সোমবার   ০৫ মে ২০২৫   বৈশাখ ২২ ১৪৩২   ০৭ জ্বিলকদ ১৪৪৬

তীব্রতর হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ

হাসান মাহমুদ

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:৪৭ এএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ শনিবার

মাছ, মাংস, ডিম থেকে কম্পিউটার পর্যন্ত সারিসারি চীনা পণ্য আমদানি

 

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প  আগামী ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ক্ষমতা গ্রহণ করার পর চীনের বিভিন্ন পণ্যের ওপর ট্যারিফ আরোপ করার ঘোষণা দিয়েছেন। এর ফলে চীন থেকে আমদানীকৃত বিপুল পণ্যের দাম বেড়ে যাবার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাতে সাধারণ ভোক্তাকে অনেক বেশি দামে পণ্য ক্রয় করতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্রাম্প সরকারের ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। ২০২৩ সালে ৫০১.২২ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্য যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করেছে বলে তথ্যসূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে মাছ, মাংস, সী ফুড থেকে শুরু করে মূল্যবান কম্পিউটার পর্যন্ত রয়েছে। বর্তমানে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
২০২৩ সালে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি আমদানি করেছে ১২৪.৫২ বিলিয়ন ডলারের। একই বছর ২.৩৫ বিলিয়ন ডলারের তামাক জাতীয় পণ্য আমদানি করেছে। মাছ, মাংস, সীফুড আমাদানি করেছে ৮৯৮.৩০ মিলিয়ন ডলারের। ৬.২৩ মিলিয়ন ডলারের ডিম আমদানি করা হয়। একই সময়ে মিনারেল, ফুয়েল, অয়েল আমদানি করেছে ৯২৬.১৯ মিলিয়ন ডলারের। পারফিউম থেকে শুরু করে বিভিন্ন কসমেটিক্স আমদানি করেছে ১.৮১বিলিয়ন ডলারের। রেলের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়েছে ১.১৮ বিলিয়ন ডলারের। কম্পিউটার আমদানি করেছে ৫১.৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের। এছাড়া আমদানি করা বিপুল নিত্যপণ্যে ওপর নির্ভরশিল সাধারণ ভোক্তাদের জীবন থমকে যাবে যদি পণ্যমূল্য ক্রয়সীমার বাইরে চলে যায়।
বাণিজ্য নিয়ে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে এমন উত্তেজনা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট (নির্বাচিত)  ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ২০শে জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে পরবর্তী চার বছরের জন্য যাত্রা শুরু করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচিত হওয়ার পর পরই শি জিনপিংকে জানুয়ারির অভিষেক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। তবে শি জিন পিং এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন কি না সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।  বার্তা সংস্থাকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনের দূতাবাস। তবে সম্প্রতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের যোগাযোগ হয়েছে বলে জানা গেছে।  এনবিসি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প নিজেই এ বিষয়টি জানিয়েছেন। ক্ষমতা গ্রহণের আগেই চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। বলা হয়েছে, বেইজিং যদি ভয়াবহ মাদকদ্রব্য ‘ফেন্টানাইল’র পাচার বন্ধে কোনো উদ্যোগ না নেয় তাহলে অতিরিক্ত শুল্কনীতির কবলে পড়বে চীন। এর আগে নির্বাচনী প্রচারণার সময় চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট  ডোনাল্ড ট্রাম্প। বেইজিং ইতোমধ্যে সতর্ক করে বলেছে,  পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক বাস্তবায়িত হলে বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনৈতিক বলয়ের মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্য যুদ্ধ দ্রুতই ত্বরান্বিত হবে।