ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জিতল অস্ট্রেলিয়া
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০১:০২ পিএম, ১৪ মার্চ ২০১৯ বৃহস্পতিবার

প্রথম দুই ওয়ানডে হেরে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। উল্টোদিকে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ জয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল স্বাগতিক ভারতের জন্য। কিন্তু খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর এক অপূর্ব নজির স্থাপন করেছে অজিরা। টানা তিন ম্যাচ জিতে অ্যারন ফিঞ্চ বাহিনী সিরিজ নিশ্চিত করেছে ৩-২ ব্যবধানে। ফলে এক দশক পর ভারতকে তাদের মাটিতেই ওয়ানডে সিরিজ হারানোর স্বাদ নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
বুধবার দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় সিরিজ নির্ধারণী শেষ ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে ৩৫ রানে জিতেছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। চলতি সিরিজে উসমান খাওয়াজার দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ভর দিয়ে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ার পর বোলারদের সম্মিলিত অবদানে বিরাট কোহলিদের লক্ষ্য থেকে অনেক দূরেই থামিয়েছে অজিরা।
সবশেষ ২০০৯ সালে ভারতের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। সাত ম্যাচের সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছিল ৪-২ ব্যবধানে। আর প্রায় সাড়ে ছয় বছর পর ঘরের মাঠে দ্বিপাক্ষিক কোনো ওয়ানডে সিরিজ হারের অভিজ্ঞতা হয়েছে ভারতের। ২০১৫ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৩-২ ব্যবধানে হারার পর টানা ছয়টি ওয়ানডে সিরিজ নিজেদের পকেটে পুরেছিল ভারতীয়রা।
এদিন টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৭২ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। ওপেনার খাওয়াজা ১০৬ বলে ঠিক ১০০ রান করেন ১০ চার ও ২ ছয়ের সাহায্যে। অধিনায়ক ফিঞ্চের সঙ্গে ৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটির পর দ্বিতীয় উইকেটে পিটার হ্যান্ডসকম্বের সঙ্গে ৯৯ রান যোগ করেন এই বাঁহাতি।
কিন্তু সেঞ্চুরি হাঁকানোর পরপরই খাওয়াজা বিদায় নিলে মড়ক লাগে অজি ইনিংসে। ভারতীয় বোলাররা দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফিরে আসায় শেষে কাঙ্ক্ষিত ঝড়টা তুলতে পারেননি গ্লেন ম্যাক্সওয়েল-অ্যাশটন টার্নার-অ্যালেক্স ক্যারেরা।
ফিঞ্চ ২৭ ও আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো হ্যান্ডসকম্ব দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন। শেষদিকে ঝাই রিচার্ডসন ২১ বলে ২৯ ও প্যাট কামিন্স ৮ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেললে অজিদের সংগ্রহ আড়াইশ ছাড়ায়। ভারতের পক্ষে খাওয়াজাকে বিদায় করা ভুবনেশ্বর কুমার ৩ উইকেট পান ৪৮ রানে। ২টি করে উইকেট গেছে মোহাম্মদ শামি ও রবীন্দ্র জাদেজার ঝুলিতে।
জবাব দিতে নেমে শুরুতেই শিখর ধাওয়ানের উইকেট হারায় ভারত। উইকেটে থিতু হয়ে বিদায় নেন অধিনায়ক কোহলি, ঋষভ পান্ত ও বিজয় শঙ্কর। তবে এক প্রান্তে আশার আলো হয়ে জ্বলছিলেন রোহিত শর্মা। কিন্তু ফিফটি তুলে নেয়ার পর অধৈর্য হয়ে অ্যাডাম জাম্পাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৮৯ বলে ৫৬ রান।
একই ওভারে তিন বল পর জাদেজাও অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ক্যারের দক্ষতায় স্ট্যাম্পিং হয়ে মাঠ ছাড়লে ১৩২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের পথ থেকে ছিটকে যায় ভারত। তারপরও সপ্তম উইকেটে ৯১ রানের জুটি গড়ে দলকে দারুণ কিছুর স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন কেদার ও ভুবনেশ্বর। কিন্তু পরপর দুই বলে দুজনই আউট হলে ভারতের সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
৪৬তম ওভারের শেষ বলে ৫৪ বলে ৪৬ রান করা ভুবনেশ্বরকে বিদায় করেন কামিন্স। পরের ওভারের প্রথম বলে কেদারের উইকেট শিকার করেন রিচার্ডসন। তার ব্যাট থেকে আসে ৫৭ বলে ৪৪ রান। ভারত শেষ ৪ উইকেট হারায় মাত্র ১৪ রানে।
জাম্পা ৪৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অজিদের পক্ষে সবচেয়ে সফল। ২টি করে উইকেট নেন কামিন্স, রিচার্ডসন ও মার্কাস স্টয়িনিস। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি ও পাঁচ ইনিংসে ৩৮৩ রান করার সুবাদে ম্যাচ ও সিরিজ সেরার দুটি পুরস্কারই দখল করেন খাওয়াজা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ২৭২/৯ (৫০ ওভারে) (খাওয়াজা ১০০, ফিঞ্চ ২৭, হ্যান্ডসকম্ব ৫২, ম্যাক্সওয়েল ১, স্টয়িনিস ২০, টার্নার ২০, ক্যারে ৩, রিচার্ডসন ২৯, কামিন্স ১৫, লায়ন ১*; ভুবনেশ্বর ৩/৪৮, শামি ২/৫৭, বুমরাহ ০/৩৯, কুলদীপ ১/৭৪, জাদেজা ২/৪৫, কেদার ০/৮)
ভারত: ২৩৭ (৫০ ওভারে) (রোহিত ৫৬, ধাওয়ান ১২, কোহলি ২০, পান্ত ১৬, শঙ্কর ১৬, কেদার ৪৪, জাদেজা ০, ভুবনেশ্বর ৪৬, শামি ৩, কুলদীপ ৯, বুমরাহ ১*; কামিন্স ২/৩৮, রিচার্ডসন ২/৪৮, স্টয়িনিস ২/৩১, লায়ন ১/৩৪, জাম্পা ৩/৪৬, ম্যাক্সওয়েল ০/৩৪)।