বুধবার   ২৭ আগস্ট ২০২৫   ভাদ্র ১২ ১৪৩২   ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

এআইয়ের নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যসহ ১৮ দেশের চুক্তি

নিউজ ডেস্ক

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৪:০৮ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০২৩ মঙ্গলবার

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১৮টি দেশ। এ চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানি শুরু থেকেই নিরাপদে এ প্রযুক্তির বিকাশ করবে বলে মার্কিন এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, সম্প্রতি প্রকাশিত ২০ পৃষ্ঠার এক নথিতে ১৮টি দেশ একমত পোষণ করেছে। নথিতে বলা হয়, এআই প্রযুক্তি নকশা ও ব্যবহার করা কোম্পানিগুলোকে এমনভাবে এর বিকাশ করতে হবে যাতে গ্রাহক ও জনসাধারণ এর অপব্যবহার ও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষিত থাকে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন এ আন্তর্জাতিক চুক্তি বাধ্যতামূলক নয়। আর এর বেশির ভাগ সুপারিশই সাধারণ পর্যায়ের। উদাহরণ হিসেবে বিভিন্ন এআই ব্যবস্থার সম্ভাব্য অপব্যবহার বন্ধ, ডাটা টেম্পারিং বা ক্ষতির হাত থেকে সুরক্ষা ও সফটওয়্যার সরবরাহকদের যাচাই করার মতো বিষয়গুলোর কথা বলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা সিআইএসএর পরিচালক জেফ ইস্টারলি বলেন, ‘এআই ব্যবস্থাকে নিরাপদ রাখার এ চুক্তিতে এতগুলো দেশের অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’

তিনি বলেন, ‘নতুন এ চুক্তিতে আমরা প্রথমবার দেখেছি, এআইয়ের সক্ষমতা কেবল ভালো ফিচার দিয়ে যাচাই করা উচিত নয়, বরং এগুলো কত দ্রুত বাজারে আসে ও কীভাবে এর খরচ কমানো যায়, সে বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হবে। চুক্তি অনুসারে, এআই প্রযুক্তির নকশা করার সময়ই এর নিরাপত্তা নিয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে।’

চুক্তিটি একটি ধারাবাহিক উদ্যোগের অংশ। এর মাধ্যমে এআইয়ের বিকাশকে একটি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী বাকি দেশগুলো হলো জার্মানি, ইতালি, চেক প্রজাতন্ত্র, এস্তোনিয়া, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চিলি, ইসরায়েল, নাইজেরিয়া ও সিঙ্গাপুর।

এআই প্রযুক্তিকে কীভাবে সাইবার হামলাকারীদের কাছ থেকে সুরক্ষিত রাখা যায় এবং এআই মডেল প্রকাশ পাওয়ার পর এতে কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষা করা হয়েছে চুক্তিতে এ বিষয়গুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, এআইয়ের যথাযথ ব্যবহার বা বিভিন্ন এআই মডেলের তথ্য সংগ্রহের উপায় নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা হয়নি।

এআই প্রযুক্তির উত্থান নিয়ে বেশকিছু উদ্বেগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করা, জালিয়াতি, চাকরি ছাঁটাই ও অন্যান্য কাজে এ প্রযুক্তির সম্ভাব্য অপব্যবহার। উন্নত এ প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিভিন্ন খসড়া নীতি প্রণয়ন করে যুক্তরাষ্ট্রের আগেই পদক্ষেপ নিয়েছে ইউরোপ। সম্প্রতি এ প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণে ত্রিপাক্ষীয় চুক্তি করেছে ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালি। অন্যদিকে বাইডেন প্রশাসনও নিজ দেশের আইন প্রণেতাদের এআই নিয়ে নীতিমালা তৈরির জন্য চাপ দিচ্ছেন। তবে মার্কিন কংগ্রেস এআইয়ের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে এখনো সে রকম কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

অন্যদিকে মার্কিন গ্রাহক, কর্মী ও অন্যান্য সংগঠনের ওপর এআই প্রযুক্তির সম্ভাব্য জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে অক্টোবরে নতুন এক নির্বাহী আদেশ জারি করেছে হোয়াইট হাউজ।

নতুন চুক্তির বিষয়ে যখন প্রযুক্তি জগতে আলোচনা চলছে তখন এআই-নির্ভর চ্যাটবট অমূলক বা ভ্রান্ত তথ্য দিতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে গুগলের মালিকানা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট।

জার্মানির ওয়েল্ট অ্যাম সনট্যাগ সংবাদপত্রকে দেয়া সাক্ষাৎকারে গুগল সার্চের প্রধান ও গুগলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রভাকর রাঘাভান বলেন, ‘‌বর্তমানে আমরা যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আলোচনা করছি এটি কোনো একসময় হ্যালুসিনেশন বা মতিভ্রম তৈরি করবে।’

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চ্যাটবটের কার্যক্রমের কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মেশিনটিকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করা হলে হয়তো গ্রহণযোগ্য কোনো উত্তর দেবে। কিন্তু আসলে এর পুরোটাই বানোয়াট।’