মার্কিন নাগরিক শিখ নেতাকে হত্যা চেষ্টা
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৫:২৫ এএম, ২৫ নভেম্বর ২০২৩ শনিবার

ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি
আজকাল রিপোর্ট
যুক্তরাষ্ট্রে একজন শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে হত্যার ভারতীয় চক্রান্ত উদঘাটিত হওয়ার পর বাইডেন প্রশাসন দিল্লিকে কড়া হুুঁশিয়ারি প্রদান করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে এই হত্যাকান্ড সংঘটন চেষ্টার চক্রান্তের সাথে ভারত সরকারের জড়িত থাকার তথ্য বাইডেন প্রশাসনের হাতে এসেছে বলেও মোদি সরকারকে জানান হয়েছে।
গুরপাতবন্ত সিং পান্নুন নামের এই শিখ নেতার হত্যার চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় এই কর্মকর্তারা তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। পান্নুন একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার নাগরিক। তিনি শিখদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি গ্রুপের নেতা।
গত বুধবার ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবরে বলা হয়েছে, পান্নুনকে হত্যা চক্রান্তের এই বিষয়টি তদন্তের জন্য হোয়াইট হাউস ভারতীয় সরকারের ওপর চাপ প্রদান অব্যাহত রেখেছে। এ প্রসঙ্গে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র অড্রিয়েন ওয়াটসন বলেছেন, আমরা এই বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র সরকার এটি ভারত সরকারের কাছে উত্থাপন করেছে। সিনিয়ার মোস্ট কোন পর্যায়ে বিষয়টি আলোচনার জন্য পেশ করা হবে।
ভারত এই অভিযোগ সম্পর্কে বিস্ময় ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন ওয়াটসন। ভারত বলেছে, এ ধরনের কার্যক্রম চালানো ভারতীয় নীতি নয়। ওয়াটসন বলেন, আমরা আশা করব ভারত এ ব্যাপারে আরো তদন্ত করবে। ভবিষ্যতে তাদের কাছ থেকে আমরা আরো কিছু জানতে পারব বলেই মনে করি। তিনি বলেন, আমরা আমাদের কথা ভারতকে জানিয়েছি। আমরা চাইব এ ব্যাপারে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে খালিস্তানপন্থি শিখ নাগরিককে হত্যার ঘটনায় কানাডার সঙ্গে বিরোধে জড়ায় ভারত। কানাডায় বসবাসকারী শিখ নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জর খুন হয়েছিলেন গত জুন মাসে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ভারতের বিরুদ্ধে শিখ নেতা হত্যার অভিযোগ আনেন। এমনকি ওই ঘটনায় বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে বলেও জানান ট্রুডো। সেই সঙ্গে ভারতকে তদন্তে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রও ভারতকে তদন্তে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।
তবে কানাডীয় প্রধানমন্ত্রীর ওই দাবি প্রত্যাখ্যান করে ভারত। নয়াদিল্লি পাল্টা দাবি করে যে, কানাডার কাছে যেসব তথ্য রয়েছে, তা ভারতকে দেওয়া হোক। পরবর্তীকালে ভারতের দাবি, কানাডা সে তথ্য পেশ করেনি। কানাডার অভিযোগ, তদন্তে সহযোগিতা নিয়ে ভারত কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
এ নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় ভারত ও কানাডা। দেখা দেয় কূটনৈতিক সংকট। একে অপরের কূটনীতিক বহিষ্কারের পথে হাটে দেশ দুটি। ভারত ও কানাডার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে শীতলতা এখনো কাটেনি। তার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে একই ধরনের অভিযোগ পেল ভারত।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কূটনৈতিকভাবে ভারতকে সতর্ক করার পাশাপাশি মার্কিন কেন্দ্রীয় কৌঁসুলিরা নিউইয়র্কের একটি ডিস্ট্রিক্ট আদালতে একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগপত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে গুরপতবন্ত সিং পান্নুন নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।