দুদক কি পারে, জানালেন চেয়ারম্যান
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১১:০৬ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার
দুনীতি দমন কমিশন (দুদক) কেবল ঘুষ ও দুর্নীতিসম্পৃক্ত মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ বিষয়ে এককভাবে কাজ করতে পারে। অন্যান্য বিষয়ে এর হাত বাঁধা রয়েছে।
সোমবার সেগুন বাগিচায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুদকের কৌশলপত্র-২০১৯ এর ওপর এক মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এ কথা জানান।
তিনি বলেন, অনেকেই মানি লন্ডারিংয়ের ব্যর্থতার জন্য দুদকের দিকে অঙ্গুলি তোলেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধন করে এ বিষয়ে মামলা পরিচালনার একক দায়িত্ব দুদকের হাতে থেকে নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সিআইডি, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ একাধিক সংস্থাকে দেয়া হয়েছে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের হাতে শুধুই ঘুষ ও দুর্নীতি সম্পৃক্ত মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ তদন্তের ক্ষমতা রয়েছে। অন্য ২৬টি অপরাধ সংশ্লিষ্ট মানি লন্ডারিংয়ের তদন্ত অন্যান্য সংস্থাসমূহের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, গেল তিন বছরে সরকার, রাজনৈতিক দল কিংবা কথিত ক্ষমতাবানরা কেউ দুদককে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেননি। আমরা নিজেরা নিজেদের প্রভাবিত ভাবতে পারি। বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের কেউ প্রভাবিত করার চেষ্টা করার সাহসও পাননি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দেশের সিংহভাগ অর্থ পাচার হয়ে থাকে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং চ্যানেলে। আমরা রাজস্ব বোর্ডের কাছে ওভার ইনভয়েসিংয়ের তালিকা চেয়েছি। প্রয়োজনে তালিকা ধরে আইনি ব্যস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং সেক্টর নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, একক সেক্টর হিসেবে সর্বোচ্চ মামলা এবং গ্রেফতার হয়েছে ব্যাংকিং সেক্টরে। কমপক্ষে ১২০ জন ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মতবিনমিয় সভায় সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার মো. জমির বলেন, বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থায় দুদকের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বচ্ছতা না থাকলে দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয় না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন বলেন, দুদকের মিশনে দুর্নীতির গতি প্রকৃতি নির্ণয় থাকা উচিত। কাজের মধ্যে স্বচ্ছতার দৃশ্যমান মানদণ্ড থাকবে। স্বচ্ছতা আপেক্ষিক। তাই এর একটি মানদণ্ড থাকা উচিত। কমিশনের প্রতি মানুষের ভয় ও শ্রদ্ধা থাকলে দুর্নীতি প্রতিরোধ কিছুটা সহজ হবে।
এ সময় সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলাম মজুমদার বলেন, দুদকের উচিত মেগাখাতের দুর্নীতি দমনে অধিকতর মনোনিবেশ করা।
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, দুদকের প্রতি মানুষের ক্ষোভ কিংবা হতাশা থাকতেই পারে।
মতবিনিময় সভায় অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, অধ্যাপক গিয়াসউদ্দীন আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
