মঙ্গলবার   ১১ নভেম্বর ২০২৫   কার্তিক ২৬ ১৪৩২   ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

কংগ্রেসের ভাগ্য ঝুলে রইল জর্জিয়ার রানঅফে

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:৫২ এএম, ১২ নভেম্বর ২০২২ শনিবার

তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচন

 
#   ফলাফলে সন্তুষ্ট নন ডোনাল্ড ট্রাম্প
#   বাইডেনের সন্তোষ প্রকাশ
আজকাল রিপোর্ট
তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে অনুষ্ঠিত গত ৮ নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফলে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট ডেমোক্র্যাটদের দখলেই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ডেমোক্র্যাটরা সিনেটের ৪৮ ও রিপাবলিক্যানরা ৪৯টি আসনে বিজয়ী হয়েছে। বাকি রয়েছে তিনটি আসন আরিজোনা, নেভাদা ও জর্জিয়ার ফলাফল। আরিজোনাতে ডেমোক্র্যাট মার্ক কেলি জিতবেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত। নেভাদায় জেতার সম্ভাবনা রয়েছে রিপাবলিক্যান প্রার্থী এডাম ল্যাক্সাট এর। জর্জিয়াতে ৬ ডিসেম্বর হবে রান অফ ইলেকশন। কোন প্রার্থীই শতকরা ৫০ ভাগ ভোট না পাওয়ায় পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী রাফায়েল ওয়ারনফই জিতবেন। এতে সিনেটে উভয় দলের আসন হবে ৫০ করে। সিনেটের মোট ১০০টি আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে দরকার ৫১টি আসন। ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে সিনেটে উভয় দল ৫০টি করে আসন পায়।  ভাইস প্রেসিডেন্টের ভোটে ডেমোক্র্যাটরা মেজোরিটি অর্জন করবে। হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভসে এগিয়ে আছে রিপাবলিকান পাটি। তাদের আসন সর্বশেষ হিসাব পর্যন্ত ২১০টি। আর ৮টি আসনে জিতলে তারাই হবে হাউজে মেজোরিটি দল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ডেমোক্র্যাট দলের  আসন সংখ্যা ১৮৯। আর অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র ৩৬টি আসনের ফলাফল। পর্যবেক্ষরা বলছেন, হাউজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা যাচ্ছে রিপাবলিকানদের হাতেই। এমতাবস্থায় গঠিত হতে যাচ্ছে ঝুলন্ত  কংগ্রেস। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকানদের ফলাফলে খুশি নন। তিনি এ জন্য দায়ী করেছেন দলকেই। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, অগত্যা রেড ওয়েভ ঠেকানো গেছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে দুই বছর আগে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ডেমোক্র্যাাট প্রার্থী জো বাইডেন। দুই বছরে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, গর্ভপাত আইন, সহিংসতা বৃদ্ধি, অস্ত্র আইন ও পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে সমালোচনায় মুখে পড়ে বর্তমান প্রশাসন। কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ হারালে আগামী দুই বছর বাইডেনের জন্য কঠিন হতে চলেছে। কারণ নিম্নকক্ষেই কোনো আইনের সূচনা হয়। আর সিনেট সে বিল বাতিল বা অনুমোদন দিয়ে প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠায়। কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ না থাকলে বাইডেন আইন তৈরিতে সমস্যায় পড়বেন। এমনকি বৈদেশিক নীতিও প্রভাবিত হবে।
করোনা মহামারি, রাশিয়া, ইউক্রেন যুদ্ধ, আভ্যন্তরীন অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি, গর্ভপাত আইনসহ নানাবিধ ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসন অনেকটাই নাজুক পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। রিপাবলিকান পার্টি এসব ইস্যুকে পুঁজি করে ডেমোক্র্যাটদেরকে বড় ধরণের পরাজয়ের মুখে ঠেলে দিতে চেয়েছিলো। বিশেষ করে কংগ্রেসের উভয় কক্ষ হাউজ ও সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠাতা লাভে ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছে। ট্রাম্পের ভাষ্যানুযায়ী গোটা যুক্তরাষ্ট্রকে লালে লাল করে দেয়ার পরিকল্পনা ছিলো রিপাবলিকানদের। কিন্তু কার্যত বড় ধরণের ব্যবধানে ডেমোক্র্যাটদের পরাজিত করতে ব্যর্থ হয়েছে রিপাবলিকানরা। শুধু তাই নয় বাইডেন প্রশাসনকে কাঁপিয়ে তোলার লক্ষ্য ছিলো তাদের। নির্বাচনের আগে স্পিকার ন্যান্সি পেলেসীর স্বামীর উপর আক্রমনসহ ভীতি ছড়িয়ে দেয়ার অপচেষ্টাও লক্ষ্য করা গেছে। ফলে নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বড় ধরণের সহিংসতার আশংকা   করেছিল বিভিন্ন মহল। শেষ পর্যন্ত তেমনটি ঘটেনি। পুরো দেশেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে।