‘নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে মহাবিপর্যয়ে পড়বে বাংলাদেশ’
নিজস্ব প্রতিবেদক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৪:০৯ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ শনিবার
আগামী নির্বাচন যেমন সরকার ও সব দলের পরীক্ষা, তেমনি জনগণের জন্যও পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারলে বাংলাদেশ এক মহাবিপর্যয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট নাগরিকরা।
শনিবার (২২ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘নির্বাচনে জনগণের ঢল নামুক, ভোটকেন্দ্রে হোক ভোটারের’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ২৯ জন নাগরিকের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণসংযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীত আরা নাসরীন। আরও উপস্থিত ছিলেন, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আহমেদ কামাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ড. শাহদীন মালিক, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে গীত আরা নাসরীন বলেন, একটানা এক দলের শাসনের অধীনে থাকতে থাকতে, দমনপীড়ন ও ভয়ের রাজত্বে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে গিয়ে মানুষের আশাবাদের জায়গা ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়েছে। সরকার মুখে যাই বলুক না কেন, জনগণের একটা বড় অংশের মধ্যে এই অবিশ্বাস খুঁটি গেড়ে বসেছে যে, নির্বাচন সরকারের জানানো ছক অনুযায়ীই হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের তালিকা আছে পুলিশের কাছে। তাদের কাছ থেকে ফোন পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আতঙ্কিত। প্রধানমন্ত্রী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ডেকে কথা বলেছেন। টেলিভিশনে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিজ্ঞাপন প্রচারিত হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারি দল বা জোটের বাইরের বিভিন্ন প্রার্থীর প্রচার কাজে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের বাধা, হামলা, ভয়ভীতি প্রদর্শনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচনি প্রচারের শুরুতেই প্রাণহানির খবরে আমরা শঙ্কিত। এসব দেখে মানুষের মনে পোক্ত হয় যে, নির্বাচন কমিশন সংবিধানের কাছে নয়, সরকারের কাছেই অধিকতর দায়বদ্ধ। কমিশনাররা স্বাধীনভাবে কাজ না করে অনেকক্ষেত্রেই ক্ষমতাসীনদের আজ্ঞাবাহীর মতো আচরণ করছে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির কথাটা একটা ফাঁকাবুলিতে পরিণত হয়েছে।
দেশের এমন পরিস্থিতিতে ৫ দফা দাবি জানান নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এগুলো হচ্ছে- নির্বাচন কমিশনকে অবশিষ্ট সময়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিককে স্বাধীনভাবে ভূমিকা পালন করতে দিতে হবে। মামলা, হামলা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতা বন্ধ করে হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। সব ধরনের যোগাযোগে বাধা সৃষ্টির বদলে উন্মুক্ত করে দিতে হবে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
