শনিবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১৩ ১৪৩২   ০৭ রজব ১৪৪৭

ইয়াহিয়ার উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৯:৫৮ এএম, ১৯ মার্চ ২০১৯ মঙ্গলবার

উনিশ তারিখে বৈঠক হলো প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার উপদেষ্টাদের সঙ্গে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার উপদেষ্টাদের মধ্যে বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন, এ. আর কর্নেলিয়াস, লেঃ জেঃ পীরজাদা ও জজ অ্যাডভোকেট জেনারেল কর্নেল হাসান।

 

প্রথম ও দ্বিতীয় বৈঠক শেষ করে বঙ্গবন্ধু হাসিমুখে বের হননি এবার হাসি মুখে বেরিয়ে আসতে দেখে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেন। তারা একের পর এক প্রশ্ন করেন।

 

প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কি আপনার কোন কাগজপত্র লেনদেন হয়েছে? উত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘না’। আবার প্রশ্ন করা হয় আলোচনায় কোন অগ্রগতি? বঙ্গবন্ধু উত্তর দেন ‘আপনারা অনুমান করুন’। এবার সাংবাদিকরা জানতে চান, তাহলে কি তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ অধিবেশনে যাবেন? প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন ‘আমার বক্তব্য পরিষ্কার। হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত যাবো না।’ বঙ্গবন্ধুকে ফের প্রশ্ন করা হয়, ‘ভুট্টো যদি আসেন দেখা করবেন?’ তিনি বলেছিলেন, ‘আমার দরজা সবার জন্যই খোলা। রাস্তার একজন সাধারণ মানুষও যদি আসেন তার সঙ্গে কথা বলবো।

ঢাকার যে সৈন্য-সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে সে বিষয়ে জানেন কি না প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, তিনি সব জানেন। তা সত্ত্বেও তিনি বলেছিলেন, ভালো জন্য তিনি আশাবাদী। আবার খারাপের জন্যও প্রস্তুত আছেন। 

তৃতীয় বারের এই বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, কামরুজ্জামান, মনসুর আলী, খোন্দকার মোশতাক আহমদ ও ড. কামাল হোসেন।

সেদিন প্রেসিডেন্ট ভবণের সামনে কড়াকড়ি নিরাপত্তা ছিল। বাধানিষেধ না মেনে ভিড় করেছিলেন মুক্তিকামী বাঙালি। তারা সংবাদের মাধ্যমে নয়,  এসেছিলেন, সরাসরি ফলাফল জানতে।

 

কিন্তু তখনো টঙ্গীতে, জয়দেবপুরে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছিল পাক-বাহিনী। মৃতের সংখ্যা ছিল ২০, কেউ বলে আরো বেশি। এই হত্যাকাণ্ডকে নতুন উস্কানিমূলক হত্যাকাণ্ড হিসেবে সন্দেহ করা হয়। মিছিলের পর মিছিল যাচ্ছিল বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে।

সেদিনের নতুন স্লোগান ছিল ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম, সংগ্রাম’ স্বাধীনতার বিকল্প কিছু নেই এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাস্তুহারা সমিতি, কৃষি ব্যাংক, আণবিক শক্তি কমিশন, শ্রমিক ফেডারেশন, ন্যাশনাল ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়ন স্লোগান তোলে ‘শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না।’

এমন অসহযোগ আন্দোলন দেখে ভারতীয় নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ বলেছিলেন, ‘মহাত্মা’ গান্ধীর সঙ্গেই মুজিবের তুলনা করা চলে।’

অন্যদিকে ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলতাফ হোসেন ভুট্টোর সাম্প্রতিক কার্যকলাপ দেখে ও শুনে মন্তব্য করেন ‘ভুট্টোর জায়গা পাগলা গারদে।’

সূত্র : অসহযোগ আন্দোলন : রশীদ হায়দার।