‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন অধিকার বঞ্চিতদের পক্ষে’
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০:৩৯ এএম, ৯ মার্চ ২০১৯ শনিবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত ও অধিকার বঞ্চিত মানুষের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । তিনি আজীবন বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার কথা ভেবেছেন। বাঙালি যেন অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হয়ে উন্নত-সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে পারে সেই দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন তিনি।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ’ উপলক্ষে ‘বাঙালির হৃদয় জুড়ে যার আসন তিনিই দিয়েছিলেন ঐতিহাসিক ৭ই মার্চে স্বাধীনতার ভাষণ’শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠা মণ্ডলীর সদস্য ডা. এস এ মালেক। এতে সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা মতিউর রহমান লাল্টু।
আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের অমূল্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা বঙ্গবন্ধুকে প্রকৃতভাবে মূল্যায়ন করেছেন।
আলোচনায় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন। তিনি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন সংগ্রাম করতেন। বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তি ও কল্যাণের কথা ভাবতেন। পাকিস্তানি শাসকদের বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান সরকারের নিকট কয়েক দফা প্রস্তাব পেশ করেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা সে প্রস্তাব প্রত্যাখান করে বাঙালিদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানদের শোচনীয় পরাজয় ঘটে। বঙ্গবন্ধুর কৃতিত্ব এখানেই শ্রেষ্ঠত্ব পেয়েছে। তিনি একটি জাতিকে জাতিসত্ত্বায় রূপান্তরিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন।
ডা.মালেক বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা আরো কঠিন। রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে যায়, যদি সত্যিকার অর্থে জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ না হয়। বঙ্গবন্ধু সেই লক্ষ্যে স্বাধীনতার পর উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
তিনি আরো বলেন, যার জন্ম না হলে আমরা স্বাধীনতা পেতাম না, সেই জাতির জনক এ দেশের কিছু কুলাঙ্গার ও আর্ন্তজাতিক চক্রান্তকারীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন। জাতির জীবনে নেমে আসে দুঃখ-বেদনা আর হতাশা। তবে আশার কথা হচ্ছে; বঙ্গবন্ধুর কন্যা চতুর্থবারের মত রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পেয়ে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে সফলতার সঙ্গে। উন্নয়নের এ গতিধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যেই উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের পর্যায়ে উন্নীত হবে।
সভায় ড. শফিউল আলম ভুঁইয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু জনগণের নেতা ছিলেন। তিনি বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিলেন পাকিস্তানি স্বৈরশাসকরা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ও অন্যায়ভাবে বাঙালিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু আন্দোলন সংগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হতে চাননি বলেই সব সময় আলোচনার পথ খোলা রেখেছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আজ বিশ্ব সেরা। পৃথিবীর অনন্য ভাষণগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ ভাষণ এই কারণেই যে, বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতি তার আত্মপরিচয়ের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে। এ ভাষণ যুগে যুগে বিশ্বে গণমানুষের অনুপ্রেরণা যোগাবে।
অধ্যাপক ড.আনোয়ারা বেগম বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ আজ কালজয়ী ইতিহাস হয়ে উঠেছে। ৭ই মার্চ বাঙালি জাতির এক অবিস্মরণীয় দিন। হাজার বছরের ঐতিহ্য ও কৃষ্টিকে বুকে ধারণ করে যে জাতি বার বার বিদেশিদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে, হারিয়েছে পথের ঠিকানা, আজকের এই দিনে অধিকার বঞ্চিত বাঙালি জাতি খুঁজে পায় স্বাধীনতার সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম), আশা বিশ্ববিদ্যালয়েন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ডালেম চন্দ্র বর্মণ, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলাউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সাবেক ডিন অধ্যাপক আ ব ম ফারুক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামীসহ বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের সাবেক সদস্য এবং দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় ও মহানগর কমিটির নেতারা।
