বুধবার   ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ২৫ ১৪৩২   ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

৫টি আসনে জামানত হারাল বিএনপির ৩ প্রার্থী সহ ২৯ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৭:০৮ পিএম, ১ জানুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে জামানত হারিয়েছেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৩ প্রার্থীসহ ২৯ জন প্রার্থী। মোট প্রদত্ত ভোটের শতকরা আট ভাগের একভাগের নীচে ভোট পাওয়ায় তারা জামানতের অর্থ ফেরত পাচ্ছেন না। যার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে ধানের শীষের প্রার্থীসহ ৭ জন, নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে ধানের শীষের প্রার্থীসহ ৩ জন, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনে ধানের শীষের প্রার্থীসহ ৭ জন, নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে ৬ জন, নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) আসনে ৬ জন জামানত হারিয়েছেন।

নির্বাচন বিধি অনুযায়ী, কোন প্রার্থী মোট প্রদত্ত ভোটের শতকরা আট ভাগের একভাগের নীচে ভোট পেলে তিনি জামানত হারাবেন। ফলে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় সরকারের ঘরে জমা দেয়া জামানতের অর্থ ফেরত পাবেন না। সংসদ সদস্য পদে প্রার্থীরা ২০ হাজার টাকা জামানত জমা দিয়েছিলেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৭শ` ৯১ জন। তার মধ্যে বাতিল ছাড়া সর্বমোট ভোট পড়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৭৯৪টি। ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭’শ ৩৯ ভোট পেয়ে মহাজোট প্রার্থী নৌকা প্রতিক গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) এমপি বে-সরকারী ভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতীদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ধানের শীষ কাজী মনিরুজ্জামান মনির ১৬ হাজার ৪’শ ৩৪ পেয়েছেন ভোট।  এছাড়া জাকের পার্টির মনোনিত প্রার্থী  (গোলাপ ফুল) মাহফুজুর রহমান পেয়েছেন ১ হাজার ৩’শ ৭৬ ভোট, জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী (লাঙ্গল) আজম খাঁন পেয়েছেন ৪’শ ১ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনিত প্রার্থী (হাত পাঁখা) ইমদাদুল্লাহ হাসেমী পেয়েছেন ৬ হাজার ৩৮ ভোট, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির মনোনিত প্রার্থী (কাস্তে) মনিরুজ্জামান চন্দন পেয়েছেন ৩’শ ৩৬ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রেহান আফজাল (আপেল) পেয়েছেন ৯৭ ভোট ও হাবিবুর রহমান হাবিব (সিংহ) পেয়েছেন ৩’শ ৭৩ ভোট। মোট প্রদত্ত ভোটের শতকরা আট ভাগের একভাগ হলো ৩৩ হাজার ৫৯৯ ভোট। অত্র আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছাড়া বাকী সব প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৮৩ হাজার ৮শ` ৬৭ জন। বাতিলসহ প্রদত্ত ভোট ২ লাখ ৫২ হাজার ৬২৪ ভোট। নৌকা প্রতীকে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু ২ লাখ ৩২ হাজার ৭২৩ ভোট, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদ পেয়েছেন ৫ হাজার ১১১ ভোট, হাত পাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নাসির উদ্দিন ৩ হাজার ১১৬ ভোট, কাস্তে  প্রতীকের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) হাফিজুল ইসলাম পেয়েছেন ১ হাজার ৯৩৫ ভোট। বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৭৩৯ ভোট। মোট প্রদত্ত ভোটের শতকরা আট ভাগের একভাগ হলো ৩১ হাজার ৫৭৮ ভোট। অত্র আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছাড়া বাকী সব প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনে ১১৮টি ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩ হাজার ৮শ` ৭২ জন। বাতিল ছাড়া প্রদত্ত ভোট ২ লাখ ৩২ হাজার ৫১৪ ভোট। লাঙ্গল প্রতীকে মহাজোটের মনোনীত জাতীয় পার্টি