৪ মার্চ, ১৯৭১: বায়তুল মোকাররমে শহীদদের গায়েবানা জানাজা
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১১:১০ এএম, ৪ মার্চ ২০১৯ সোমবার
পাক-সেনার গুলিতে নিহত শহীদদের ৪মার্চ গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বায়তুল মোকাররমে। এরপর শোক মিছিল বের হয়। এদিনও হরতাল পালিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী।
তার দুইদিন আগেই একটি বিবৃতির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘পেশাদার উস্কানিদাতাদের সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। মুক্তি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে।’ তিনি আরো জানিয়েছিলেন ‘ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করা প্রতিটি বাঙালি সরকারি কর্মচারির কর্তব্য।’
এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জেনারেল ইয়াহিয়ার আমন্ত্রণকে শক্ত ভাষায় নাকচ করে বলেন, ‘এটা নিষ্ঠুর কৌতুক। যা নিরস্ত্র বেসামরিক লোকদের ব্যাপক হত্যা ডেকে আনবে।’
সহযোগী মার্কিন আচরণ:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের পক্ষে থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। মার্চে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কয়েক দফায় বৈঠক হয়েছিল। এ থেকে প্রমাণ হয় যে, একাত্তরে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ততটা নিষ্ক্রিয় ছিল না।
এনএসসি স্টাফ হেরল্ড স্যান্ডার্স ও স্যামুয়েল হকিনসন ৪ মার্চে কিসিঞ্জারকে তথ্য দেন যে, শেখ মুজিবুর রহমান রোববার (৭ মার্চ) স্বাধীনতার ‘সমতুল্য’ ঘোষণা দেবেন।
এদিকে, সিআইএ তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনকে বলেছিলেন, ‘মুজিব সম্মেলনে যেতে নারাজ। কারণ, সেখানে যেতে তার জনগণের চাপ নেই।’ সিআইএ এদিন ঢাকায় মার্কিন কনসাল জেনারেল আর্চার ব্লাডের কী ধারণা, তাও নিক্সনকে জানিয়েছিল। নিক্সন ও তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার আর্চার ব্লাডকে বাঙালিদের প্রতি সহানুভূতিশীল বিবেচনায় একাত্তরে ঢাকা থেকে তাকে নাটকীয়ভাবে প্রত্যাহার করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, আর্চার ব্লাড, ‘১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কনসাল জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে তৎকালীন চলমান নৃশংসতা বন্ধে ব্যর্থ হওয়ায় কঠোর ভাষায় একটি টেলিগ্রাম বার্তা পাঠানোর জন্য বিখ্যাত।
সূত্রঃ একাত্তরের দিনগুলি : জাহানারা ইমাম। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস : মুহম্মদ জাফর ইকবাল। অসহযোগ আন্দোলন: একাত্তর: রশীদ হায়দার। প্রথম আলো, ২৬মার্চ, ২০১৮।
