সোমবার   ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ১৭ ১৪৩২   ০৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

বাইডেনকে ৭৫ কংগ্রেসম্যানের চিঠি

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:৩৩ এএম, ২৪ জুন ২০২৩ শনিবার

মোদীর বিরোধিতায় ৩ কাউন্সিল মেম্বার

আজকাল রিপোর্ট
ভারতে ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, জনগণের রাজনৈতিক অধিকার ক্রমাগত সংকুচিত করা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করা প্রভৃতি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাথে আলোচনার তাগিদ দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন কংগ্রেসের ৭৫ জন সদস্য। তারা প্রেসিডেন্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, ভারত থেকে ক্রমাগত যে সব খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে জানা যাচ্ছে সেখানে সংখ্যালঘুদের প্রতি ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, সিভিল সোসাইটির সংগঠন ও সাংবাদিকরা হুমকি ও আক্রমনের শিকার হচ্ছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও ইন্টারনেট সুযোগ-সুবিধার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে, বাক স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা হচ্ছে।
এদিকে নিউইয়র্ক স্টেট ও সিটির দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভুত তিনজন নির্বাচিত প্রতিনিধি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিউইয়র্ক আগমনের বিরোধিতা করেছেন। নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি সদস্য জোহরান মামদানি, সিটি কাউন্সিল সদস্য শাহানা হানিফ ও শেখর কৃষ্ণান এক বিবৃতিতে মোদীকে গুজরাটে মুসলিম হত্যাযজ্ঞের হোতা হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, আমাদের এই শহরে নরেন্দ্র মোদীর আগমন আমাদেরকে মর্মাহত করেছে।   
প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে পাঠানো ৭৫ জন কংগ্রেস সদস্য স্বাক্ষরিত চিঠিটি প্রেরক হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন  সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন এবং সদস্য প্রমিলা জয়পাল। চিঠিতে ‘ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়স ফ্রিডম ইন ইন্ডিয়া’র উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি অসহিষ্ণুতা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ধর্মীয় সহিংসতা আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। আবার ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার’-এর তথ্যে বলা হয়েছে, যে ভারত একদা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের অধিকারের ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত ছিল সেই ভারতের প্রচার মাধ্যম এখন নিষ্পেষিত হচ্ছে।  ‘একসেস নাউ’-এর তথ্য অনুসারে ইন্টারনেট সুবিধা বন্ধ করে দেয়ার ক্ষেত্রে ভারত এখন সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে।
চিঠিতে তারা প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার সাথে সাথে আমরাও প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আমাদের দেশে স্বাগত জানাই। কিন্তু আমাদের দৃঢ় অবস্থান আমেরিকার পররাষ্ট্র নীতির মূল আদর্শের পক্ষে। আমরা আপনাকে অনুরোধ জানাচ্ছি মোদীর সাথে বৈঠকে আপনি এই বিষয়গুলি বিস্তারিত আলোচনা করবেন, যা আমাদের দুই মহান দেশের মধ্যে শক্তিশালী, সফল এব্ং দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব গড়ে তোলার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
মোদীর সফর সম্পর্কে নিউইয়র্কের তিন নির্বাচিত প্রতিনিধি তাদের বিবৃতিতে বলেছেন, অতীত রেকর্ড থেকে দেখা যায় নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে সেখানে ভয়াবহ মুসলিম হত্যাযজ্ঞে ইন্ধন দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার কার্যকলাপে দেখা যাচ্ছে তিনি প্রতিবাদকারীদের জেলে পুরছেন, সাংবাদিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছেন এবং ভারতের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামো থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মুছে দিতে চাইছেন। মোদী ভারতীয় জাতিকে ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র থেকে নতুন আদল দিয়ে দক্ষিণপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চলেছেন।
তারা বলেন, নিউইয়র্ক সিটি যে মূল্যবোধ ধারণ করে মোদীর নিপীড়নমূলক অন্যায্য নীতিসমূহ তার  পরিপন্থী। এই মহান নগরীতে মোদীর আগমনের বিরুদ্ধে নিন্দা জ্ঞাপনে তাদের সাথে শরিক হওয়ার জন্য তারা সকল নিউইয়র্কবাসী ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান।