মাঠেই নামেনি মনির ও কাসেমী
নিজস্ব প্রতিবেদক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৫:১০ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সোমবার
ভোটের দিনও মাঠে নামেননি নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান। একই সাথে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের বিএনপির নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত ধানের শীষ প্রতিকের জমিয়ত উলামার প্রার্থী মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীকেও মাঠে দেখা যায়নি।
৩০ ডিসেম্ভর রোববার ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট সংসদীয় এলাকার কেথাও তাদের দেখা পাওয়া যায়নি। একই সাথে ভোট কেন্দ্রে এজেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রেও তাদের তেমন কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি।
জানা যায়, এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে নেতাকর্মীদের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও বিএনপির পক্ষ থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামানকে মনোনয়ন দেয়া হয়। ফলে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকেই তার সাথে দেখা যায়নি। যার সূত্র ধরে কাজী মনিরুজ্জামানের পক্ষে সংসদীয় এলাকায় নির্বাচনী প্রচার প্রচারণাও তেমন জমে উঠেনি। প্রায় অনেকটা ফাঁকা মাঠেই বিপক্ষ দলীয় মনোনীত প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। যদিও কাজী মনিরুজ্জামান বিপক্ষ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে হামলা-মামলা, হুমকি-ধমকির অভিযোগ করেছেন।
তবে নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কাজী মনিরুজ্জামান নেতাকর্মীদের সাথে সমন্বয় ঘটাতে পারলে অবশ্যই নির্বাচনী প্রচারণা জমজমাট হতো। কিন্তু কাজী মনিরুজ্জামান সেক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার ভোটের দিনেও সংসদীয় এলাকায় তার দেখা পাওয়া যায়নি। নেতাকর্মীদের সাথেও তার তেমন একটা যোগাযোগ রক্ষা করেনি। ফলে রূপগঞ্জ আসনের অনেক কেন্দ্রই বিএনপির কোন নেতাকর্মী ছিল না। অনেকটা খালি মাঠেই বিপক্ষের প্রার্থীরা ভোট কেন্দ্র তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনেও বিএনপির নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত ধানের শীষ প্রতিকের জমিয়ত উলামার প্রার্থী মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীকে নিয়েও স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ছিল। তাকে প্রার্থী করার বিষয়টি অনেকেই সহজভাবে মেনে নিতে পারছিলেন না। ফলে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীরও নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা জমে উঠেনি। প্রচারণা চলাকালিন সময়ে সংসদীয় এলাকায় দুই একদিনের বেশি তাকে দেখা যায়নি। একই সাথে বিএনপির নেতাকর্মীরাও তাকে সঙ্গ দেয়নি।
সর্বশেষ ভোটের দিনেও সংসদীয় এলাকায় তার দেখা পাওয়া যায়নি। ২১৬ টি ভোট কেন্দ্রের কোন একটি কেন্দ্রেও মনির হোসাইন কাসেমীকে ভোট দিতে দেখা যায়নি। এর আগে তার পক্ষে এজেন্ট ও পোলিং এজেন্টও নিয়োগ দেননি। গত ২৮ ডিসেম্বর শুক্রবার অসুস্থতার কারণে মনির হোসাইন কাসেমী রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তার এই অসুস্থতা নিয়েও স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে যথেষ্ট সন্দেহ সংশয় রয়েছে। সেদিন তাঁকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন জেলা পুলিশ সুপার হারুনুর রশিদ।
তবে বিএনপির নেতাকর্মীরা আগে থেকেই নিশ্চিত ছিলেন, ভোটের মাঠে মনির হোসাইন কাসেমী থাকবেন না। কারণ তিনি কোন কেন্দ্রেই এজেন্ট ও পোলিং এজেন্ট নিয়োগ দেননি। এ কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা খুব হতাশ ছিলেন। একই সাথে তারা এই ঘটনায় বেশ বিমর্ষও ছিলেন।
তাদের মতে, কাশেমী মূলত আওয়ামী লীগের বি টিম হিসেবে কাজ করেছে। তাই তিনি এমন অসুস্থতার নাটক সাজিয়েছেন। নির্বাচনের আগে শুনতাম কাশেমী নৌকার ডামি প্রার্থী।
প্রসঙ্গত এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোটেক তৈমূর আলম খন্দকার, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তফাজুর রহমান ভূইয়া দিপু ও জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে জেলা বিএনপির সহ সভাপতি নেতা শাহআলম, সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন এবং জেলা সেক্রেটারী অধ্যাপক মামুন মাহমুদ মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তাদের মধ্যে থেকেও প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু চূড়ান্ত পর্যায়ে এই দুইজনের বাইরে গিয়ে মনির হোসাইন কাসেমীকে মনোনয়ন দেয়া হয়।
