সোমবার   ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ১৭ ১৪৩২   ০৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

বাংলাদেশ প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের একলা চলো নীতি

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:৩১ এএম, ২৪ জুন ২০২৩ শনিবার


মাসুদ করিম, ঢাকা থেকে -
বাংলাদেশের প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র একলা চলো নীতি গ্রহণ করেছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ওয়াশিংটনের হার্ডলাইন অবস্থানের সঙ্গে তার সহযোগী দেশগুলো যোগ দিচ্ছে না। যদিও সকল দেশই বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার প্রয়োজনীয়তাকে সমর্থন করছে; তবে তা বাস্তবায়নে প্রত্যেক দেশের গতিপথ ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্র কঠোর চাপ প্রয়োগ করে নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাইছে। তার অংশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করে বলেছেন, সংবিধানের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর কাছেই কেবল প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। তিনি বিরোধী দলের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র নিজেও ভিসানীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সুপারিশ করেনি। বরং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার আহ্বান জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হঠাৎ এই হার্ডলাইন অবস্থানের কারণ কী তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা। অনেকে বলছেন, বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম অনানুষ্ঠানিক উপদেষ্টা হিলারি ক্লিনটন এই পলিসি গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকতে পারেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, বাইডেন প্রশাসনের প্রধান টার্গেট মিয়ানমার। যুক্তরাষ্ট্রের চাপের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে যে সরকার আসবে; সেই সরকার ওয়াশিংটনের অনুগত হবে। বাংলাদেশে নতুন সরকারের মাধ্যমে মিয়ানমারের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের পলিসি বাস্তবায়ন সহজ হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিবেশি ভারত কিছুতেই ওয়াশিংটনের নীতির সঙ্গে একমত হতে পারছে না। ভারত মনে করে, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় না থাকলে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যে হুমকি হবে। চীনের সঙ্গে ভারতের শিলিগুড়ি সীমান্ত খুবই স্পর্শকাতর। সেখানে প্রায়শই চীনের গোয়েন্দারা ঢুকে পড়ে। এই অবস্থায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যে নিরাপত্তার ঝুঁকি দিল্লি কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। ভারতের স্বার্থরক্ষায় শেখ হাসিনার বিকল্প এখনও নেই।
বাংলাদেশে জাপানের বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ রয়েছে। ইতিমধ্যে বঙ্গোপসাগরে মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর এবং নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজারে বিশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ শুরু করেছে। এছাড়াও, নতুন নতুন ক্ষেত্রে আরও জাপানী বিনিয়োগ আসছে। জাপান তাই নির্বাচনে বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে না। যদিও জাপানও চায় বাংলাদেশে স্থিতিশীল অগ্রগতির স্বার্থে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।
ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের অভিমতকে ইইউ সমর্থন করে। তবে এটা করার জন্যে যুক্তরাষ্ট্র যে পথে হাঁটছে; ইইউ একই পথে হাঁটবে না। বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে ইইউ পর্যবেক্ষক পাঠাবে।