন্ট ইনচার্জ ম্যাট ম্যাককুল বলেন, “আমরা ব্যাপক হুমকিতে আছি।”

অভিষেক অনুষ্ঠানে কংগ্রেস, সুপ্রিম কোর্ট ও নতুন প্রশাসনের সদস্য এবং লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ওয়াশিংটন স্মৃতিস্তম্ভের দিকে মুখ করে ক্যাপিটল হিলের সিঁড়িতে শপথ নেবেন ট্রাম্প। ঠিক একই জায়গায় ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের হাজারো সমর্থক ভাঙচুর চালান, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান এবং আইনপ্রণেতারা জীবন নিয়ে পালাতে বাধ্য হন। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে পরাজয় না মানতে পেরেই এসব কর্মকাণ্ড চলে।

মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেন, অভিষেক অনুষ্ঠানে নির্দিষ্ট ও সুপরিকল্পিত কোনও হামলা সম্পর্কে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। তবে নিউ অরলিয়েন্সের হামলাকারী অথবা গত সপ্তাহের ভিন্ন দুটি হামলার মতো একক কোনও হামলাকারী নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা।

অন্যদিকে মার্কিন ক্যাপিটল পুলিশ জানিয়েছে, ক্যাপিটলের কাছে আগুন দেওয়ার চেষ্টাকালে একজনকে আটক করা হয়েছে।

ক্যাপিটল পুলিশের প্রধান থমাস ম্যাঙ্গার নিরাপত্তাসংক্রান্ত ব্রিফিংয়ে বলেন, “আগামী সপ্তাহজুড়ে আমাদের এই উচ্চসতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় যুক্তি একক হামলাকারীরা।”

সোমবার এফবিআই ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ নিউ অরলিয়েন্সের ঘটনার মতো হামলার ঝুঁকি সম্পর্কে দেশব্যাপী পুলিশকে সতর্ক করেছে।

ওয়াশিংটন উপকণ্ঠে হোয়াইট হাউস থেকে ক্যাপিটল হিল পর্যন্ত প্রায় দুই মাইল (তিন কিলোমিটার) এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকবে। প্রবেশপথগুলো কংক্রিটের বাঁধ, আবর্জনার ট্রাক ও অন্যান্য ভারী জিনিসপত্র দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

৩০ মাইল দীর্ঘ ও ৭ ফুট উঁচু একটি কালো বেড়া স্থাপন করা হয়েছে। এটি এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে, যাতে না চড়া যায়। ন্যাশনাল গার্ডের ৭ হাজার ৮০০ সেনা এবং সারাদেশের পুলিশের অন্যান্য বিভাগ থেকে ৪ হাজার কর্মকর্তাকে নিরাপত্তা বাহিনীতে নিয়োজিত করা হবে। সূত্র: রয়টার্স