রোববার   ২৪ আগস্ট ২০২৫   ভাদ্র ৮ ১৪৩২   ২৯ সফর ১৪৪৭

কেনো জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র

নিউজ ডেস্ক

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৩৫ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২৪ মঙ্গলবার

অবশেষে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজা উপত্যকায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তির বিষয়টিও উল্লেখ রয়েছে।

সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে প্রস্তাবটিতে ভোটের জন্য তোলার পর সব সদস্য পক্ষে ভোট দেয় শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া। দেশটি এবার ভোটদানে বিরত ছিল।

তবে এবারের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিপক্ষে কোনো যুক্তি বা ভেটো দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এর আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত জাতিসংঘের সব প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে দেশটি।

গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিন দিন অসন্তোষ বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো না দেওয়াকে সেই টানাপড়েনেরই প্রতিফলন মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন যে জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ক্রমবর্ধমান হতাশার ইঙ্গিত দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যাডাম শাপিরোর মতে “এটা একটা পরিবর্তন। তবে এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ করা বন্ধ করেনি। এবং সত্যিকার অর্থে এটাই গুরুত্বপূর্ণ।”

তবে ফিলিস্তিনি অধিকার কর্মীদের যুক্তি ইসরায়েলের প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থন পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন।

তবে ভেটো না দিলেও ওয়াশিংটন এই প্রস্তাবটিকে "অপর্যাপ্ত" হিসাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান পরিবর্তনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

বাইডেনের অবস্থান
আইনজীবীরা বলছেন যে এখন প্রশ্ন হল বাইডেন প্রশাসন গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অপব্যবহার বন্ধ করতে দেশটিকে চাপে ফেলতে তার ক্ষমতা ব্যবহার করবে কিনা।

বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা ইসরায়েলি সরকারকে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে এবং গাজাতে আরও সাহায্য সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু সেই লক্ষ্যগুলিকে এগিয়ে নিতে ইসরায়েলকে কোন চাপ দিতেও অস্বীকার করছেন।

ফিলিস্তিনি থিংক ট্যাঙ্ক আল-শাবাকারের মার্কিন পলিসি ফেলো তারিক কেনি-শাওয়াবলেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কি তার আসল পরীক্ষা হল ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করবে কিনা।

তিনি কেনি-শাওয়া আল জাজিরাকে একটি ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়েছেন যে, "গাজায় হামলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইসরায়েল এবং নেতানিয়াহুকে প্রয়োজনীয় সমস্ত সরঞ্জাম সরবরাহ অক্টোবর থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত রয়েছে।"

গুরুত্বপূর্ণ' ভোট
মার্কিন গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির প্রেসিডেন্ট ন্যান্সি ওকাইল বলেছেন যে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সোমবারের ভোট "তাৎপর্যপূর্ণ" কারণ এটি মার্কিন নীতিকে যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে তার বক্তব্যের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে এবং নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে হুমকি তৈরি করেছে।

তিনি আরও বলেন, নেতানিয়াহু প্রথমবারের মতো মার্কিন দাবির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তোলপাড় করেছেন। তবে, এটি এখনও অনেক দেরি এবং এখনও যথেষ্ট নয় বলছেন ওকাইল।