সোমবার   ০৬ মে ২০২৪   বৈশাখ ২২ ১৪৩১   ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রিয়ালে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন মরিনহো

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৭:০৯ পিএম, ৫ মার্চ ২০১৯ মঙ্গলবার

তাহলে আগামী মৌসুমে হোসে মরিনহোই কোচ হয়ে ফিরছেন রিয়াল মাদ্রিদে? স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন সান্তিয়াগো সোলারির।

 

মরিনহো নিজেই সম্ভাবনার দুয়ারটা উন্মুক্ত করলেন। বিইন স্পোর্টসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পর্তুগিজ কোচ নিজেই ইঙ্গিত দিলেন রিয়ালে ফেরার। স্পষ্ট কণ্ঠেই জানিয়ে দিলেন, রিয়ালে ফিরতে তার কোনো সমস্যা নেই।

মরিনহো ফিরতে পারেন রিয়ালে, গত ডিসেম্বরেই এমন গুঞ্জন রটে যায় ইউরোপে। গত ডিসেম্বরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচের পদ থেকে বরখাস্ত হয়েছেন তিনি। এই বরখাস্তের পরপরই তার রিয়ালে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যায়। রিয়ালের বেশ কয়েকজন সাবেক খেলোয়াড়ই প্রথম সম্ভাবনার কথাটা জানান।

কিন্তু, সময়ের স্রোতে গুঞ্জনটি হারিয়েও যায়। মরিনহোকে ফেরানোর সম্ভাবনায় তালা দিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ বরং অন্তর্বর্তী কোচ সান্তিয়াগো সোলারির সঙ্গেই পাকা চুক্তি করে।

গত অক্টোবরে হঠাৎ করে কোচের দায়িত্ব পেয়ে, শুরুতেই চমক দেখান ৪২ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন। তার পুরস্কার হিসেবেই তার সঙ্গে স্থায়ী চুক্তি করে রিয়াল।

কিন্তু, আর্জেন্টাইন কোচ শুরুর সেই চমকটা আর ধরে রাখতে পারেননি। বরং গত দুই সপ্তাহে দলের চরম হতাশাজনক পারফরম্যান্সে তার আসনটা নড়বড়ে হয়ে গেছে।

পুঁচকে জিরোনার কাছে নিজেদের ঘরের মাঠ হার। এরপর নিজেদের ঘরের মাঠেই চিরশত্রু বার্সেলোনার কাছে টানা দুটি এল ক্লাসিকোতে হার।

এর মধ্যে শেষ হারটি ছিল গত শনিবার লিগে। ১-০ গোলের সেই হারে লিগ শিরোপা স্বপ্ন এক রকম শেষই হয়ে গেছে রিয়ালের। ফলে এরই মধ্যে রব উঠেছে, সোলারির মতো অনভিজ্ঞ একজনের পক্ষে বিশ্বসেরা রিয়ালকে সঠিক পথে পরিচালনা করা সম্ভব না। তাকে দিয়ে রিয়ালের চলবে না।

রিয়ালও নাকি এরই মধ্যে সোলারির বিকল্পের সন্ধানে নেমে পড়েছে। সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে শোনাও যাচ্ছে বেশ কয়েকজনের নাম। যাদের মধ্যে আছেন জার্মানির জাতীয় দলের কোচ জোয়াকিম লো, ইংলিশ ক্লাব টটেনহামের আর্জেন্টাইন কোচ মরিসিও পচেত্তিনো এবং জুভেন্টাসের ইতালিয়ান কোচ মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রিরা।

 

এরই মধ্যে মরিনহো স্পষ্ট কণ্ঠেই ইঙ্গিত দিলেন রিয়ালে ফেরার। প্রকাশ্যেই বললেন, বার্নাব্যুতে ফিরতে তার কোনো সমস্যা নেই।

সমস্যার প্রসঙ্গটি আসছে অতীত অভিজ্ঞতার কারণে। ২০১০ থেকে ২০১৩— এই তিন বছর রিয়ালের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন মরিনহো। কিন্তু, তার বিদায়টা সুখকর ছিল না। দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে তিক্ততার কারণেই রিয়াল ছাড়তে হয়। যদিও সমঝোতার ভিত্তিতেই রিয়াল ছাড়েন তিনি।

মরিনহোর সঙ্গে যাদের তিক্ততা ছিল, তাদের মধ্যে ইকার ক্যাসিয়াস ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো এখন আর রিয়ালে নেই। ক্যাসিয়াস রিয়াল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন মরিনহোর স্বদেশি ক্লাব এফসি পোর্তোতে। তার স্বদেশি ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো গেছেন জুভেন্টাসে। তবে, সার্জিও রামোস এখনো আছেন। শুধু থাকা নয়, রামোস এখন রিয়ালের অধিনায়ক।

মরিনহোর ফেরার পথে এই রামোস কি বাঁধা হয়ে দাঁড়াবেন না? মরিনহো বুঝিয়ে দিলেন ফুটবলে এসব কোনো ব্যাপারই না। বিইন স্পোর্টসকে স্পষ্ট করেই বলেছেন, ‘ফুটবলে আমার জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত যখন আমি চেলসিতে পুনরায় ফিরলাম। যখন সমর্থকরা দ্বিতীয়বার আপনার নাম ধরে স্লোগান দেবে, উল্লাস করবে, বুঝবেন তারা আপনাকে গ্রহণ করেছে। এটা সত্যিই অসাধারণ এক অনুভূতি। অতএব, রিয়াল মাদ্রিদে ফিরতে আমার কোনো সমস্যা নেই।’

রিয়ালের কর্তারাও যে তাকে ফেরানোর কথা ভাবছেন, সেটিও বুঝিয়ে দিয়েছেন পর্তুগিজ কোচ, ‘আপনি গর্বিতই হবেন, যখন শুনবেন যে ক্লাবটিকে আপনি ইতোমধ্যেই কোচিং করিয়েছেন, তারা আবার আপনাকে ফেরাতে চাইছে। আমি স্পেনকে পছন্দ করি। তার মানে কিন্তু এই নয় যে, আবহাওয়া, পরিবেশ বিবেচনা করে আমি কোনো দেশকে বেছে নিই। তারা বিশ্বসেরা ক্লাব। তাদের নামের পাশে ১৩টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা আছে।’

মরিনহোর এই ইঙ্গিত নিশ্চিতভাবে পুরোনো গুঞ্জনটাকে নতুন করে উস্কে দিল। আগামী কয়েক দিন হয়তো এ নিয়ে ঝড়ই বইবে।