বৃহস্পতিবার   ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আশ্বিন ২ ১৪৩২   ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

২৮৪ দিন পর সেই জিদানই রিয়ালের কোচ

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৩:৫৫ পিএম, ১২ মার্চ ২০১৯ মঙ্গলবার

২০১৮ সালের ৩১ মে সকাল পর্যন্তও রিয়ালের কোচ ছিলেন জিনেদিন জিদান। তবে, দুপুর গড়াতেই দেন বিস্ময়কর এক ঘোষণা। রিয়ালকে টানা তৃতীয়বারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানোর পরও অভিমান করে কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান জিদান।

 

ঠিক ২৮৪ দিন পর সেই জিদানই আবার কোচ হলেন রিয়ালের। সোমবার রাতেই সান্তিয়াগো সোলারির উত্তরসূরি হিসেবে জিদানের নাম ঘোষণা করেছে রিয়াল।

শুধু নাম ঘোষণা নয়। গতরাতে তাকে নতুন কোচ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয়ও করিয়ে দেয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মঙ্গলবার দল নিয়ে তার অনুশীলনেও নেমে পড়ার কথা।

এক সপ্তাহে নিজেদের ঘরের মাঠ বার্নাব্যুতে টানা তিন হার। সেই তিন হারে মৌসুমের তিনটি টুর্নামেন্টের শিরোপা স্বপ্ন গুড়িয়ে যায় রিয়ালের! ঐতিহাসিক ওই বিপর্যয়ের পরই নিশ্চিত হয়ে যায়, রিয়ালের কোচ হিসেবে সোলারির ভাগ্য। তার পরিবর্তে কোচের দায়িত্ব উঠতে যাচ্ছে অন্য কারও কাঁধে।

তবে, সোলারির চাকরিটা কবে যায়, তা নিয়ে একটা ধোঁয়াশা ছিল। কারও কারও ধারণা ছিল, হয়তো মৌসুমের বাকি সময়টুকু এই আর্জেন্টাইনই থাকবেন ডাগআউটে। নতুন কোচ দায়িত্ব নেবেন নতুন মৌসুমের শুরুতে। কেউ কেউ আবার স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছিলেন, গতকাল সোমবার পর্যন্তই সোলারির চাকরি থাকছে। শেষ পর্যন্ত এই দ্বিতীয় পক্ষের ধারণাই সত্যি হলো।

গত ২৯ অক্টোবর আচমকই রিয়ালের কোচের দায়িত্ব পান সোলারি। দলের চরম ব্যর্থতার জন্য তৎকালীন কোচ জুলিয়েন লোপেতেগুইকে বরখাস্ত করা হয়। তার জায়গায় অন্তর্বর্তী দায়িত্ব দেয়া হয় সোলারিকে।

৪২ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন আচমক দায়িত্ব পেলেও শুরুটা করেছিলেন রূপকথার মতো। ফল হিসেবে, দায়িত্ব প্রাপ্তির দুই সপ্তাহের মধ্যেই অন্তর্বর্তী থেকে পদোন্নতি পেয়ে হয়ে যান স্থায়ী কোচ। কিন্তু, ৪ মাসের মাথায় দলের চরম বিপর্যয়ের দায় কাঁধে নিয়েই বিদায় নিতে হলো তাকে।

গত মঙ্গলবার নিজেদের ঘরে মাঠে ডাচ ক্লাব আয়াক্সের কাছে ৪-১ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়ে রিয়াল। তার আগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার কাছে টানা দুই হারে ছিটকে পড়ে কোপা ডেল রে ও লা লিগার শিরোপা দৌড় থেকে। আয়াক্সের কাছে হেরে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ হওয়ার পরই স্পষ্ট হয়ে যায় সোলারির চাকরি যাচ্ছে।

তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে জিদান, হোসে মরিনহোসহ অনেকের নামই শোনা যাচ্ছিল। তবে, জিদানের নামটিই ভাসছিল বেশি। আয়াক্সের কাছে হারের পরপরই জিদানকে ফেরার প্রস্তাব দেন রিয়ালের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। কিন্তু, জিদান নাকি প্রথমে ‘না’ করে দিয়েছিলেন। পরে শোনা যায়, দায়িত্ব নিতে একটা শর্ত দিয়েছেন জিদান। শর্তটা হলো ‘সর্বময় ক্ষমতা’ দিতে হবে তাকে।

এ ছাড়া আর একটু ফ্যাকড়া ছিল। ৪৬ বছর বয়সী জিদান আসলে মৌসুমের শেষে দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, রিয়ালের পরিচালনা পর্যদের জোরাজুরিতে গতকালই দায়িত্বটা কাঁধে তুলে নিয়েছেন। মৌসুমের বাকি থাকা আশাহীন পথটুকু এই ফরাসির কাঁধে চেপেই চলবে রিয়াল। প্রথম মেয়াদে মাত্র আড়াই বছরেই রিয়ালকে ৯টি শিরোপা জিতিয়েছেসন জিদান। দ্বিতীয় দফা দায়িত্ব নিলেন অনন্য এক রেকর্ডের হাতছানি সামনে নিয়ে।

সেই রেকর্ডটা হলো ১১৭ বছরের ক্লাব ইতিহাসে সর্বোচ্চ শিরোপাজয়ী কোচ হওয়ার। বর্তমানে এই রেকর্ডটি প্রয়াত মিগুয়েল মুনোজের দখলে। রিয়ালকে সর্বোচ্চ ১৪টি শিরোপা জিতিয়েছিলেন তিনি। মানে ৫টি শিরোপা জিতলেই কিংবদন্তি মুনোজের রেকর্ডটা ছুঁয়ে ফেলবেন জিদান। ৬টি জিতলে মুনোজকে পেছনে ফেলে গড়ে ফেলতে পারবেন রিয়ালের সর্বোচ্চ শিরোপাজয়ী কোচ হওয়ার নতুন রেকর্ডই।

আপাতত চুক্তিটা করেছেন ২০২২ সাল পর্যন্ত। মানে তিন মৌসুমের জন্য। ফলে সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ের রেকর্ডটা নিজের করে নেয়ার দারুণ সুযোগই ফরাসি মহানায়কের সামনে।