বৃহস্পতিবার   ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আশ্বিন ২ ১৪৩২   ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

রিয়ালকে ‘সর্ব ক্ষমতার’ শর্ত দিয়েছেন জিদান!

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৪:৫১ পিএম, ১১ মার্চ ২০১৯ সোমবার

নিজেদের ঘরের মাঠে এক সপ্তাহে টানা তিন হার। সেই তিন হারে তিনটি শিরোপা স্বপ্ন শেষ। ঐতিহাসিক এই বিপর্যয়ে বার্নাব্যুতে যে টালমাটাল অবস্থা, তার প্রথম বলি হতে যাচ্ছেন কোচ সান্তিয়াগো সোলারি। গত সপ্তাহের ওই ট্র্যাজেডি নিশ্চিত করে দিয়েছে, রিয়ালের কোচ হিসেবে এই আর্জেন্টাইনের আর থাকা হচ্ছে না।

 

এরই মধ্যে সোলারির বিকল্পের সন্ধানে নেমে পড়েছে রিয়াল। পছন্দের তালিকায় লিখে নিয়েছে সাবেক দুই কোচ জিনেদিন জিদান ও হোসে মরিনহোসহ অন্তত ৫ জনকে।

তবে সেই ৫ জনের মধ্যে জিদানই আছেন এক নম্বরে। রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ এরই মধ্যে জিদানকে ফেরার জন্য প্রস্তাবও দিয়েছেন। প্রথমে অবশ্য শোনা গিয়েছিল পেরেজকে মুখের ওপর ‘না’ করে দিয়েছেন জিদান। কিন্তু গতকালই আবার গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে জিদান রিয়ালে ফিরতে রাজি। তবে পুনরায় দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ফরাসি কোচ জুড়ে দিয়েছে ছোট্ট একটা শর্ত। কোচ হিসেবে ‘সর্বময় ক্ষমতা’ চাই তার!

 

এই যে মৌসুম শেষের ৩ মাস আগেই বিশ্বসেরা রিয়ালের মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়া। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মৌসুমের বড় তিনটি টুর্নামেন্ট থেকেই কার্যত ছিটকে পড়া। রিয়ালের এই ঐতিহাসিক করুণ পরিণতির চিত্রটা নাকি গত মৌসুমেই আঁচ করতে পেরেছিলেন জিদান। বুঝে গিয়েছিলেন, সাফল্যের ধারাটা ধরে রাখতে দলে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে। যোগ করতে হবে নতুন রক্ত। কিনতে হবে নতুন নতুন প্রতিভাবান খেলোয়াড়। তা না হলে ভরাডুবি নিশ্চিত।

তাই রিয়ালকে টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জেতানোর পরও রিয়ালের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান চতুর জিদান। নিশ্চিত ভরাডুবির স্বাক্ষী হতে চাননি। অবশ্য সরে দাঁড়ানোর আগে সভাপতি পেরেজকে দলের আসন্ন ভরাডুবি এড়ানোর রাস্তাটা দেখিয়েছিলেন জিদান। আবদার করেন তার পছন্দের খেলোয়াড়দের কেনার জন্য।

কিন্তু রিয়াল সভাপতি পেরেজ তখন জিদানের কথা শোনেননি। দলের খেলোয়াড়দের ওপরই আস্থা রাখেন। এমনকি ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো চলে যাওয়ার পাকা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও পেরেজের টনক নড়েনি। তাই আসন্ন ভরাডুবি আঁচ করতে পেরে নিজেই চাকরি ছাড়েন জিদান।

৮ মাসের ব্যবধানে জিদানের সেই ভবিষ্যদ্বাণী শতভাগ সত্য বলে প্রমাণিত। দলের চরম বিপর্যয়ে পেরেজও নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাই ভুল শোধরাতে সেই জিদানেরই শরণাপন্ন তিনি। সুযোগ বুঝে জিদানও চেয়ে বসেছেন ‘সর্বময় ক্ষমতা’।
পেশাদার ফুটবলে কোচরাই সর্বেসর্বা। একাদশ নির্বাচন থেকে শুরু করে কাকে খেলাবেন, কাকে বিশ্রাম দেবেন, সব সিদ্ধান্ত কোচরাই নিয়ে থাকেন। সাধারণ এই ক্ষমতার বাইরে জিদান চাইছেন ‘নিজ পছন্দের খেলোয়াড় কেনার একক ক্ষমতা।’

তার কথা, দলের শক্তি বৃদ্ধির জন্য দলের কাকে কাকে বিক্রি করবেন এবং নতুন কাকে কাকে কিনবেন, তা বাছাই করবেন একমাত্র তিনি। তার পছন্দ অনুযায়ীই খেলোয়াড় কিনতে হবে। ক্লাব কর্তা হিসেবে তার পছন্দে নাক গলানো যাবে না। তারা শুধু টাকা গুণে যাবেন!

 

গণমাধ্যমে গুঞ্জন আছে, গত মৌসুমে এই খেলোয়াড় কেনা-বেচার বিষয়েই সভাপতি পেরেজের সঙ্গে কোচ জিদানের এক ধরনের মনোমালিন্য তৈরি হয়। তার জের ধরেই অবিশ্বাস্য সাফল্যের পরও রিয়ালের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
কথা হলো, গত মৌসুমে হয়তো সাফল্যের রঙিন চশমা পরা থাকায় সব কিছু রঙিনই দেখছিলেন পেরেজ। তাই কল্প চোখে জিদানের দেখা ‘আসন্ন বিপর্যয়ের’ সাবধানবার্তায় কান দেননি। বিশ্বাসও করেননি। কিন্তু বাস্তবতা তো পেরেজের চোখ থেকে রঙিন চশমা খুলে ফেলেছে। রিয়াল সভাপতি নিজ চোখেই দেখছেন দলের চরম বিপর্যয়।

এই বাস্তব শিক্ষা পেয়ে এবার কি জিদানের ছোট্ট এই শর্তটা মেনে নেবেন পেরেজ? ‘সর্বময় ক্ষমতার’ অধিকার দিয়েই কোচ করবেন জিদানকে!