গাজা ইস্যু
বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৩:০৭ এএম, ১৮ নভেম্বর ২০২৩ শনিবার

মুসলিম হলেন মেগান
আজকাল রিপোর্ট
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের ‘গণহত্যা’ বন্ধে ব্যর্থতা এবং এই বর্বরতায় উল্টো প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। একইসঙ্গে আসামি করা হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনকেও।
গত সোমবার ক্যালফোর্নিয়ার ফেডারেল আদালতে মামলাটি দায়ের করেছে নিউইয়র্ক ভিত্তিক নাগরিক স্বাধীনতা গ্রুপ সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস (সিসিআর)।
ফিলিস্তিনের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিরা এবং অবরুদ্ধ উপত্যকায় থাকা মার্কিন নাগরিকদের স্বজনদের পক্ষে মামলাটি দায়ের করেছে সিসিআর।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এরপর থেকে গাজায় প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। এতে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু। এই সংঘাতে ইসরাইলকে অস্ত্র-গোলাবারুদ দিয়ে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাইডেন ও দুই মন্ত্রীর নামে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সরকারের অনেক নেতা পরিষ্কারভাবে গণহত্যার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন এবং ফিলিস্তিনিদের ‘মানব জন্তু’ বলাসহ বিভিন্ন অমানবিক চরিত্রাঙ্কন করেছেন।
এই বিবৃতিগুলোকে যদি ফিলিস্তিনিদের ওপর ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে মেলানো হয়, তাহলে এটি ‘গণহত্যার সুস্পষ্ট প্রমাণ’ হয়ে ওঠে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টিকটকার মেগান রাইস সম্প্রতি গাজা যুদ্ধের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি এতো ধ্বংসযজ্ঞের পরও ফিলিস্তিনিদের অটল বিশ্বাসে নিজের মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। তাদের এই দৃঢ়তার প্রশংসাও করেন তিনি। এই ভিডিওতে অনেকেই কমেন্ট করেন। সেখানে তারা বলেছেন, এই দৃঢ়তার পেছনে রয়েছে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস। এতে তিনি খুবই বিস্মিত হলেন। একটি বিশ্বাসের জন্য কেমন জীবন দিয়ে যাচ্ছে শত শত মানুষ। শত নির্যাতনের পরও কত অটল রয়েছে অনুসারীরা। এতে ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহ হলো তার।
তিনি নানা মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলেন। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বে ইসলাম সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া দুষ্কর। ইসলাম সম্পর্কে নানা প্রবন্ধ-নিবন্ধ পড়লেন। অত ভালো কোনো তথ্য পেলেন না। এতে তার বিশ্বাস হলো না। তিনি ভাবলেন, যে বিশ্বাসের জন্য অনুসারীরা এভাবে জীবন দিয়ে দিতে পারে, সেটা এতোটা নেতিবাচক হতে পারে না। সেজন্য তিনি আরো অগ্রসর হলেন। ইসলামের পবিত্রগ্রন্থ কোরআন পড়া শুরু করলেন।
তিনি যতই কোরআনের গভীরে প্রবেশ করছেন, তার বিস্ময় আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি একে একে কোরআনের নানা ঘটনা পড়ছেন, বিভিন্ন সাম্যপূর্ণ বিধান দেখছেন, এভাবে তিনি অনুভব করলেন যে ইসলাম সম্পর্কে তার জ্ঞান সত্যিই সীমিত ছিল। তিনি ইসলাম বলতে কেবল বুঝতেন, কোনো বাধা ছাড়াই ইসলামে নারীদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানো যাবে। আবার ইচ্ছে হলো পুরুষ ফিরিয়েও নিতে পারবে। এছাড়া ইসলামে তেমন স্বাধীনতাও নেই।
কোরআন পড়ার পর তার মন পরিবর্তন হয়ে যায়। ইসলামের সৌন্দর্যে তিনি বিমোহিত হন। এরপর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। পরে তিনি স্বীকার করেছেন যে কিভাবে তার ইসলাম সম্পর্কে পূর্বের ধারণা পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। তিনি কোরআনের প্রতি তার শ্রদ্ধা প্রকাশ করে বলেছেন, কোরআনের নীতিগুলো তার আদর্শ ও বিশ্বাসের সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এই ঘটনার পর একটি ভিডিওতে মেগানকে কালেমা শাহাদাৎ পাঠ করতে এবং প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণ করতে দেখা গেছে।