সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৫ ১৪৩১   ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্ষমতা ভোগের বিষয় নয়, জনসেবার: প্রধানমন্ত্রী

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০২:৩১ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনীতি নিজের জন্য নয়, দেশের মানুষের জন্য। ক্ষমতাটা ভোগ করার বিষয় না, জনসেবার বিষয়।  

বুধবার বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে বিরোধী দলীয় এমপি কাজী ফিরোজ রশিদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের কী ভালো, কী মন্দ, সেটা জানার চেষ্টা করি। মানুষের সমস্যাগুলো সমাধানেরও চেষ্টা করি। আমি মনে করি, জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। এটা আমাদের কর্তব্য। কাজেই সেটাকে আমি কতর্ব্য হিসেবেই নিয়েছি।

সামাজিক সচেতনতার সৃষ্টির মাধ্যমে মাদকমুক্ত দেশ ও সমাজ গড়ে তোলার ওপর সবাইকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সংসদ সদস্যদেরও নিজ নিজ এলাকায় কেউ যাতে মাদকাসক্ত না হয়, সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে। অন্য যারা জনপ্রতিনিধি রয়েছেন তাদেরও সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সচেষ্ট থাকতে হবে। মাদক ব্যবহার, বিক্রি বা বহন করা এগুলো যে অপরাধ, জনগণ এ ব্যাপারে এখন যথেষ্ট সচেতন।

তিনি বলেন, সরকার যাদেরকে আত্মসমর্পণ করাচ্ছে (মাদক ব্যবসায়ী), তাদের চিকিৎসা ও কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে মাদক থেকে দূরে রাখার পদক্ষেপ নিয়েছি। মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা আত্মসমর্পণ করছে তাদের সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য দেয়া হচ্ছে, যাতে তারা অন্য কোনো ব্যবসায় নিয়োজিত হয়ে ভালোভাবে চলতে পারে। এভাবে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার দেশে আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন, সন্ত্রাস দমন, চাঁদাবাজি রোধ এবং জঙ্গিবাদ দমনে ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে আমরা সর্বদা তৎপর। ইতিমধ্যে জঙ্গিবাদ দমনের সফলতা বিশ্বে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

কাজী ফিরোজ রশীদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে যেখানে মাদক চোরাচালান হয়, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে মাদক নিয়ন্ত্রণ ও চোরাচালান বন্ধে সরকার পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মাদক পরিবহন ও চোরাচালানের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির (মৃত্যুদণ্ড) বিধান রাখা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় মাদক নিরাময়কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

কাজী ফিরোজ রশীদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, ট্রাফিকের কারণে জনগণের বিড়ম্বনা যেন না হয় সে জন্য তিনি রাস্তায় বের হওয়া একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বলতে গেলে তো বের হওয়াই ছেড়ে দিয়েছি। আমি বের হলেই ট্রাফিক আটকায়। এজন্যই অফিস এবং কোথাও যদি কর্মসূচি থাকে সেখানে ছাড়া আর কোথাও যাওয়াই হয় না।

বহরে গাড়ির সংখ্যা কমানো হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় আসি, দেখি, প্রধানমন্ত্রীর বহরে ৫২টি গাড়ি। আমি তা কেটে আটটি রাখার নির্দেশ দিয়েছি। বিশ্বের সব দেশেই ট্রাফিক সমস্যা আছে। লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বড় বড় দেশেরও এ সমস্যা রয়েছে। কারণ জনসংখ্যা বাড়ছে, মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় গাড়ি ব্যবহারের সংখ্যাও বাড়ছে।

তিনি বলেন, ঢাকার যানজট নিরসনে আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা ও ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এটা চালু হলে যানজট নিরসন আরো কার্যকর হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানান।

কুড়িগ্রাম-১ আসনের আছলাম হোসেন সওদাগরের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ব্যবহার করে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল তাদের সম্প্রচার কাজ সম্পন্ন করতে পারছে। এটি ব্যবহার করে বেসরকারি একাত্তর, সময়, বৈশাখী ও এনটিভি সরাসরি সম্প্রচার করছে। এর সাহায্যে আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রাপ্তির সুবিধা গ্রহণ করা হচ্ছে।