দলীয় বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৮৫ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। অপরদিকে ধানের শীষের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আজাহারুল ইসলাম মান্নান পেয়েছেন ১৮ হাজার ৪৭ ভোট। সিংহ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল কায়সার পেয়েছেন ২ হাজার ৮৪৪ ভোট, হাত পাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ছানাউল্লাহ নূরী পেয়েছেন ৯ হাজার ৯৪০ ভোট, ফুলের মালা প্রতীকের বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী মজিবুর রহমান মানিক ২৪৯ ভোট, কাস্তে প্রতীকের সিপিবির আব্দুস সালাম বাবুল ৩৮৫ ভোট, তারা প্রতীকের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির এএনএম ফখরুদ্দিন ১০৮ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকের জাকের পার্টির মো. মুরাদ হোসেন জামাল পেয়েছেন ৩ হাজার ১৫৬ ভোট। মোট প্রদত্ত ভোটের শতকরা আট ভাগের একভাগ হলো ২৯ হাজার ৬৪ ভোট। অত্র আসনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ছাড়া বাকী সব প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে মোট ভোটার ৬ লাখ ৫১ হাজার ৯৯জন। বাতিল ছাড়া প্রদত্ত ভোট ৪ লাখ ৯২ হাজার ৬৭৬ ভোট। নৌকা প্রতীকে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ২১৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ১৩৬ ভোট পেয়ে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। অপরদিকে ধানের শীষ পেয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী মুফতী মনির হোসেন কাসেমী পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৫৮২ ভোট। হাত পাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ২১ হাজার ৫২৪ ভোট, মই প্রতীকের বাসদের সেলিম মাহমুদ পেয়েছেন ৩৩৫ ভোট, কাস্তে প্রতীকের সিপিবির ইকবাল হোসেন পেয়েছেন ২৯৯ ভোট, কোদাল প্রতীকের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মাহমুদ হোসেন ২৯০ ভোট, গাভী প্রতীকের বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ ন্যাপ এর ওয়াজিউল্লাহ মাতব্বর অজু পেয়েছেন ১৪৮ ভোট, বটগাছ প্রতীকের বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মোঃ জসিম উদ্দিন পেয়েছেন ৩৬২ ভোট। মোট প্রদত্ত ভোটের শতকরা আট ভাগের একভাগ হলো ৬১ হাজার ৫৮৪ ভোট। অত্র আসনে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ছাড়া বাকী সব প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) আসনে ১৭১ ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৬শ` ১৬ জন। বাতিল ছাড়া প্রদত্ত মোট ভোট ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৫৩৪ ভোট। লাঙ্গল প্রতীকের মহাজোট মনোনীত জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান পেয়েছেন ২ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪৫ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। ধানের শীষ প্রতীকের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা সাবেক এমপি এস এম আকরাম পেয়েছেন ৫২ হাজার ৩৫২ ভোট। হাত পাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আবুল কালাম মুন্সী পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৩৭ ভোট, কাস্তে প্রতীকের সিপিবির অ্যাডভোকেট মন্টুঘোষ পেয়েছেন ৮১৮ ভোট, মই প্রতীকের বাসদের আবু নাঈম খান বিপ্লব পেয়েছেন ৭১৪ ভোট, চেয়ার প্রতীকের ইসলামী ঐক্যফ্রন্টের বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদী পেয়েছেন ২ হাজার ৬৭৫ ভোট, দেওয়াল ঘড়ি প্রতীকের খেলাফত মজলিশের মনোনিত হাফেজ মোঃ কবির হোসেন পেয়েছেন ৩০৪ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকের জাকের পার্টির মোর্শেদ হাসান পেয়েছেন ১ হাজার ৩৮৯ ভোট। মোট প্রদত্ত ভোটের শতকরা আট ভাগের একভাগ হলো ৪২ হাজার ৯৪১ ভোট। অত্র আসনে লাঙ্গল ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ছাড়া বাকী সব প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।